প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজ মার্কিন প্রতিনিধি দলের বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো গতকাল বাংলাদেশে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। এ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সঙ্গে আজ বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক শুরু হবে। 

গতকাল সকাল ৮টার পর থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা একে একে ঢাকায় পৌঁছান। দুইদিনের সফরে আসা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারির আন্তর্জাতিক অর্থবিষয়ক ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু, সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ, ইউএসএইড ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারির মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর এবং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিস্ট জেরড ম্যাসন এবং ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের পলিটিক্যাল ও ইকোনমিক চিফ এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সিনিয়র ডিরেক্টর ভিরসা পারকিন্স। 

সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল আজ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবে। এসব বৈঠকে গুরুত্ব দেয়া হবে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বহুমাত্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোয়।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুই দেশের মধ্যে একটি অনুদান সংশোধনী সই হবে। এটি হবে তিন বছর আগে করা ‘ডেভেলপমেন্ট অবজেকটিভ গ্র্যান্ট এগ্রিমেন্ট’ শীর্ষক চুক্তির অধীনে। এতে বাংলাদেশের পক্ষে সই করবেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম শাহাবুদ্দিন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সই করবেন ইউএসএআইডি মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান। 

গতকাল সফরের প্রথম দিনে প্রতিনিধি দলের সদস্যদের একটি অংশ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, বিনিয়োগ পরিবেশ, ব্যাংক ও আর্থিক খাত, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন বৈঠকসংশ্লিষ্টরা। 

বৈঠক নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে দেয়া ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পোস্টে বলা হয়, জ্বালানি নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ডাটা সেন্টার এবং পরিবহন পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। সঠিক অর্থনৈতিক সংস্কার করা হলে আমেরিকার বেসরকারি খাত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে সহায়তা করতে পারে।

প্রতিনিধি দলের দুই সদস্য গতকাল দুপুরের পর দিল্লি সফর শেষে ঢাকায় আসেন। এ দুই সদস্যের একজন ডোনাল্ড লু। তার বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ১০ সেপ্টেম্বরের বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহায়তা করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সফর প্রসঙ্গে ১২ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে। এটা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র যে গুরুত্ব দেয়, তার একটা বড় প্রতিফলন। প্রতিনিধি দলে কারা থাকছেন আপনারা জেনেছেন। এটা থেকে বোঝা যায়, এ আলোচনাটা বহুমাত্রিক হবে, এটা শুধু একটি বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সবকিছুর সঙ্গে সংগতি রেখে আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

আলোচ্যসূচিতে কোন বিষয় গুরুত্ব পাবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথাবার্তা বলব। কিন্তু আমি আলোচনার আগে বা প্রতিনিধি দল বসার আগে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট আলোচ্যসূচির বিষয় প্রকাশ করে আলোচনাকে প্রভাবিত করতে চাই না।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন