একটি পরজীবী ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মানবজাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এ রোগে সংক্রমিতরা বুদ্ধিহীন মাংসখেকোতে পরিণত হয়েছে, যাদের বলা হয় ‘হাংরিস’। হাতেগোনা অল্পকিছু মানুষ বেঁচে আছে। মানবজাতির একমাত্র আশা হাইব্রিড শিশুদের একটি ছোট্ট দল। হাংরিসদের মতো জীবন্ত মাংস খাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও তারা চিন্তাভাবনা ও শেখার ক্ষমতা রাখে। সে দলে রয়েছে মেলানিয়া নামের এক ব্যতিক্রমী মেয়ে। মেলানিয়াসহ শিশুদের পুরো দলকে নিয়ে করা হচ্ছে বিভিন্ন গবেষণা ও পরীক্ষা। মানবজাতি কি পারবে এ ভয়ানক রোগের কোনো নিরাময় বের করতে? এমনই একটি উত্তেজনাকর কাহিনীকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে পোস্ট-অ্যাপোক্ল্যাপটিক সায়েন্স ফিকশন হরর ফিল্ম ‘দ্য গার্ল উইথ অল দ্য গিফ্টস’।
হাইব্রিড শিশুদের দলটিকে সার্জেন্ট এডি পার্কের নেতৃত্বে একদল সৈন্য হোম কাউন্টির একটি সেনা ঘাঁটিতে বন্দি করে রেখেছে, যাতে তারা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কোনো মানুষকে আক্রমণ করে না বসে। সেখানে ডা. ক্যারোলিন ক্যালওয়েল তদের নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এবং হেলেন জাস্টিনিউ তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কাজের শিক্ষা দেন। তাদের মধ্যে রয়েছে মেলানিয়া। এ রোগের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ডা. ক্যারোলিন ক্যালওয়েল তাকে এখানে নিয়ে এসেছিলেন এবং একটি ল্যাবে আটকে রাখতেন।
হঠাৎ একদিন ঘাঁটিতে হাংরিরা আক্রমণ করে সৈন্যদের মেরে ফেলতে শুরু করে। এর মধ্যে মেলানিয়ার ল্যাবটি ভেঙে গেলে সে বাইরে পালিয়ে যায়। বাইরের ঘটতে থাকা নৃশংসতায় সে স্তম্ভিত হয়ে যায়। এবং হেলেনকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করতে থাকা দুই সৈন্যকে আক্রমণ করে কামড় দেয়। হেলেন ও মেলানিয়া পালানোর জন্য একটি ট্রাকে লাফ দেয়, যেখানে সার্জেন্ট পার্ক ও ক্যালওয়েল দুজন সৈন্যর সঙ্গে বসেছিলেন। সৈন্যরা মেলানিয়াকে গুলি করতে চায়। কিন্তু হেলেন ও ক্যালওয়েল তাকে রক্ষা করে। অন্যকে কামড়ানোর হাত থেকে রক্ষা করতে মেলানিয়াকে একটি বিশেষ মুখোশ পরানো হয়। এরপর তারা লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেয়। লন্ডনে পৌঁছানোর পরে তারা সবাই এক দল উপজাতির হাতে পড়ে। মেলানিয়া একটি ব্যাট দিয়ে আঘাত করে উপজাতিদের সর্দারকে মেরে ফেলে এবং বাকিরা পালিয়ে যায়।
ছবিটি শেষ দিকে যত এগিয়ে যেতে থাকে, পরিস্থিতি ততই শ্বাসরুদ্ধকর হতে থাকে। চলচ্চিত্রটির শেষ দৃশ্যে দেখা যায় মেলানিয়া হাইব্রিড শিশুদের একটি দলকে নিয়ে স্থিরভাবে বসে আছে। আর হেলেন একটি বদ্ধ ল্যাবে মাইক্রোফোনের মাধ্যমে অশ্রুসজল চোখে তাদের পড়াচ্ছেন।
‘দ্য গার্ল উইথ অল দ্য গিফ্টস’-এর পরিচালক কলম ম্যাকার্থি। ছবিটি মাইক কেরির লেখা, ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। জেমমা আরটেরটন, প্যাডি কনসাইডাইন, গ্লেন ক্লোজ, সেনিয়া নানুয়াসহ আরো অনেকে অভিনয় করেছেন ছবিটিতে। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সাবান ফিল্ম এবং যুক্তরাজ্যে ওয়ার্নার ব্রোসের ব্যানারে মুক্তি পেয়েছিল ‘দ্য গার্ল উইথ অল দ্য গিফ্টস’।