শ্রমিকদের মুনাফা বণ্টন তহবিলে (ডব্লিউপিপিএফ) জমাকৃত অর্থের বিপরীতে কর বাবদ সঞ্চিতি না রাখার মাধ্যমে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা এবং শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেশি দেখিয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি ওয়াটা কেমিক্যালস লিমিটেড। এর ফলে হিসাবমান লঙ্ঘন হয়েছে বলে মত দিয়েছেন কোম্পানিটির নিরীক্ষক খান ওয়াহাব শফিক রহমান অ্যান্ড কোম্পানি। ওয়াটা কেমিক্যালসের ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে কোয়ালিফায়েড অপিনিয়নে এ তথ্য জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
নিরীক্ষকের কোয়ালিফায়েড অপিনিয়ন অনুসারে, সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটি ডব্লিউপিপিএফে ৯৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৬ টাকা জমা করেছে কিন্তু এর বিপরীতে কর বাবদ ২৩ লাখ ২১ হাজার ৯০৬ টাকা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেনি। এর ফলে কোম্পানিটি ২৩ লাখ ২১ হাজার ৯০৬ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা এবং ১৯ পয়সা ইপিএস বেশি দেখিয়েছে।
ওয়াটা কেমিক্যালস তাদের লাবসা ও বিসিপি প্লান্টের জন্য কোনো অবচয় রাখেনি। কোম্পানি নিরীক্ষককে জানিয়েছে যে এ প্লান্টগুলো ২০০৮ সাল থেকেই ব্যবহূত হচ্ছে না। কিন্তু নিরীক্ষক বলছেন, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএএস) ১৬-এর অনুচ্ছেদ ৫৫ অনুসারে, সম্পদ অলস বসে থাকলে কিংবা ব্যবহূত না হলেও কোনো কোম্পানি অবচয় ধার্য করা বন্ধ রাখতে পারবে না, যদি না সেই সম্পদের বিপরীতে পুরো অবচয় সংরক্ষণ করা হয়। এর ফলে কোম্পানিটি ৮৩ লাখ ৭ হাজার ৬১৩ টাকা অবচয় কম ধার্য করেছে।
কোম্পানিটি তার কারখানা ও যন্ত্রপাতি এবং কারখানার ভবন ২০০৮ সালে পুনর্মূল্যায়ন করেছে কিন্তু পুনর্মূল্যায়নের ওপর অবচয় রিজার্ভ অ্যান্ড সারপ্লাস থেকে রিভ্যালুয়েশন রিজার্ভে ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত স্থানান্তর করেনি। এতে আইএএস ১৬-এর অনুচ্ছেদ ৩৪ অনুসারে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। তাছাড়া এতে রিটেইনড আর্নিংস কম দেখানো হয়েছে এবং রিভ্যালুয়েশন রিজার্ভ বেশি দেখানো হয়েছে। কোম্পানি তার স্থায়ী সম্পদ রেজিস্ট্রার যথাযথভাবে সংরক্ষণ করেনি বলে মত দিয়েছেন নিরীক্ষক।
কোম্পানি ডব্লিউপিপিএফ তহবিলে অর্থ তার পরিচালন কার্যক্রমে ব্যয় করলেও এর বিপরীতে শ্রম আইন ২০০৬ (২০১৩ সালে সংশোধিত)-এর
২৪০(৩) ধারা অনুসারে কোনো সুদ দেয়নি। তাছাড়া কোম্পানি ডব্লিউপিপিএফ তহবিল ব্যবস্থাপনার জন্য বোর্ড অব ট্রাস্টি গঠন করেনি, যা শ্রম আইনের ২৩৫ ধারার লঙ্ঘন। কোম্পানি চলতি দায় হিসেবে ডব্লিউপিপিএফ তহবিলের আওতায় ২ কোটি ৬৬ লাখ ৬২ হাজার ৮৩৯ টাকা দেখিয়েছে। কিন্তু এখনো শ্রমিকদের কোনো অর্থ দেয়া হয়নি। এটি শ্রম আইনের ২৪২(১) ধারার লঙ্ঘন বলে মত দিয়েছেন নিরীক্ষক। এছাড়া কোম্পানিটির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এমফেসিস অব ম্যাটার হিসেবে বেশকিছু বিষয়ে মত দিয়েছেন নিরীক্ষক।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য মোট ৫৫ শতাংশ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ওয়াটা কেমিক্যালস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ নগদ ও ২৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। আগামী ২৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর বিজয়নগরে অবস্থিত হোটেল ৭১-এ কোম্পানির ৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ নভেম্বর।
সমাপ্ত হিসাব বছরে ওয়াটা কেমিক্যালসের টার্নওভার হয়েছে ৮৭ কোটি ২৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪২ কোটি ৫০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির মোট মুনাফা হয়েছে ২৯ কোটি ৮৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১৩ কোটি ৮৭ লাখ ৪২ হাজার টাকা। কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছে ১৩ কোটি ৭৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকা, আগের হিসাব বছরে
- আয় ও মুনাফা বাড়লেও লভ্যাংশ কমেছে ম্যারিকো বাংলাদেশের
- বিএসইসির চেয়ারম্যানকে ডিএসই, সিএসই ও ডিবিএর অভিনন্দন
- টেকনো ড্রাগসের কাট অফ প্রাইস ৩৪ টাকা
- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের আয় বেড়েছে ৭০০ কোটি টাকা
- এনভয় টেক্সটাইলসের আয় বেড়েছে ৩৩ শতাংশ
- পুঁজিবাজারের সূচক বেড়েছে পৌনে ২ শতাংশ