বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনতে চায় চার দেশ

একনেকে ২১১৫ কোটি টাকার চার প্রকল্প অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব, ভারত, নেপাল ভুটান। এরই মধ্যে ভুটান ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সৌদি আরব নেপাল আগ্রহ প্রকাশ করেছে অনানুষ্ঠানিকভাবে। দেশ দুটির সঙ্গে এখন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলছে। ডাক টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বিষয়টি জানান।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সভায় সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে গতকালের একনেক বৈঠকে হাজার ১১৫ কোটি টাকায় বাস্তবায়নের জন্য চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।

সভা শেষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) . শামসুল আলম সাংবাদিকদের জানান, সময় সৌদি আরব কীভাবে ব্যান্ডউইডথ নেবে, বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চারটি দেশ বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করায় প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। সময় শুধু নগরে নয়, হাওড়-বাঁওড় পাহাড়িসহ দুর্গম এলাকাগুলোতেও ইন্টারনেট সেবা নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) প্রতি নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে দেশে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ৬৯৩ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সিঙ্গাপুর থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত (সি-মি-উই৬) সাবমেরিন কেবলটি ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূমধ্যসাগর অবধি বিস্তৃত হবে। কেবলটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিসর ফ্রান্সে। এর মধ্যে বাংলাদেশের অংশটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারের কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। প্রকল্প এলাকাও নির্বাচন করা হয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

প্রসঙ্গে . শামসুল আলম বলেন, প্রতিদিন দেশে ব্যান্ডউইডথের চাহিদা বাড়ছে। এছাড়া ২০২৫ সালে একটি সাবমেরিন কেবল অকেজো হয়ে যাবে। এজন্য সময়োপযোগী একটি প্রকল্প হাতে নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন। প্রকল্পের আওতায় সাবমেরিন কেবল সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে স্থাপন করা হবে। ১৩ হাজার ২৭৫ কিলোমিটার কোর সাবমেরিন কেবল স্থাপনসহ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার ব্রাঞ্চ সাবমেরিন কেবল স্থাপন করা হবে।

বৈঠকে ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ শীর্ষক প্রকল্পটি সংশোধনের (প্রথম সংশোধিত) মাধ্যমে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৭৫১ কোটি টাকা। বর্তমানে এর ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে হাজার ৩১৪ কোটি টাকায়।

একনেকে গতকাল নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাঁড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন শীর্ষক প্রকল্পটির ব্যয় ৪০৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা বৃদ্ধির অনুমোদন দেয়া হয়। বর্তমানে এর ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০৩ কোটি ৪২ লাখ টাকায়।

এছাড়া বৈঠকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয়ের মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস শীর্ষক প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধন আনা হয়েছে। প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে এর মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছিল হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। গতকালের দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় ২৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে হাজার ৭৪৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন