তামার দাম বেড়ে দুই বছরের সর্বোচ্চে

বণিক বার্তা ডেস্ক

আন্তর্জাতিক বাজারে কিছুদিন ধরেই বাড়তির দিকে রয়েছে তামার দাম। ধারাবাহিকতায় সোমবার লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে (এলএমই) ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামার দাম বেড়ে দুই বছরের সর্বোচ্চ অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। করোনা মহামারীর ধাক্কা সামলে গতি ফিরতে শুরু করেছে চীনা অর্থনীতিতে। ক্রমেই চাঙ্গা হয়ে উঠছে দেশটির উৎপাদন খাত। এর জের ধরে চীনে তামার চাহিদাও ধীরে ধীরে বাড়ছে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবহারিক ধাতুটির মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। খবর মেটাল বুলেটিন মাইনিংডটকম।

এলএমইতে সোমবার দিনের শেষে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা হাজার ৮৩৭ ডলারে বিক্রি হয়, যা আগের দিনের তুলনায় টনপ্রতি ডলার ৫০ সেন্ট বেশি। দিনের শুরুতে এলএমইতে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামার দাম হাজার ৮৭৭ ডলার ৫০ সেন্টে উঠেছিল। ২০১৮ সালের জুনের পর এলএমইতে এটাই ব্যবহারিক ধাতুটির সর্বোচ্চ দাম।

গত এক মাসে এলএমইতে তামার দামের তুলনামূলক চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মাসখানেক আগে ব্যবহারিক ধাতুটির দাম টনপ্রতি হাজার ৫৬৫ ডলারের নিচে ছিল। এক মাসের ব্যবধানে তামার দাম বেড়েছে টনে প্রায় ৩০০ ডলার।

গত ২১ আগস্ট এলএমইতে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা হাজার ৫৬৪ ডলার ৫০ সেন্টে বেচাকেনা হয়েছিল। এর পর ব্যবহারিক ধাতুটির দাম ক্রমেই চাঙ্গা হতে শুরু করে। ধারাবাহিকতায় আগস্টের শেষ কার্যদিবসে এলএমইতে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামার দাম দাঁড়ায় হাজার ৭২৮ ডলার। সেপ্টেম্বরের প্রথম কার্যদিবসে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামার দাম আরো বেড়ে হাজার ৭৮৮ ডলার ৫০ সেন্টে উন্নীত হয়।

এলএমইতে সেপ্টেম্বর ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা হাজার ৭৯০ ডলারে বেচাকেনা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর ব্যবহারিক ধাতুটির দাম হাজার ৮০০ ডলারের মাইলফলক পেরিয়ে যায়। ওই দিন ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা হাজার ৮১৩ ডলার ৫০ সেন্টে বেচাকেনা হয়। মাঝে দুইদিন কমে এলেও ১৮ সেপ্টেম্বর ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে হাজার ৮৩৩ ডলার ৫০ সেন্টে উন্নীত হয়। মূল্যবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ২১ সেপ্টেম্বর প্রতি টন তামার দাম আরো বেড়ে দুই বছরের সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, তামার সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে চীন। বিষয়ে মেলবোর্নভিত্তিক অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড ব্যাংকের এক নোটে বলা হয়েছে, করোনা মহামারীর প্রকোপ কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ আরো বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি মুদ্রাবাজারে মার্কিন ডলারের অবস্থান নড়বড়ে করে দিয়েছে। তবে চীনে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই সীমিত হয়ে এসেছে। কারণে দেশটির উৎপাদন খাত চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। গতি ফিরছে টানা লকডাউনে কার্যত স্থবির হয়ে আসা চীনা অর্থনীতিতে। ফলে শীর্ষ ভোক্তা দেশ চীনে তামার চাহিদা বাড়তির দিকে রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবহারিক ধাতুটির দাম বাড়িয়েছে।

বাড়তি চাহিদার কারণে চীনের সাংহাই ফিউচার এক্সচেঞ্জে সর্বশেষ কার্যদিবসে ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামার দাম দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ১৬০ ইউয়ান (চীনা মুদ্রা) বা হাজার ৭১০ ডলার ৩৯ সেন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেশি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন