নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর পদক্ষেপ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৪০ কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স (বিএবি)। সংগঠনটির সদস্য বেসরকারি ব্যাংকগুলো এ অর্থ জোগান দিয়েছে। এক্ষেত্রে পুরনো ব্যাংকগুলো ৫ কোটি ও নতুন ব্যাংকগুলো ২০ লাখ টাকা করে বিএবির কাছে জমা দিয়েছে বলে সংগঠনটির চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার বণিক বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন।
বিএবি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘অতীতে দেশের যে কোনো দুর্যোগ, মানবিক বিপর্যয় কিংবা উৎসবে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলো সরকার ও জনসাধারণের পাশে থেকেছে। এবারো আমরা পিছিয়ে থাকিনি। করোনাভাইরাসের কারণে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান বা পরিচালকদের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তার পরও ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা করেছি। তার ভিত্তিতে প্রায় ১৪০ কোটি টাকার একটি তহবিল তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি ব্যাংক প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৫ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। বাকি অর্থ বিএবির কার্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। আগামীকালের (বুধবার) মধ্যে এ অর্থ আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছাব।’
নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে জনজীবন পুরোপুরি স্থবির হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে দেশের নিম্নবিত্ত মানুষ। অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হারিয়ে এসব মানুষ না খেয়ে থাকার পরিস্থিতিতে পড়েছে। এ অবস্থায় নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যাংকগুলো নিজে থেকেই এগিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দেয়া অর্থ ছাড়াও ব্যাংকগুলো নিজ নিজ উদ্যোগে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দেশের যেকোনো বিপর্যয় বা উৎসবে নগদ অর্থ নিয়ে এগিয়ে এলেও করোনাভাইরাসে সৃষ্ট ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের এ সময়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলো অনেকটাই নীরব ভূমিকায় ছিল। এসব ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স (বিএবি) ও ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) পক্ষ থেকেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছিল না। এ পরিস্থিতিতে ২৮ মার্চ বণিক বার্তায় ‘করোনা বিপর্যয়ে বিএবি-এবিবি নীরব কি’
শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওইদিনই তত্পর হন ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহীরা। বিএবি থেকে পুরনো বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে ৫ কোটি টাকা করে ও নতুন ব্যাংকগুলোকে ২০ লাখ টাকা করে জমা দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনার আলোকে এরই মধ্যে ব্যাংকগুলোর দেয়া অর্থে ১৪০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি হয়েছে। এ অর্থ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আজকের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।
