কক্সবাজারে ৮টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

বাস্তবায়িত হলে ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভিশন-২০২০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এসব প্রকল্পের মধ্যে বিদ্যুৎ খাত অন্যতম। উন্নয়নের পূর্বশত হিসেবে বিদ্যুৎ খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেশে কয়লাভিত্তিক বড় বড় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নের কাজ চলছে। পরিবেশবাদীদের আপত্তির মুখে এসব কেন্দ্র বাস্তবায়িত হলেও মারাত্মক বিপর্যয়ের চিত্র উঠে এসেছে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থায়। বিশেষ করে দেশের পর্যটন জেলা কক্সবাজারে তাপভিত্তিক আটটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়িত হলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার অন রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরএই)

গবেষণায় বলা হয়েছে, কক্সবাজারে আটটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব কেন্দ্র বাস্তবায়িত হলে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে কক্সবাজার জেলা। পর্যটন রাজধানীতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কারণে বছরে আনুমানিক হাজার ৬০০ কেজি পারদ এবং ছয় হাজার টন ফ্লাই অ্যাশ বাতাসে ছড়াবে। বাতাসে ছড়িয়ে পড়া পারদের ৪০ শতাংশ মাটি সাধু পানিতে জমা হবে। বিশেষ করে কৃষিজমিতে এবং জলাশয়ে পারদ মিশে গিয়ে ওই অঞ্চলের ৭৪ লাখ মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

সিআরইএর প্রধান বিশ্লেষক লরি মিলিভিরতা বলেন, মহেশখালী মাতারবাড়ীতে আটটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কয়লাভিত্তিক হাব তৈরি হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিরূপণ করায় চরম গাফিলতি করা হয়েছে এবং এগুলোর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি খুবই দুর্বল।

সিআরইএ গবেষণা বলছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর পরিচালনকালীন যে পরিমাণ বায়ুদূষণকারী পদার্থের নিঃসরণ ঘটবে তা আনুমানিক ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হবে। এর মধ্যে হাজার ১০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করবে দীর্ঘদিন ফুসফুসের রোগে ভুগে, হাজার ৭০০ মানুষ হূদরোগে, ২০০ জন শিশুসহ অন্তত হাজার মানুষ শ্বাসযন্ত্র সংক্রমণজনিত, এক হাজার ৩০০ জন ফুসফুসের ক্যান্সারে, হাজার ৬০০ জন স্ট্রোকে এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড বিষক্রিয়ায় মারা যাবে হাজার ৯০০ মানুষ।

জানা গেছে, কক্সবাজারে মোট আটটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ১৪টি ইউনিটে বিভক্ত থাকবে। মোট উৎপাদনক্ষমতা হবে হাজার ৭২০ মেগাওয়াট। এছাড়া আরো দুটি ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা বাপা সহসভাপতি রাশেদা কে চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন বাপা সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ--মাহবুব, সুন্দরবন রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল মতিন, বাপা কক্সবাজারের সভাপতি ফজলুল করিম চৌধুরী প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন