গাম্বিয়া বিভ্রান্তিকর তথ্য তুলে ধরেছে : সু চি

বণিক বার্তা অনলাইন

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘গণহত্যা’ মামলায় দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি শুরু হয়েছে। এ মামলায় নিজ দেশের হয়ে আইনি লড়াই করছেন মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী অং সান সু চি। আজকের শুনানি শুরুতে বক্তব্য দিয়েছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও এজেন্ট অং সান সু চি।

বক্তব্যের শুরুতে সু চি বলেন, রাখাইনের বিভ্রান্তিকর চিত্র উপস্থাপন করেছে গাম্বিয়া। এসময় রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘু গণহত্যা, ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পক্ষে অবস্থান নেন সুচি।

তিনি বলেন, গাম্বিয়া রাখাইন রাজ্যোর পরিস্থিতি নিয়ে একটি অসম্পূর্ণ এবং বিভ্রান্তিকর চিত্র তুলে ধরেছে। অং সান সু চি জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতেও বলেছিলেন, মিয়ানমার এমন হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে না।

তিনি সকলকে আশ্বাস করে বলেন, যদি আমার দেশের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে স্বেচ্ছায় তদন্ত,বিচার ও শাস্তি প্রদান করা হবে। যদি অপরাধ প্রমাণিত হয় অভিযুক্ত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, গণহত্যার উদ্দেশে অভিযান পরিচালনার অভিযোগে বিচার শুরু হয়েছে। রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন কোনোভাবেই মেনে নেবে না আমাদের সরকার। যখন দেশের বিচার ব্যবস্থা ব্যর্থ হবে, শুধু তখনই আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এর বিচার করতে পারবে।

সু চি বলেন, রাখাইনে পরিস্থিতি জটিল। নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশে পালাতে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের ‘দুর্দশা’র কথাও আদালতে স্বীকার করেন তিনি। তবে শুনানিতে ২০১৭ সালে রক্তাক্ত সামরিক অভিযানকে বারবারই ‘অভ্যন্তরীণ সহিংসতা বলে অভিহিত করেছেন তিনি। বলেছেন, স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার জবাব দিচ্ছিলো মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

গতকাল মঙ্গলবার আইসিজেতে ১৭ জন বিচারপতির উপস্থিতিতে প্রথম দিনের শুনানি হয়। এদিন আদালতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির উপস্থিতিতে অভিযোগকারী আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু মানবতাবিরোধী নৃশংসতার অভিযোগগুলোর সারাংশ তুলে ধরেন। আজ মিয়ানমারের কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন। আগামী কাল বৃহস্পতিবার আদালত বসবেন দুই বেলা। এদিন সকালে গাম্বিয়া ও বিকেলে মিয়ানমারের জবাব ও নতুন কোনো যুক্তি থাকলে সেগুলো শোনা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামো গত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। জাতিসংঘ জানিয়েছে ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য’ নিয়ে এই অভিযান চালানো হয়েছিল। মিয়ানমার তীব্রভাবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের দাবি, বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের হামলার জবাবেই তারা অভিযান চালিয়েছিল।

 
 

 
 
 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন