করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লকডাউন শিথিলের ক্ষেত্রে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির পরামর্শ আমলে নেয়া হয়নি। ২৮ মে কমিটির ষষ্ঠ সভায় কমিটির সদস্যরা যে তিন দফা সুপারিশ করে তার প্রথমটি ছিল সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রযোজ্য বিধিবিধান সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োগ না করে শিথিল করা হলে রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তাই লকডাউন শিথিলের বিপক্ষে তারা মত দেন।
গতকাল কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির তিন দফা সুপারিশ জানানো হয়।
কারিগরি কমিটির তিনটি সুপরিশের প্রথমটিতে বলা হয়, কভিড-১৯ একটি সংক্রামক রোগ, যা হাঁচি-কাশি ও সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। জনসমাগম এ রোগের বিস্তারের জন্য সহায়ক। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা এই যে রোগ সংক্রমণের হার সুনির্দিষ্টভাবে না কমার আগে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালু করলে রোগের হার বাড়ার আশঙ্কা থাকে। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি এ বিষয়ে ৭ মে পরামর্শ প্রদান করে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রযোজ্য বিধিবিধান সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োগ না করে শিথিল করা হলে রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
দ্বিতীয়টিতে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুনির্দিষ্টভাবে কোভিড-১৯ রোগে হাইড্রোক্সি-ক্লোরোকুইন নামক ঔষধ ব্যবহারের ঝুঁকি সম্বন্ধে নির্দেশনা দিয়েছে। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে এ ওষুধের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসার গাইডলাইনে এ ওষুধ না রাখার পরামর্শ দিচ্ছে। আইভারমেকটিন, কনাভালোসেন্ট প্লাজমা ও অন্যান্য অননুমোদিত ওষুধ কেবল সুনির্দিষ্টভাবে অনুমোদিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাইরে ব্যবহার না করার সুপারিশ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় এসব ওষুধ চিকিৎসা বা প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের জন্য ব্যবহার না করার পরামর্শ দিচ্ছে।
তৃতীয়টিতে এরই মধ্যে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয় কভিড-১৯ ও অন্যান্য রোগীর চিকিৎসা একই হাসপাতালে পৃথক পৃথক ব্যবস্থায় করার নির্দেশনা দিয়েছে। জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি এ সিদ্ধান্ত সঠিক মনে করে। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনিক, সাংগঠনিক, জনবল ও সরঞ্জামগুলোর বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে বলে মনে করে।