সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশীদের ভারতে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছেন সে দেশের অভিবাসন কর্মকর্তারা। ভারতের নাগরিকত্ব বিল নিয়ে মেঘালয় রাজ্যে সৃষ্ট উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে কারফিউ জারির কারণে গতকাল সকাল থেকে তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশীদের সে দেশে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
এদিকে পূর্বঘোষণা ছাড়া আচমকা এই বাধায় বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশী পর্যটকরা। আগে থেকে না জানায় গতকাল সকাল থেকে অনেক পর্যটক তামাবিলে জড়ো হন। বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন থেকে তাদের ছেড়ে দেয়া হলেও ভারতীয় ইমিগ্রেশন আটকে দেয়। ফলে ভারতের ডাউকি থেকে ফিরে আসতে হয় তাদের।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ডাউকি হয়ে সাধারণত ভারতের মেঘালয় রাজ্যে বেড়াতে যান বাংলাদেশীরা। গতকাল ছুটির দিন হওয়ায় পর্যটকদের ভিড়ও ছিল তুলনামূলক বেশি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংসহ কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করায় যাত্রীদের সেখানে যেতে দেয়া হচ্ছে না।
অভিবাসন ও স্থলবন্দর পুলিশের বিশেষ সুপার (এসপি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গতকাল সকালে বাংলাদেশ থেকে ইমিগ্রেশন শেষে ভ্রমণকারীরা ভারতে প্রবেশ করলে ভারতের ডাউকি ইমিগ্রেশন সেন্টার থেকে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে ভারত ইমিগ্রেশন আগে থেকে আমাদের কিছু জানায়নি।
তবে যাত্রী যাতায়াত বন্ধ থাকলেও এ স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন তামাবিল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) পার্থ ঘোষ। তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে মূলত পাথর ও কয়লা আমদানি হয়ে থাকে।
এদিকে ভারতে যাত্রী প্রবেশ বন্ধের পূর্বঘোষণা না দেয়ায় বিপাকে পড়তে হয় যাত্রীদের। শিলংয়ে বেড়াতে যাওয়ার জন্য গতকাল সকালেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তামাবিলে হাজির হন কুমিল্লার সাদ উদ্দিন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ভারতের ডাউকিতে প্রবেশের পর সেখানকার ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আমাদের অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখার পর দেশে ফিরিয়ে দেন। এ ব্যাপারে তারা আগে থেকে কিছু জানাননি। ফলে আমাদের মতো অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সিলেটের তামাবিল অভিবাসন কেন্দ্রের উপপুলিশ পরিদর্শক রমজান মিয়া জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে আমরা শতাধিক যাত্রীকে ভারতে ছাড়ি। তবে কিছুক্ষণ পরই তারা ভারতের কাস্টমস থেকে ফিরে আসেন।
রমজান বলেন, এর কিছুক্ষণ পর ভারতীয় কাস্টমসের একজন কর্মকর্তা এসে মেঘালয়ের অস্থিরতার কারণে কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না বলে জানান এবং আজকে আর যাত্রী না ছাড়তে আমাদের অনুরোধ করেন।
ভারতের ডাউকি কাস্টম অফিসের কাস্টমস কর্মকর্তা ডেকলিন রেনজা বলেন, কারফিউয়ের কারণে শিলংয়ে হোটেল-দোকানপাট সব বন্ধ আছে। পর্যটকদের দুর্ভোগ আর নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাদের যেতে দিচ্ছি না।
পরিস্থিতি