এলএনজির বৈশ্বিক চাহিদা বাড়তে পারে ৫০ শতাংশ

বণিক বার্তা ডেস্ক

পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ১২-১৪ ডলারের মধ্যে থাকতে পারে ছবি: রয়টার্স

দাম না বাড়লে ২০৪০ সালের মধ্যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) চাহিদা বর্তমান পর্যায় থেকে আরো ৫০ শতাংশ বাড়তে পারে। গ্লোবাল এনার্জি ট্রেডার গানভরের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান টরবিয়র্ন টর্নকুইস্ট সোমবার এমন মন্তব্য করেন। খবর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। 

টর্নকুইস্ট এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটসের এশিয়া প্যাসিফিক পেট্রোলিয়াম কনফারেন্সে (এপিপিইসি) বলেন, ‘‌রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর সময়ের তুলনায় বর্তমানে এলএনজির বাজার কিছুটা স্বাভাবিক।’

তিনি জানান, সমুদ্রপথে পরিবহন করা জ্বালানি পণ্য হিসেবে এলএনজির চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ শিপিং শিল্পে এখনো পণ্যটির বিকল্প কম আছে। এছাড়া আমরা যদি ব্যয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করি, সামুদ্রিক জ্বালানি হিসেবে এলএনজি একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে থাকবে।  

কনফারেন্সে টর্নকুইস্ট আরো বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে এলএনজির দাম বেড়ে গেলেও বর্তমানে   তা কমছে। বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ২০৪০ সালের মধ্যে সমুদ্রপথে পরিবহন করা জ্বালানি পণ্যের ৫০ শতাংশই হতে পারে এলএনজি।’

কমোডিটি ইনসাইটসের তথ্যানুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। সে বছরের ৭ মার্চ এশিয়ার স্পট মার্কেটেও রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছেছিল জ্বালানি পণ্যটির দাম। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য নির্ধারণ হয়েছিল ৮৪ ডলার ৭৬২ সেন্ট। সম্মেলনে টর্নকুইস্ট জানান, দাম বেড়ে যাওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপে এলএনজি রফতানি বাড়তে শুরু করে। এটিই ছিল উচ্চ মূল্য থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায়। আর স্বাভাবিকভাবেই ইউরোপে এলএনজির বাজার পরিস্থিতি এশিয়ার দেশগুলোয়ও প্রতিফলিত হয়। 

টর্নকুইস্টের মতে, বর্তমান এলএনজির বাজার ‘‌সূক্ষ্মভাবে ভারসাম্যপূর্ণ’। কারণ কিছু এলএনজি প্রকল্প ২০২৬ সালের মধ্যে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া ভারত ও চীনের মতো দেশগুলোয় জ্বালানি পণ্যটির ব্যবহার অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে রুশ আর্কটিক-২ প্রকল্পের অনুমোদনও এলএনজির বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে। 

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে এলএনজির বাজারে ঊর্ধ্ব ও নিম্নমুখী চাহিদার মধ্যে একটি ক্রান্তিকাল চলছে। অর্থাৎ গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা কিছুটা কমছে। তাই পণ্যটির চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই নিম্নমুখী। অন্যদিকে এলএনজির যথেষ্ট মজুদও রয়েছে।’ 

গানভরের চেয়ারম্যান জানান, যদি সবকিছু ঠিক থাকে এবং কোনো অস্থিতিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না হয় তাহলে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ১২-১৪ ডলারের মধ্যে থাকতে পারে। তবে সামনেই শীতকাল। তাপমাত্রা অতিরিক্ত কমে গেলে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় পণ্যটির দাম আবার বাড়তে পারে। 

এদিকে গত এপ্রিলে কমোডিটি ইনসাইটসের এক প্রতিবেদনে অনুযায়ী, আগামী দুই বছরে গানভর সিঙ্গাপুর থেকে মোট ২৪টি এলএনজি কার্গো আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। ২০২৬ সাল থেকে নতুন একটি  দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি কার্যকর হবে। 

টর্নকুইস্ট বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে গানভর। কোম্পানিটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে এলএনজি সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন