রক্তচাপ
মানুষের স্বাস্থ্যের এক
গুরুত্বপূর্ণ
সূচক। রক্তচাপ
বা ব্লাড
প্রেসার হলো মানুষের
শরীরের ধমনীর প্রবাহ। হূিপণ্ড
থেকে রক্ত যখন
শরীরের বিভিন্ন অংশে
প্রবাহিত হয়, তখন
ধমনীর দেয়ালে চাপ
প্রয়োগ করে এবং
এ চাপই
রক্তচাপ নামে পরিচিত। প্রতিটি
হূদস্পন্দনের
সময় একবার সর্বোচ্চ
চাপ (সিস্টোলিক) এবং
সর্বনিম্ন চাপ (ডায়াস্টোলিক)
হয়।
হূিপণ্ডের
সংকোচনের ফলে মানুষের
ধমনী ও শিরায়
রক্তের চাপ সৃষ্টি
হয়।
এতে যে চাপ
অনুভূত হয়, তাকে
সিস্টোলিক চাপ বলে। আবার
হূিপণ্ডের প্রসারণের ফলে
যে চাপ
অনুভূত হয়, তাকে
ডায়াস্টোলিক
চাপ বলে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের হিসেবে
মানুষের শরীরে ১২০/৮০ হলো
আদর্শ রক্তচাপ।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন
রক্তচাপ ১২০/৮০-এর উপরে
গেলেই সতর্ক হওয়ার
জন্য।
রক্তচাপ
বিষয়ে জানা মানুষের
জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে
উচ্চরক্তচাপে
ভোগা মানুষের সংখ্যা
নেহায়েত কম নয়। দুনিয়াজুড়েই
বাড়ছে মানুষের এ
স্বাস্থ্য সমস্যা।
খাদ্যাভ্যাস
এবং নগর জীবনের
মানসিক চাপ এক্ষেত্রে
বড় ভূমিকা
রাখছে।
ধমনীতে কোনো কণা জমলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। উচ্চরক্তচাপকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’। কারণ খুব বেশি লক্ষণ না দেখিয়েই এ সমস্যা জীবনহানি ঘটাতে পারে। উচ্চরক্তচাপ হূদরোগসহ মস্তিষ্ক, কিডনি, চোখের সমস্যা সৃষ্টি করে। আবার রক্তচাপ কমে গেলেও সমস্যা আছে—ঝিমঝিম ভাব, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাবের মতো সমস্যা দেখা দেয়। এসব ক্ষেত্রে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
আমাদের
শরীরে স্বাভাবিক নিয়মেই
রক্তচাপ দিনের বিভিন্ন
সময় কিছুটা পরিবর্তিত
হয়।
ঘুমের সময় মানুষের
রক্তচাপ কম থাকে। ঘুম
ভাঙার কয়েক ঘণ্টা
আগে কিছুটা বেড়ে
যায়, বিকাল নাগাদ
রক্তচাপ সর্বোচ্চ হয়। আবার
রাতে ঘুমের সময়
কমে আসে।
শরীরে
অক্সিজেনের
প্রয়োজনীয়তা
বেড়ে গেলে প্রেসারও
বাড়ে। খাদ্য
পরিপাক কিংবা ব্যায়ামের
সময় বেশি অক্সিজেন
প্রয়োজন হয়।
রক্তচাপ
মাপার সময় বেশ
সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন
আছে। ঝট
করে দৌড়ে গিয়ে
রক্তচাপ মাপলে প্রকৃত
পরিমাপ পাওয়া যাবে
না।
যেকোনো সময় ৫-১০ মিনিট
বিশ্রাম নিয়ে স্বাভাবিক
অবস্থায় রক্তচাপ পরিমাপ
করা উচিত।
রক্তচাপ মাপার আগে
কফি খাওয়া উচিত
নয়, কারণ
ক্যাফেইন সাময়িকভাবে রক্তচাপ
বাড়িয়ে দেয়।
রক্তচাপ
স্বাভাবিক রাখতে খাদ্যাভ্যাস
এবং সুশৃঙ্খল জীবনযাপন
জরুরি। ধূমপান
থেকে দূর থাকতে
হবে। খেতে
হবে তাজা ফলমূল,
সবজি, দানাদার শস্য,
বাদাম, ডাল।
এসব খাবারের বিভিন্ন
উপাদান রক্তচাপ কম
রাখতে সহায়তা করে।
রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে
নিয়মিত ব্যায়াম করা
জরুরি। ব্যায়াম
রক্তনালির দৃঢ়ভাব কমিয়ে
রক্তচাপ কম রাখতে
সহায়তা করে।
মায়ো ক্লিনিকের মতে,
দিনে ৩০ মিনিট
হাঁটলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
থাকে।
আর
সব কথার
শেষ কথা দুশ্চিন্তা
না করা। দুশ্চিন্তা
শুধু রক্তচাপ বাড়ায়
না, সঙ্গে
নিয়ে আসে আরো
অনেক শারীরিক সমস্যা।
সূত্র:
প্রিভেনশন