সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের চলমান কোটা আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের হামলার শিকার হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সম্পাদক পরিষদ। একই সঙ্গে সরকার, সব ছাত্র সংগঠন ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছে দেশের মুদ্রিত সংবাদমাধ্যমগুলোর সম্পাদকদের সংগঠনটি। 

সাংবাদিকদের ওপর গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গতকাল সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতি পাঠিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। এতে বলা হয়, সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন কর্মসূচির খবর সংগ্রহ এবং জনগণের সামনে তা উপস্থাপন করেন। কিন্তু এ দায়িত্ব পালনকালে তাদের ওপর আক্রমণ বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া খুবই উদ্বেগের।

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২৫ জন সাংবাদিক আহত বা হামলার শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত সাংবাদিকদের ওপর হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও উদ্বেগের। সম্পাদক পরিষদ সব পক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছে, পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া খবরের বরাত দিয়ে এতে আরো বলা হয়, ১৫ জুলাই দিবাগত রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আটজন, ১৬ জুলাই সারা দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছয়জন; চট্টগ্রাম, দিনাজপুর ও বগুড়ায় সংঘর্ষে আরো নয়জন সাংবাদিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী যারা আহত হয়েছেন তারা হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বণিক বার্তা প্রতিনিধি মেহদী মামুন, দৈনিক বাংলায় কর্মরত আবদুর রহমান সার্জিল, বাংলাদেশ টুডের জোবায়ের আহমেদ, সময়ের আলোয় কর্মরত মুশফিকুর রিজওয়ান, বিডিনিউজ২৪ ডটকমের হাসিবুর রহমান, দৈনিক জনকণ্ঠের ওয়াজহেতুল ইসলাম, ইত্তেফাক প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল ও একটি অনলাইন পোর্টালের সাকিব আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গতকাল থেকে সংবাদ সংগ্রহের সময় আহত হন দ্য ডেইলি স্টারের সিনিয়র ফটোগ্রাফার প্রবীর দাস, প্রথম আলোর স্টাফ ফটোগ্রাফার দীপু মালাকার, জনকণ্ঠের চিত্রসাংবাদিক সুমন্ত চক্রবর্তী, পত্রিকাটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য মোতাহার হোসেন, ভোরের পাতার পুলক রাজ, আমার সংবাদের মিরাজ উদ্দিন; চট্টগ্রামের ষোলশহর এলাকায় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সারাবাংলা ডটনেটের আলোকচিত্রী শ্যামল নন্দী ও দীপ্ত টেলিভিশনের ব্যুরোপ্রধান রুনা আনসারি এবং দিনাজপুরের সংঘর্ষে সময় টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন শিমুল ও বিজয় টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন মোস্তফা আহত হন। বগুড়ায় যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার ও ব্যুরোপ্রধান মেহেরুল সুজন, দৈনিক করতোয়ার ফটোসাংবাদিক সফিকুল ইসলাম, দৈনিক ইত্তেফাকের ফটোসাংবাদিক বিমু রহমান, গাজী টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন এনামুল হক ও একটি অনলাইনে কর্মরত এক সাংবাদিক আহত হন।

বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, ‘আমরা সরকার, সব ছাত্র সংগঠন ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন