যশোর-খুলনা মহাসড়কের শহরের মণিহার থেকে মুড়লি মোড় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার ফোর লেন সড়কের কাজ শুরু হচ্ছে চলতি মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এরই মধ্যে সড়ক বিভাগ ও জেলা প্রশাসন মহাসড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে।
যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর-বেনাপোল ও যশোর-খুলনা মহাসড়কের নির্মাণকাজ চলছে। এ দুটি সড়কই ১০ ফুট বাড়িয়ে ২৪ ফুটের স্থলে ৩৪ ফুটে নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের কাজ হচ্ছে শহরের দঁড়াটানা মোড় মুজিব সড়ক থেকে শুরু হয়ে বেনাপোল চেকপোস্ট পর্যন্ত। আর যশোর-খুলনা মহাসড়কের কাজ শহরতলীর পালবাড়ী মোড় থেকে শুরু হয়ে নওয়াপাড়ার রাজঘাট পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার। যশোরের আলোচিত যুগের পর যুগ দুর্দশার অন্যতম স্থান মণিহার থেকে মুড়লির মোড় ভাঙাচোরা সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে ছিল। বিষয়টি বিবেচনায় এনে যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ পৃথক প্রকল্প গ্রহণ করে। ব্যস্ততম সড়কটি পুনরায় নির্মাণে ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। শহরের মণিহার থেকে মুড়লি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কটি সওজ ফোর লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প গ্রহণ করে। এ বাবদ ব্যয় ধরা হয় ১৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। একই সঙ্গে সড়কের দুই পাশে নির্মিত হবে ড্রেন। সড়কটি চার স্তর খুঁড়ে নতুন করে নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে সড়কটি প্রশস্ত রয়েছে ২৪ ফুট। আর ফোর লেনের হলে এটির প্রশস্ত হবে ৫০ ফুটের বেশি। মাঝে থাকবে সড়ক ডিভাইডার।
সূত্র জানায়, মুড়লি থেকে মণিহার পর্যন্ত সড়কটি ৪-৫ ফুট পর্যন্ত খোঁড়া হবে। এরপর বালি ফিলিং, পরে বালি ও ইটের খোয়া, বালির সঙ্গে পাথরের খোয়া মিশিয়ে ফিলিং করা হবে। পরে ম্যাকাডাম ও পিচসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা হবে।
সওজের কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই এলাকার সয়েল টেস্ট করে দেখা গেছে মাটিতে সমস্যা আছে। নিচে স্যাঁতসেঁতে ভাব পাওয়া গেছে। এ কারণে ওই এলাকায় সড়কটি সহজে নষ্ট হয়ে যায়। ফুলেফেঁপে ওঠে। একই সময়ে নির্মিত পালবাড়ী মোড় থেকে মুড়লি পর্যন্ত সড়কের অন্যান্য স্থান মোটামুটি ভালো থাকলেও বকচরের ওই স্থানটি অনেক আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে নতুন করে ফোর লেনের সড়ক নির্মাণের সময় বকচরে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে নিচে ঢালাইসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।
সওজ যশোর অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মাহবুব হায়দার খান জানান, মণিহার থেকে মুড়লি পর্যন্ত ফোর লেনের এ প্রকল্পের কাজের ওয়ার্ক অর্ডার ঠিকাদারকে দেয়া হয়েছে। আশা করছি ঠিকাদার চলতি মাসে কাজ শুরু করবেন।
সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সুকুমার দাস জানান, যশোর খুলনা সড়কের মণিহার থেকে মুড়লি পর্যন্ত সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সড়কটি বছরের পর বছর চলাচলের অনুপযোগী। সড়কটি নতুনভাবে নির্মাণে সরকার উদ্যোগ নেয়ায় জনগণ উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনা কমবে।
এ ব্যাপারে যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মণিহার থেকে মুড়লি পর্যন্ত ফোর লেনের কাজটি চলতি মাসে শুরু করা হবে। এরই মধ্যে আমরা অবৈধ উচ্ছেদ শুরু করেছি। আর কোনো বাধা থাকবে না সড়ক নির্মাণ নিয়ে।