এডিপি বাস্তবায়নে শ্লথতা

পদ্ধতিগত দুর্বলতা ও প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হোক

দেশের উন্নয়ন জোরদারে সরকার প্রতি বছরই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রয়োজনীয় তহবিল জোগান দিয়ে থাকে। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই অর্থবছর শেষে দেখা যায়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ পরিকল্পিত যথাযথভাবে ব্যয় হয় না। ফলে শেষের দিকে এসে এডিপি কাটছাঁট করতে হয়। বাংলাদেশে এটি এক সাধারণ চিত্রে পরিণত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়নে অর্থ ব্যয়ের গতি বেড়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-অক্টোবর) এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মোট বরাদ্দের ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ; গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বলা যায়, বাস্তবায়ন হার সামান্য বেড়েছে। কিছুটা আশাব্যঞ্জক মনে হলেও প্রত্যাশা বিবেচনায় এটিকে মোটেই সন্তোষজনক অগ্রগতি বলা চলে না। এডিপি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের গতি বরাবরই শ্লথ। এক্ষেত্রে কোনোভাবে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ক্ষিপ্রতা আনা যাচ্ছে না। সন্দেহ নেই, উন্নয়ন প্রকল্পের ধীর বাস্তবায়নের পেছনে কিছু ফ্যাক্টর দায়ী এবং এসব ফ্যাক্টরের মধ্যে অবশ্যই প্রথম দিকে থাকবে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা দক্ষতার ঘাটতি। এডিপি বাস্তবায়নের পথে এটি একটি বড় ধরনের পদ্ধতিগত প্রাতিষ্ঠানিক বাধা বৈকি। মূলত এজন্য বরাদ্দকৃত অর্থ যেমন অব্যয়িত থাকছে, তেমনি উন্নয়নকাজে গতি আসছে না। কাজেই এডিপি বাস্তবায়নে গতি আনতে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা দক্ষতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই।

বিদেশী অর্থায়নকৃত প্রকল্পের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় উন্নয়ন সহযোগীদের ধীর অর্থছাড় এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প অনুমোদনের মতো ফি বছর কিছু সমস্যার পাশাপাশি এডিপি বাস্তবায়নে আরো কিছু পদ্ধতিগত সমস্যা রয়ে গেছে। এর একটি হলো, ক্রয়সংক্রান্ত (প্রকিউরমেন্ট) দীর্ঘসূত্রতা। অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতো বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাদেশের ক্রয়ের একটি প্রধান অংশ সম্পন্ন হয় আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের অনুমোদনকৃত ঋণ, অনুদান বা সহায়তার মাধ্যমে। কোনো কারণে ক্রয় প্রক্রিয়া এবং দাতাদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে বিলম্ব হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন পিছিয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে দুই ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়ে। এক. প্রকল্পের ব্যয় বাড়ে এবং দুই. অর্থনৈতিক সুফলের দিক থেকে জাতীয় অর্থনীতির ক্ষত বৃদ্ধি পায়। আরেকটি পদ্ধতিগত বাধা হলো, ভূমি অধিগ্রহণ স্থান নির্বাচনে সৃষ্ট জটিলতা। ভূমি অধিগ্রহণ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। কারণ ভূমিপ্রাপ্তি ছাড়া যেকোনো নির্মাণকাজ শুরু করা সম্ভব নয়। ভূমি অধিগ্রহণ একটি জটিল ইস্যু। এর সঙ্গে আইনগত বিষয় যুক্ত থাকায় অনেক ক্ষেত্রে অযাচিত বিলম্ব হয়। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) পর্যালোচনায় এসব বিষয় বরাবরই উঠে এসেছে এবং সংস্থাটি কাজগুলো সহজীকরণে সুনির্দিষ্ট সুপারিশও দিয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে কার্যকর উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে গৃহীত প্রকল্পগুলোর অর্থনৈতিক সুফল নিশ্চিতে এক্ষেত্রে অগ্রগতি কাম্য।

দক্ষ পর্যাপ্তসংখ্যক প্রকল্প পরিচালক না পাওয়াও প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্যতম বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট বিধিতে ৫০০ মিলিয়ন টাকার উপরের প্রকল্পগুলোয় একজন স্থায়ী প্রকল্প পরিচালক থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এটি যথাযথভাবে পরিপালিত হয় না। অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলায় বাস্তবায়িত অর্ধডজন বা আরো বেশি প্রকল্প তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেয়া হয় একজন প্রকল্প পরিচালককে। তদুপরি প্রকল্প পরিচালক প??

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন