করোনায় নারীর মৃত্যু, নারায়ণগঞ্জে রসুলবাগের একাংশ লকডাউন

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রসুলবাগ এলাকার একাংশ ‘লকডাউন’ করেছেন উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে জেলা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন বন্দর উপজেলার রসুলবাগের একাংশ এলাকা লকডাউন করেন।

বিষটি নিশ্চিত করে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ওই এলাকা লকডাউনে থাকবে। 

জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজের নেতৃত্বে লকডাউনকালে ইউএনও ছাড়াও জেলা করোনা ফোকাল পারসন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম, বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের, র‌্যাব-১১ সহকারী পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিল।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছু এক কর্মকর্তা জানান, গত ২৯ মার্চ রোববার বন্দর উপজেলার রসুলবাগ এলাকার ৫০ বছর বয়সী এক নারীর শ্বাসকষ্ট ও জ্বর হলে তাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনেরা। ঢামেক তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে রেফার করে। কিন্তু স্বজনেরা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরদিন ওই নারীর অবস্থার অবনতি হলে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। কুর্মিটোলা হাসপাতাল তার নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর এ পাঠায়। স্বজনেরা মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন। এর আগে ওই নারী স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সম্ভবত এ কারণে স্বজনরা স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে বন্দর উপজেলার স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে আইইডিসিআরের পরীক্ষার রিপোর্টে তার করোনাভাইরাস পজেটিভ এলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এলাকা লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে আইইডিসিআরের পরীক্ষায় ওই নারীর করোনাভাইরাস পজেটিভ হওয়ায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে ওই এলাকা লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন।

ইউএনও শুক্লা সরকার জানান, ওই নারীর বাড়িসহ আশেপাশের কিছু পরিবারকে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। রসুলবাগ এলাকায় প্রবেশের তিনিটি পথের মধ্যে দুটি টিন দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। বাকিটিতে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় পাঁচজন সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। 

তিনি বলেন, লকডাউনে থাকা পরিবারের সদস্যদের কাছে ইউএনও, সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ওসিসহ সবার মোবাইল নম্বর দিয়ে দেয়া হয়েছে। কারো মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দিলেই এসব নম্বরে জানাতে বলা হয়েছে। এছাড়া তাদের খাদ্য বা কোনো সামগ্রীর প্রয়োজন হলে ফোন দিলেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন