দেশ ছাড়লেন ভেনিজুয়েলার বিরোধী নেতা

বণিক বার্তা ডেস্ক

স্পেনে রাজনৈতিক আশ্রয় খুঁজছেন ভেনিজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা এডমুন্ডো গঞ্জালেস ছবি: এপি

ভেনিজুয়েলার বিরোধীদলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী এডমুন্ডো গঞ্জালেস দেশ ত্যাগ করেছেন। এখন তিনি স্পেনে রাজনৈতিক আশ্রয় খুঁজছেন বলে জানিয়েছে ভেনিজুয়েলার সরকার।

গত জুলাইয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল নিয়ে বিতর্ক শুরুর পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন গঞ্জালেস। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছিল।

বিতর্কিত ওই নির্বাচনে নিকোলাস মাদুরোকে বিজয়ী ঘোষণা করে সরকার নিয়ন্ত্রিত জাতীয় নির্বাচনী কাউন্সিল (সিএনই)। তবে সেই ফল দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে বিরোধীরা। তাদের দাবি, নির্বাচনের ফল বদলে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।

ভেনিজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ সোশ্যাল মিডিয়ার এক পোস্টে বলেছেন, কিছুদিন আগে কারাকাসে স্প্যানিশ দূতাবাসে ‘স্বেচ্ছায়’ আশ্রয় নেন এডমুন্ডো গঞ্জালেস। পরে তিনি স্পেন সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চান।

ভাইস প্রেসিডেন্ট আরো জানিয়েছেন, বিরোধী নেতাকে নিরাপদে দেশ ত্যাগ করতে সম্মতি দিয়েছিল সরকার এবং সেই মোতাবেক তিনি চলে গেছেন।

স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসে ম্যানুয়েল আলবারেস বলেছেন, গঞ্জালেস নিজের অনুরোধেই স্প্যানিশ বিমান বাহিনীর একটি প্লেনে দেশ ত্যাগ করেছেন।

গঞ্জালেসের একজন আইনজীবী নিশ্চিত করেছেন, বিরোধীদলীয় এ নেতা স্পেনের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।

এদিকে গঞ্জালেসকে স্পেনে চলে যেতে দিলেও ভেনিজুয়েলার নিরাপত্তা বাহিনী রাজধানী কারাকাসে অবস্থিত আর্জেন্টিনা দূতাবাস ঘিরে রেখেছে। ওই দূতাবাসে প্রেসিডেন্ট মাদুরোর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত ছয় ব্যক্তি আশ্রয় নিয়েছেন।

গত মার্চ থেকে এ দূতাবাসে আছেন ভেনিজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া কারিনা মাচাদোর উপদেষ্টা পেদ্রো উরুচুর্তু নোসেলি। তিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত দূতাবাসের বাইরে হুডধারী কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি দেখা গেছে। তারা যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা এখনো বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছেন। বিরোধী দলের আরেক কর্মকর্তা ওমর গঞ্জালেস মোরেনো বলেছেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে দূতাবাস বিদ্যুৎহীন।

ভেনিজুয়েলা সরকার বলেছে, মাদুরো ও তার ডেপুটির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ হত্যাচেষ্টা পরিকল্পনার জন্য এ ভবন ব্যবহারের প্রমাণ উন্মোচিত হওয়ার পর তারা এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।

আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে বলেছে, মিশনে অবস্থানরত আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ বা অপহরণের যেকোনো প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে কঠোর নিন্দা কুড়াবে। এ ধরনের পদক্ষেপ এ ধারণাকে আরো জোরালো করে যে মাদুরোর ভেনিজুয়েলায় মৌলিক মানবাধিকারকে শ্রদ্ধা করা হয় না।

ভেনিজুয়েলায় গত ২৮ জুলাই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে তৃতীয় মেয়াদে বিজয়ী ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে অন্যতম বিরোধীদলীয় নেতা এডমুন্ডো গঞ্জালেস নিজের বিজয় দাবি করেন এবং মাদুরো তার বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগে আন্দোলন শুরু করেন।

বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সহিংস আন্দোলনের মুখে ভেনিজুয়েলায় রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। সহিংসতায় উসকানির অভিযোগে মামলায় গঞ্জালেসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। খবর এপি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন