হাইকোর্টের আদেশ : মশার ওষুধ আনতে হবে সিটি করপোরেশনকেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে ঠেলাঠেলির পর বিদেশ থেকে মশক নিধনের ওষুধ আনার দায়িত্ব ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ওপরই পড়েছে। পাশাপাশি সরকারের দুই দপ্তরকে এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মশক নিধনের কার্যকর ওষুধ আমদানির বিষয়ে গতকাল তিন দফা শুনানিতে দুই সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের বক্তব্য শুনে বিচারপতি তারিক-উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালত বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার বিভাগ মশক নিধনের ওষুধ দ্রুত আনার ব্যাপারে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে লাইসেন্স ও ‘ক্লিয়ারেন্সসহ সার্বিক সহযোগিতা দেবে। সম্ভব হলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও দেশব্যাপী ওই ওষুধ সরবরাহ করতে হবে। তবে ঢাকার বাইরে সারা দেশের জন্য ওষুধ আনার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করতে পারে বলে মত দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ঢাকা মহানগরীর সব সরকারি হাসপাতালে একজন করে চিকিৎসককে ডেঙ্গু চিকিৎসার বিষয়ে সার্বক্ষণিক তদারকির দায়িত্ব দিতে বলা হয়েছে, যিনি পদমর্যাদায় অন্তত সহযোগী অধ্যাপকের সমান হবেন। সব হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা রাখতে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদেশে বলা হয়েছে, যেন একজন রোগীও চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত না যান, তা নিশ্চিত করতে হবে। যারা ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে যাবেন, মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের সবার চিকিৎসা বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও নিশ্চিত করতে বলেছেন আদালত। এছাড়া ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট আমদানি করে যাতে স্বল্পমূল্যে দ্রুত সরবরাহ করা হয়, সরকারকে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে আদেশে।

স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের পাশাপাশি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আদালতের আদেশের পর সচিব হেলালুদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্ট আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে সরকারি পর্যায়ে অর্থাৎ জিটুজি পদ্ধতির মাধ্যমে মশার ওষুধ আনতে অসুবিধা কোথায়। আমি বললাম এটা আমার জানতে হবে। এজন্য আমাকে ১ ঘণ্টা সময় দিলেন। ১ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে আমি সব মহলের সঙ্গে এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেন, এটা পরীক্ষা করে দেখতে হবে যে মানবদেহে ওষুধটির কোনো প্রভাব আছে কিনা। তাছাড়া এটা পৃথিবীর কোনো দেশে সরকারিভাবে প্রসেস করা হয় না। বেসরকারি খাতে এটা প্রস্তুত করা হয়। সুতরাং সিটি করপোরেশন হলো একমাত্র প্রতিষ্ঠান মশা নিধনের জন্য। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনকে আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি জনবলসহ যা যা দরকার, সব সহযোগিতা দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান সচিব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন