ক্লাউড পরিষেবা খাতে চীনের ব্যয় বেড়েছে ২০ শতাংশ

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে পেরেছে চীনের ক্লাউড কোম্পানিগুলো ছবি: লিংকডইন

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনে ক্লাউড অবকাঠামো ও পরিষেবা খাতের ব্যয় বছরওয়ারি হিসেবে ২০ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে দেশটিতে এ খাতে মোট ব্যয় ৯২০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। সম্প্রতি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিস প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

ক্লাউড পরিষেবা প্রদানের দিক থেকে চীনের বাজার নিয়ন্ত্রণে রেখেছে আলিবাবা, হুয়াওয়ে ও টেনসেন্ট ক্লাউড। সম্মিলিতভাবে কোম্পানিগুলোর ব্যবসা প্রথম প্রান্তিকে ২২ শতাংশ বেড়েছে এবং বাজারের ৭২ শতাংশ হিস্যা দখলে রেখেছে। যদিও ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় সম্মিলিত বাজার হিস্যা ২ শতাংশ কম। অন্যদিকে চায়না টেলিকমের ক্লাউড পরিষেবা টেলকোস বাজার হিস্যায় এগোচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রযুক্তিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) অ্যাপ্লিকেশনের উন্নয়ন ও ব্যয় কমানোর জন্য পরিষেবা কোম্পানিগুলো ক্লাউড খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। আর এর প্রভাবে গ্রাহক পর্যায়ে ব্যয়ও বেড়েছে।

ক্যানালিস প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের ক্লাউড বাজার বর্তমানে দামের দিক থেকে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যে রয়েছে। ফলে পরিষেবা কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে পেরেছে এবং ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছে। চলতি বছরের এপ্রিলে বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রচলিত পরিষেবা পণ্যের দাম কমানোর ঘোষণা দেয় আলিবাবা ক্লাউড। পরের মাসে এআই ফাউন্ডেশন মডেলের দামও কমায় কোম্পানিটি। আলিবাবার ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে মে মাসে ফাউন্ডেশন মডেলের দাম কমানোর তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নেয় টেনসেন্ট ক্লাউড।

ক্যানালিস বিশ্লেষক ই ঝাং বলেন, ‘‌তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বাজারে মুনাফা বজায় রাখার জন্য, একটি শক্তিশালী অংশীদার ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা অপরিহার্য। এছাড়া এ চুক্তি গ্রাহকদের যে পরিষেবা দেয় সেগুলোয়ও পরিবর্তন আনতে পারে।’

ক্লাউডের বাজার বিকাশে এআইনির্ভর পার্টনার প্রোগ্রাম চালু করেছে হুয়াওয়ে ও টেনসেন্ট ক্লাউড। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ক্লাউড খাত থেকে চীন যে রাজস্ব পেয়েছে তার ২৬ শতাংশই অংশীদারত্ব চুক্তিনির্ভর। এদিক থেকে শীর্ষে ছিল আলিবাবা ক্লাউড। কোম্পানিটির বাজার হিস্যা ছিল ৩৭ শতাংশ। এ সময় কোম্পানিটি সাধারণ ব্যবহারকারী পর্যায়ে ক্লাউড পরিষেবা গ্রহণ কার্যকরে মনোযোগ দিয়েছে। পণ্যের দাম কমানোর মতো উদ্যোগ সফল হওয়ায় চলতি বছরের এপ্রিলে আলিবাবা বিশ্বের ১৩টি অঞ্চলে এর মূল পণ্যের দাম কমিয়েছে।

আলিবাবার পর ১৯ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হুয়াওয়ে ক্লাউড। ১৬ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে টেনসেন্ট ক্লাউড।

অন্যদিকে ক্লাউড পরিষেবা গ্রহণে কোম্পানি বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ব্যয় বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৭ সাল নাগাদ সামগ্রিকভাবে পাবলিক ক্লাউড ও সফটওয়্যার খাতে ব্যয় ২১ হাজার ৯৩০ কোটি (প্রায় ২২ হাজার) ডলারে দাঁড়াবে। আইডিসি প্রকাশিত ওয়ার্ল্ডওয়াইড সফটওয়্যার অ্যান্ড পাবলিক ক্লাউড সার্ভিস স্পেন্ডিং গাইড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দ্বিগুণ ব্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য পাবলিক ক্লাউড সার্ভিস ও সফটওয়্যার বিনিয়োগের বার্ষিক বৃদ্ধির হার থাকবে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির এ হার ডিজিটাল রূপান্তর ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ওপর অঞ্চলটির কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিকে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়টি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, কার্যক্ষমতা, ব্যয় সংকোচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রসর হওয়ার জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত ক্লাউড পরিবেশের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। অন্যদিকে ডাটা অ্যানালিটিকস বা তথ্য বিশ্লেষণ, সাইবার নিরাপত্তা ও এআইয়ের ব্যবহার ক্লাউড পরিষেবা গ্রহণের হার বাড়িয়েছে। এর মাধ্যমে শিল্প খাতকে ডিজিটালাইজড করতে সফটওয়্যারের ভূমিকা প্রকাশ পেয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন