কভিড-১৯-এ আক্রান্ত ১ হাজার ১৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে জুন মাসে। সংক্রমণের শুরু থেকে একক মাস হিসেবে জুনের মৃত্যুর এ সংখ্যাই সর্বোচ্চ। আর গতকাল পর্যন্ত জুলাইয়ে এ রোগে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৮৮ জনের। এখনো জুলাইয়ের বাকি রয়েছে দুদিন। বিদ্যমান মৃত্যুহারে জুলাইয়ে আগের মাসের চেয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে। এতে এক মাসে সর্বোচ্চসংখ্যক মৃত্যু হতে যাচ্ছে জুলাইয়েই।
তবে এখন পর্যন্ত জুলাইয়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা জুনের চেয়ে ১০ হাজার জন কম। জুনে কভিড সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৯৮ হাজার ৩৩০। চলতি মাসে গতকাল পর্যন্ত এই সংখ্যা ৮৬ হাজার ৭১১।
বাংলাদেশে কভিড-১৯ সংক্রমিত রোগী প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ওই মাসে শনাক্ত হয় মোট ৫১ জন। মার্চে মৃত্যু হয় পাঁচজনের। এর পরের দুই মাসেও দেশে কভিড সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। এপ্রিলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৬১৬। মাসটিতে কভিড-১৯-এ প্রাণহানি হয় ১৬৩ জনের। এরপর মে মাসে ৩৯ হাজার ৪৪৬ জন শনাক্ত ও ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়। তবে এর পরের দুই মাস জুন ও জুলাই মিলিয়ে শনাক্তের সংখ্যা লাখের কাছাকাছি। আর রোগটিতে এ সময়ে প্রাণহানি ঘটেছে ১ হাজারের বেশি মানুষের।
গতকাল দেশে আরো ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩ হাজার ৩৫-এ। গত দিনের হিসাব অনুযায়ী, কভিড পজিটিভ হয়েছে আরো ৩ হাজার ৯ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৩২ হাজার ১৯৪। গতকাল বেলা আড়াইটায় কভিড-১৯ সম্পর্কিত নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ১৪ হাজার ২৫৩টি নমুনা সংগ্রহ ও ১৪ হাজার ১২৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ৫১ হাজার ২৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৩০ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৮৭৮ জন এবং এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৩০ হাজার ২৯২ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ জন পুরুষ ও ৫ জন নারীর মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত মারা যাওয়াদের মধ্যে ২ হাজার ৩৮৮ জন পুরুষ এবং ৬৪৭ জন নারী।
উল্লেখ্য, ১৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১০ জুন এ সংখ্যা এক হাজার এবং ৫ জুলাই তা দুই হাজার অতিক্রম করে। এরপর গত মঙ্গলবার সংখ্যাটি তিন হাজারে দাঁড়ায়। এর মধ্যে গত ৩০ জুন একদিনে রেকর্ড ৬৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। দেশে ধীরে ধীরে সংক্রমণের মাত্রা কমে এলেও মৃত্যুহারে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসছে না।