দুই সরকারে বিভক্ত লিবিয়া, নেপথ্যে অস্ত্র আর তেল বাণিজ্য

শাহাদাত হোসাইন স্বাধীন

একটি ব্যর্থ আরব বসন্তের মধ্য দিয়ে ২০১১ সালে ন্যাটো জোটের সামরিক অভিযানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে প্রাণ হারান ৪২ বছর ধরে লিবিয়া শাসন করা লৌহমানব মুয়াম্মার গাদ্দাফি। তেলসমৃদ্ধ ধনী দেশ লিবিয়ার মানুষ গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতার জন্য  রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু  একসময় সে রাস্তার দখল যায় ন্যাটোর হাতে। 

ওআইসি সম্মেলনে সৌদি বাদশাহকে প্রকাশ্যে আমেরিকা-ব্রিটেনের দালাল বলা, জাতিসংঘে বিশ্ব শক্তিদের প্রতি বৃদ্ধঙ্গুলি দেখিয়ে জাতিসংঘ সনদকে প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলা গাদ্দাফি আফ্রিকার এক রহস্যময় শাসক। বলা হয়ে থাকে নিজ দেশের একাংশের কাছে অসম্ভব জনপ্রিয় স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেন ও মুয়াম্মার গাদ্দাফি পশ্চিমাদের চক্ষুশূল ছিলেন। কারণ, তাদের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর পরিকল্পনা ছিল। ফলে আরব বসন্তে বাঁ-হাত ঢুকিয়ে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো কাঙ্ক্ষিত শত্রুকে বিনাশ করে।

গাদ্দাফির শাসনামলে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক বা অন্য কারো কাছে লিবিয়ার এক পয়সাও ঋণ ছিল না। লিবীয়দের জন্য বিনা সুদে ঋণ, বেকার ভাতা, নবদম্পত্তির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ফ্ল্যাট, গর্ভে সন্তান আসার সঙ্গে সঙ্গে ৩৫ হাজার ডলারের বীমা, বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিটি নাগরিকের জন্য বৃত্তি ব্যবস্থা ছিল গাদ্দাফি সরকারের পক্ষ থেকে। 

কিন্তু ভিন্ন মতের প্রতি খুবই কঠোর ছিলেন গাদ্দাফি। ভিন্নমতালম্বীদের দেশ ছাড়তে অথবা জেলে ঢুকতে হতো। ফলে বহুদিনের জমে থাকা জনগণের ক্ষোভ আর আন্তর্জাতিক রাজনীতির মেরুকরণে গাদ্দাফিকে বরণ করতে হয় করুণ পরিণতি। তখন বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, যেদিন কোনো লিবীয় নারী তার সন্তানকে দুধ খাওয়নোর পয়সা পাবে না সেদিন মনে পড়বে গাদ্দাফিকে। 

ঘটনা ঘটেছেও তাই। এক দশকেও শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসেনি লিবিয়ায়। দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের ফলে বর্তমানে এক দেশে দুই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাতিসংঘ স্বীকৃত জাতীয় সরকার দেশের পশ্চিমাঞ্চল অন্যদিকে বিদ্রোহী সরকার দেশের পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। বিশ্বশক্তি ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলো এই দুই সরকারকে সমর্থন করা নিয়ে বিভক্ত। এই বিভক্তির নেপথ্যে রয়েছে রাজপরিবার কেন্দ্রিক দেশগুলোর রাজনৈতিক অবস্থান ও বিশ্বশক্তিদের তেল ও অস্ত্র বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ।

এক নেতা গাদ্দাফির পতনের পর লিবিয়ায় উত্থান হয় গোষ্ঠীভিত্তিক হাজারো নেতার। ২০১৪ সালে উত্থান গঠে গাদ্দাফির এক সময়ের বন্ধু বহুদিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত থাকা জেনারেল খলিফা কাশিম বিন হাফতাবের। তবে ২০১৫ সালে গৃহযুদ্ধ ও সংঘর্ষ এড়াতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বিবদমান গোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতা সই হয়। গাদ্দাফি সরকারের স্থলাভিষিক্ত করার জন্য সেখানে ‘গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড’ নামে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জাতীয় সরকার গঠন করা হয়। জাতীয় সরকারের প্রধান করা হয় ফায়াজ আর সারাজকে। কিন্তু তেলক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে খলিফা হাফতাব তার লড়াই অব্যাহত রাখেন। রাশিয়া, ফ্রান্স, আরব আমিরাত ও মিশরের সমর্থনে লিবিয়ার জাতীয় সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চান জেনারেল খলিফা হাফতাব। লিবিয়ার জাতীয় সরকার মূলত মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক ইসলামের প্রবক্তা মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থিত এমপিদের নিয়ন্ত্রণে। ত্রিপোলিভিত্তিক এই সরকার আলজেরিয়ার সীমান্তঘেঁষা লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চল অন্যদিকে খলিফা হাফতাবের নেতৃতাধীন বেনগাজিভিত্তিক লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এলএনএ) মিশর সীমান্ত ঘেঁষা পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে।

২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল জাতিসংঘ সমর্থিত জাতীয় সরকারকে হঠাতে সামরিক অভিযানে নামেন খলিফা হাফতাব। যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় সরকারের সমর্থক হলেও ডোনাল্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভোল পাল্টাতে থাকে হোয়াইট হাউস। ক্ষমতায় এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘লিবিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা পালনের কোনো অবকাশ তিনি দেখছেন না।’ এছাড়া খলিফা হাফতাবের বাহিনী যখন রাজধানী ত্রিপোলি অভিমুখে, ৯ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প খলিফা হাফতাবকে ফোন করে ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা ও তেলক্ষেত্র রক্ষায় তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ’ বলে দাবি করেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর।

সামরিক অভিযান চলাকালে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস জাতীয় সরকারের পক্ষে বিবৃতি দেন। লিবিয়ার জাতীয় সরকারকে সমর্থন জানায় জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইতালি, তুরস্ক ,কাতার ও আলজেরিয়া। লিবিয়ার তেলক্ষেত্রে তুরস্কের প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ রয়েছে। কাতার ও তুরস্ক মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থক হলেও ইতালির মূল স্বার্থ তেল। ইতালির বেশ কয়েকটা তেল কোম্পানির লিবিয়ায় বড় ধরনের বিনিয়োগ রয়েছে। ইতালির আশঙ্কা ফ্রান্স বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে ইতালীয় কোম্পানির তেলক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।

অন্যদিকে খলিফা হফতাবেব পক্ষে রাশিয়া, ফ্রান্স, মিশর, আরব আমিরাত ও সৌদি আরব। সামরিক অভিযানে সৌদি আরবের ১০ মিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তার খবর প্রকাশ করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। সৌদি সমর্থিত সুদানের সামরিক সরকার খলিফা হাফতাবের সমর্থনে এক হাজার সদস্যের ‘রেপিড সাপোর্ট ফোর্স’ পাঠায়। বিপরীতে জাতীয়  সরকারের পক্ষে সামরিক সহযোগিতা পাঠায় তুরস্ক। অভিযান চলাকালে বিদ্রোহীরা তুরস্কের তেলবাহী জাহাজ আটকে দেয়, অন্যদিকে বিদ্রোহীদের সমর্থনে লিবিয়ায় ড্রোন হামলা চালায় সংযুক্ত আরব আমিরাত। ফলে গতবছরজুড়ে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লিবিয়া। মধ্যপ্রাচ্যে ও মুসলিম বিশ্বের সাম্প্রতিক বিবাদের সমীকরণ লিবিয়ায় চলমান থাকলেও পঞ্চশক্তির অবস্থান এখানে ভিন্ন। তবে দুই পক্ষের মূল খেলোয়াড় হয়ে উঠেছে রাশিয়া ও তুরস্ক। 

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও  তুর্কি  প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের যৌথ যুদ্ধ বিরতির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১২ জানুয়ারি মস্কোতে আলোচনায় বসে লিবিয়ার দুই পক্ষ।

এর আগে ৭ জানুয়ারি ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কন্তের একটি সমঝোতা উদ্যোগ ভেস্তে যায়। তবে ১২ জানুয়ারির বৈঠকে কোনো ধরনের সমঝোতা স্বাক্ষর ছাড়া হঠাৎ করেই মস্কো ছাড়েন বিদ্রোহী খলিফা হাফতাব। দেশে ফিরে হাফতাবের দল তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ঘোষণা দেয়, ‘তারা তাদের লক্ষ্য অর্জনে প্রস্তুত ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ’। ফলে লিবিয়া সংকট নিয়ে ১৯ জানুয়ারির আন্তর্জাতিক পরাশক্তিদের ‘বার্লিন সম্মেলন’ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। মস্কো বৈঠক ব্যর্থ হলে তুরস্ক জাতীয় সরকারের সমর্থনে সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দেয়। অন্যদিকে হাফতাবদের সমর্থনে রাশিয়ার জন্য লড়ই করার কথা গত সেপ্টেম্বরেই স্বীকার করেছিলেন পুতিন।

এই জটিল পরিস্থিতিতে ১২ জানুয়ারির পর জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস লিবিয়া সফর করে দুই পক্ষকেই সম্মেলনে বসাতে রাজি করান। অবশেষে ১৯ জানুয়ারির  কাঙ্ক্ষিত বার্লিন সম্মেলনে যোগ দেয় লিবিয়ার বিবাদমান দুই পক্ষ। জাতিসংঘের মহাসচিব ও জার্মান চ্যান্সেলরের যৌথ সভাপতিত্বে এই সম্মেলনে যোগ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান, ইতালির প্রধাননমন্ত্রী গুইসেপ কন্তে, কঙ্গো প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেডি এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। আরও যোগ দেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়ন, চীন, মিশর, আরব আমিরাত, আলজেরিয়ার প্রতিনিধি দল। 

সম্মেলনে যাওয়ার আগ মুহূর্তে খলিফা হাফতাব তার নিয়ন্ত্রিত পাঁচটি বন্দর দিয়ে তেল রফতানি বন্ধের নির্দেশ দেন। এতে দৈনিক ৮ লাখ ব্যারেল তেল রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে।  মূলত তার ক্ষমতা প্রদর্শনে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছিলেন। সম্মেলন চলাকালে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস বলেন, আমরা লিবিয়াকে আরেকটি সিরিয়া হতে দিতে পারি না। অন্যদিকে তুরস্ক প্রেসিডেন্ট দেশ ছাড়ার আগে বলেন, বার্লিন সম্মেলন ব্যর্থ হলে আইএস ও আল কায়েদার উর্বর ভূমি হয়ে উঠবে লিবিয়া।

সম্মেলন শেষ করে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, লিবিয়ায় আর অস্ত্রের ঝনঝনানি নয়। উভয়পক্ষই যুদ্ধ বিরতির জন্য একটি সমন্বিত চুক্তিতে পৌঁছতে সমর্থ হয়েছে। উভয় পক্ষই লিবিয়ার জাতীয় তেলসংস্থা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা বিধানে সম্মত হয়। তবে তিনি স্বীকার করেন, লিবিয়ায় শান্তি ফেরা একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। লিবিয়ার কোনো পক্ষকেই বিশ্বশক্তিরা আর কোনো ধরনের অস্ত্র বিক্রি করবে না বলেও জানান মার্কেল। কিন্তু এর আগেও বিশ্বশক্তিগুলো বহু সম্মেলনে অস্ত্র বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে একমত হলেও তা শেষ পর্যন্ত মানা হয়নি। এর আগে ২০১১ সালে লিবিয়ায় অস্ত্র নিষেধজ্ঞা ঘোষণা করা হলেও তা মানা হয়নি। ফলে লিবিয়ার স্থিতিশীলতা সবসময়ই অনিশ্চিত থেকে যায়।

সে আশঙ্কায় যুক্ত হয়েছে খলিফা হাফতাবের নতুন সরকার গঠন। গত সপ্তাহের সোমবার খলিফা হাফতাব ২০১৫ সালের জাতিসংঘের মধ্যস্থতা চুক্তিকে বাতিল করে নতুন সরকারের ঘোষণা দেন। তিনি দাবি করেন, তার অনুগত গেরিলা সৈন্যরা পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ করছে। সেই সঙ্গে জাতিসংঘের চুক্তিকে দেশ ধ্বংসের চুক্তি বলে ঘোষণা দেন। বাস্তবেও খলিফা হাফতাবের নিয়ন্ত্রণের রয়েছে দেশের বৃহৎ অঞ্চল ও বড় বড় তেলক্ষেত্রগুলো। 

সিরিয়ার মতো লিবিয়া বিশ্বশক্তিগুলো নিজ নিজ স্বার্থে লিবিয়ায় যুক্ত হয়েছে। লিবিয়ার সমুদ্রসীমা চূড়ান্তকরণে তুরস্ক ও লিবিয়া চুক্তি করেছিল। ফলে ইসরায়েল, মিশর ও গ্রিস ক্ষেপে যায়। আরব আমিরাত এই তিন দেশসহ যুক্তরাষ্ট্রকে জাতীয় সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াতে তদবির করছে। সৌদি আরব ও আরব আমিরাত তাদের পার্শ্ববর্তী দেশে রাজনৈতিক ইসলামকে কোনোভাবে বরদাশত করতে রাজি না। বাকিদের স্বার্থ হলো তেলের বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ আর অস্ত্র বিক্রি। খলিফা হাফতাব ফ্রান্সের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্র ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনছে তেল বিক্রির টাকা দিয়ে।  

এই তেল ও অস্ত্র বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাড়াকাড়ির ফলে গত এক দশকে বিশ্বশক্তিগুলো নানা সম্মেলন, চুক্তি ও অঙ্গীকার করলেও শেষ পর্যন্ত লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ থামেনি। বরং লিবিয়ার বিভক্তি বেড়েছে। বিদ্রোহী খলিফা হাফতাবের নতুন সরকারকে সমর্থন করা নিয়ে আবার বাগযুদ্ধ ও প্রক্সিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে বিশ্বশক্তিগুলো। যা এক দশকের গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত ও দুই সরকারে বিভক্ত লিবিয়াকে আরও বড় যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে। 

লেখক: শাহাদাত হোসাইন স্বাধীন

গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

[email protected]

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন