নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌরুটে নাব্য সংকট

দৌলতদিয়ায় আটকা পড়েছে ৩৮ পণ্যবাহী জাহাজ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া অংশে পদ্মা নদীতে প্রকট হয়ে উঠেছে নাব্য সংকট। অসংখ্য ডুবোচরে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে দৌলতদিয়া হয়ে নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌরুটে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল। এরই মধ্যে দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় নাব্য সংকটে আটকা পড়েছে বিভিন্ন নৌবন্দর থেকে ছেড়ে আসা অন্তত ৩৮টি জাহাজ।

সরেজমিন গতকাল দুপুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে অন্তত এক কিলোমিটার ভাটিতে বাহিরচর এলাকায় নোঙর করে আছে লাকি এন্টারপ্রাইজ, এমভি হাসান-আল আবরা, এমভি পূর্ণিমা, এমভি আবাবিল, এমভি সবুজ, এমভি রোদেলা, এমভি জুবায়ের আহাদ, এমভি কাজল দীঘি, এমভি মালা, এমভি মিহি কনিকা, এমভি সারিফ-বাঁধন, এমভি সোহান-রিয়াদসহ অন্তত ৩৮টি জাহাজ। মাঝনদীতেই জাহাজগুলো থেকে শ্রমিকরা সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল ক্লিংকার, পোলট্রি খাদ্য, গম, কয়লা, পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য বলগেট ও ট্রলারে করে খালাস করছেন।

আটকে থাকা জাহাজ লাকি এন্টারপ্রাইজের চালক তোতা শুকানি বলেন, নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌরুটের কাজীরহাট, নগরবাড়ী, বেড়া ও নাকালিয়া এলাকায় নাব্য সংকটের পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ডুবোচর। ফলে পণ্যবাহী জাহাজগুলো দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় এসে আর এগোতে পারছে না। বেশকিছু জাহাজ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে এখানে আটকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় পণ্য আংশিক আনলোড করে জাহাজের ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশের গভীরতার পরিমাপ) কমিয়ে বাঘাবাড়ী ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়া হবে।

আটকে থাকা জাহাজ এমভি ইস্ট বাংলার চালক খায়রুল বাসার বলেন, চট্টগ্রাম থেকে টিএসপি সার নিয়ে তিনি সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী বন্দরে যাচ্ছিলেন। আটদিন আগে দৌলতদিয়া এলাকায় এসে জাহাজটি নাব্য সংকটের কারণে আটকা পড়ে। এক-দুদিনের মধ্যে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করতে না পারলে কোম্পানিকে প্রতিদিন জাহাজ প্রতি ১০ হাজার টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। এক্ষেত্রে ২২ দিন পার হলে জাহাজের ভাড়া দ্বিগুণ পরিশোধ করতে হবে।

এদিকে দৌলতদিয়ায় নদী খনন ও নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখার দায়িত্বে থাকা সংস্থা বিআইডব্লিউটিএর কোনো স্থায়ী কার্যালয় নেই। একটি অস্থায়ী কার্যালয় থাকলেও সেখানে কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং শাখা দৌলতদিয়ার সহকারী প্রকৌশলী আক্কাছ আলী বলেন, নাব্য সংকটে জাহাজ আটকে থাকার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তিনি জানান, নদীতে বর্তমানে বড় জাহাজ চলাচলের মতো পানি নেই। এর থেকে বিস্তারিত জানতে তিনি বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের উপপরিচালক আব্দুর রহিমের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অঞ্চলের উপপরিচালক আব্দুর রহিম বলেন, দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌরুটে খননকাজের ব্যাপারে জানতে হলে ড্রেজিং সেক্টরের প্রকৌশলী সুলতান সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন। আমি ব্যস্ত আছি।

কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং সেক্টরের প্রকৌশলী সুলতান আহম্মেদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে বিআইডব্লিউটিএ আরিচা সেক্টরের জিএম নিজাম উদ্দিন পাঠান বলেন, বর্তমানে পদ্মা নদীর ওই এলাকায় আট ফুট ড্রাফটের নৌযান চলাচল করতে পারছে। যে জাহাজগুলো দৌলতদিয়া এলাকায় আটকা পড়েছে, সেগুলোর ড্রাফট ১৮-২০ ফুট। তাই আটকে পড়া জাহাজগুলো আংশিক পণ্য আনলোড করে ড্রাফট আট ফুটের নিচে এনে চলাচল করছে। এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর প্রধান কার্যালয় থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন