বছরের প্রথম ছয় মাস

মহামারীতে ৩৫ লাখ টন চাল রফতানি ভিয়েতনামের

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়তে শুরু করে। সময় অনেক দেশ খাদ্যপণ্য রফতানি বন্ধ করে মজুদ বৃদ্ধিতে জোরারোপ করে। একই কারণে গত মার্চে চাল রফতানির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ভিয়েতনাম। তবে সবকিছু ছাপিয়ে চলতি বছরের প্রধমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) দেশটি থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। একই সঙ্গে পণ্যটি রফতানি থেকে দেশটির আয় বেড়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। খবর ভিয়েতনাম প্লাস।

ভিয়েতনামের কৃষি পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের এগ্রো প্রসেসিং অ্যান্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের প্রথম থেকে জুনের শেষ পর্যন্ত ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৩৫ লাখ টন চাল রফতানি হয়েছে, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা দশমিক শতাংশ বেশি। সময়ে চাল রফতানি থেকে দেশটির আয় হয়েছে ১৭১ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় খাতে দেশটির আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক শতাংশ। মূলত রফতানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চালের মূল্য বাড়তির দিকে থাকায় খাতটিতে দেশটির আয় উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে।

এর মধ্যে গত মাসে ভিয়েতনামের চাল রফতানি আয়ে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা গেছে। দেশটির সরকারি সূত্রের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত জুনে সব মিলিয়ে লাখ হাজার টন চাল রফতানি করেছে ভিয়েতনাম, যা থেকে দেশটির আয় দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

গত জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে রফতানি হওয়া চালের শীর্ষ ক্রেতা হয়েছে ফিলিপাইন। সময়ে দেশটি থেকে মোট ১৩ লাখ টন চাল কিনেছে ফিলিপাইন, যা ভিয়েতনামের মোট রফতানির ৪০ শতাংশ। সময়ে ফিলিপাইনে পণ্যটি রফতানি করে দেশটি আয় করেছে ৫৯ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। আগের বছরের তুলনায় ফিলিপাইনে চাল রফতানির পরিমাণ রফতানি থেকে দেশটির আয় বেড়েছে যথাক্রমে ২৩ ৪২ শতাংশ।

চীনের গণ্ডি পেরিয়ে নভেল করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীতে রূপান্তরিত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে গিয়েছিল। বিভিন্ন দেশ খাদ্যপণ্য আমদানি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ বাজার সরবরাহ স্বাভাবিকে রাখতে বেশির ভাগ শীর্ষ রফতানিকারক দেশ খাদ্যপণ্য রফতানি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিল। ধারাবাহিকতায় গত মার্চে চাল রফতানি সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দেয় ভিয়েতনাম। তবে পরের মাসে রফতানি শুরু করলেও কোটা আরোপ করা হয়। সময় দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি কিছুটা কমে আসে। তবে চাহিদা বেশি থাকায় পণ্যটির দামে চাঙ্গা ভাব বজায় ছিল, যা স্বল্প রফতানিতেও ভিয়েতনামের আয় বৃদ্ধিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে আগের বছরের তুলনায় সেনেগাল, ইন্দোনেশিয়া চীনের বাজারে পণ্যটির রফতানি মূল্য যথাক্রমে ১৮ দশমিক , দশমিক দশমিক গুণ বেড়েছে।

ভিয়েতনাম বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশ। খাদ্যপণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত বছর দেশটির চাল রফতানিতে প্রবৃদ্ধি বজায় ছিল। মহামারী সত্ত্বেও চলতি বছর রেকর্ড চাল রফতানি প্রত্যাশা রয়েছে দেশটির। ২০২০ সালে সব মিলিয়ে ৭০ লাখ টন চাল রফতানি করতে পারে ভিয়েতনাম।

দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মাই থিয়েন দায়াং বলেন, চলতি বছরের শুরু থেকেই ভিয়েতনামের চাল রফতানি চাঙ্গা রয়েছে। তবে নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর মার্চে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি বন্ধ ছিল। এপ্রিলে খাদ্যপণ্যটির রফতানিতে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টনের সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছিল। মূলত অভ্যন্তরীণ খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষা জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাময়িকভাবে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন