ত্রাণ না পেয়ে রাস্তায় অনেক পরিবহন শ্রমিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাস ঠেকাতে সাধারণ ছুটি চলছে দেশে। অফিস-ব্যবসা বন্ধ। বন্ধ গণপরিবহনও। পরিবহন শ্রমিকরাও কর্মহীন। জেলা প্রশাসনকে ত্রাণ সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হলেও অনেক জেলায়ই তা পাননি পরিবহন শ্রমিকরা। ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ এসেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কাছ থেকে। ফেডারেশনের নেতারা জানিয়েছেন, ত্রাণ না পাওয়ায় জীবিকার তাগিদে অনেকেই রাস্তায় নামার চেষ্টা করছেন। এমন অবস্থায় করোনা ঠেকাতে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকারের কৌশল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তারা।

গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী পরিবহন শ্রমিকদের না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, কোটি কোটি মানুষকে পরিবহনের কাজে নিয়োজিত পরিবহন শ্রমিকরা দিনরাত কাজ করেন। গাড়ি চললে পরিবহন শ্রমিকদের সংসার চলে। সবসময় মানুষের সংস্পর্শে আসায় পরিবহন শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেশি। এদিকে উপার্জন বন্ধ থাকায় হাজার হাজার পরিবহন শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপায়হীন হয়ে অনেক পরিবহন শ্রমিক রাস্তায় নামারও চেষ্টা করছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকার যন্ত্রণা শ্রমিকদের কাছে করোনা সংক্রমণের ভয়ের চেয়ে বড় হয়ে উঠছে।

এমন অবস্থায় পরিবহন শ্রমিকদের জন্য বিশেষ বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। তারা বলছেন, অর্থনীতিকে সচল রাখতে পরিবহন শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করাটা জরুরি। ট্রেড ইউনিয়নগুলো থেকে তালিকা সংগ্রহ করে শ্রমিক পরিবারগুলোকে বিনা মূল্যে খাবার করোনা সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহ করতে হবে। 

পাশাপাশি শ্রমিকদের জন্য বিশেষ বরাদ্দেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, শ্রমিকদের একটি তালিকা ডিসিদের কাছে দেয়া হয়েছে। এছাড়া শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর কল্যাণ তহবিল থেকেও ত্রাণ দেয়া হবে। এছাড়া মালিক সমিতির পক্ষ থেকে শ্রমিকদের সাহায্য-সহযোগিতা করা হচ্ছে। এই জাতীয় দুর্যোগে সড়ক পরিবহনসহ সব শ্রেণীর শ্রমিকদের শান্ত থেকে এবং নিয়ম মেনে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থানেরও অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে বিপুল পরিমাণ মানুষ পরিবহন পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত। টিকিট কাউন্টার পরিচালনা, রুট পরিচালনাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন তারা। দেশের বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের হিসাবে সারা দেশে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে পরিবহন শ্রমিকের সংখ্যা ৫০ লাখের বেশি।

খাদ্য সহযোগিতার পাশাপাশি সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রণোদনাও দাবি করে আবেদন করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। এছাড়া পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ১০ টাকা কেজি চাল বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়ে গত ২৭ মার্চ সরকারের কাছে চিঠি দেয় সংগঠনটি। শ্রমিক শ্রমিক নেতাদের দাবি, এর কোনোটাই এখনো পর্যন্ত তারা পাননি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন