২০২৩ সাল

যুক্তরাষ্ট্রে মিলিয়নেয়ার বেড়েছে ৬ লাখ

বণিক বার্তা ডেস্ক

বর্তমানে সম্পদ সৃষ্টির দিকে আগ্রাসীভাবে ঝুঁকেছেন মার্কিন অতিধনীরা ছবি: রয়টার্স

কভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বিশ্বের অনেক দেশ হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠিত অর্থনীতিগুলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি সুদহারের সমন্বয়ের চেষ্টায় বেশ জটিলতা পোহাচ্ছে। সম্পদের বণ্টনগত বৈষম্য বৃদ্ধির মাঝেও বিশ্বে মিলিয়নেয়ার বৃদ্ধির হার থেমে নেই। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই গত বছর লাখ মিলিয়নেয়ার বেড়েছে বলে জানিয়েছে ফরাসি বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা পরামর্শক সংস্থা ক্যাপজেমিনি। খবর সিএনবিসি।

প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে দশমিক শতাংশ বেড়ে ৭৫ লাখে পৌঁছেছে। তাদের সামষ্টিক মূলধন ২৬ দশমিক ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে, এটি ২০২২ সালের তুলনায় শতাংশ বেশি।

মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশা অনুসারে কমে না আসায় যুক্তরাষ্ট্রে সুদহার এখনো রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে। তা সত্ত্বেও গত বছরের শেষের দিকে শেয়ারবাজারের পুনরুদ্ধার, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি প্রণোদনামূলক বিভিন্ন ব্যবস্থার কারণে মার্কিন অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সম্পদ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে ধনীদের সম্পদ সবচেয়ে দ্রুত হারে বাড়ছে। কোটি ডলার বা তার বেশি সম্পদের অধিকারী মার্কিনদের সংখ্যা ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেড়েছে। বর্তমানে দেশটিতে লাখ মিলিয়নেয়ারের সামষ্টিক সম্পদ দশমিক ট্রিলিয়নে পৌঁছেছে। 

সম্পদের হিসাবে বৈশ্বিক অতিধনীদের সংখ্যা  মিলিয়নেয়ারদের  মাত্র শতাংশ। তবে সম্পদের ৩৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছেন অতিধনীরা। ক্রমবর্ধমান হারে সম্পদের বৃদ্ধির সুফলভোগী হচ্ছেন ধনকুবেরদের ছোট্ট অংশ। অর্থাৎ অতিধনীদের তুলনায় বেশির ভাগ মিলিয়নেয়ারের সম্পদের পরিমাণ অনেক কম।

ক্যাপজেমিনির বৈশ্বিক প্রধান ইলিয়াস ঘানেমের মতে, গত দশকে কম সুদহার তারল্য ছিল সম্পদ সৃষ্টির কারণ। কভিড-১৯ মহামারী-পরবর্তী ব্যবসায়িক পরিবর্তন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এতে ভূমিকা রেখেছে। তবে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক দ্বন্দ্ব, জাতীয় নির্বাচন, সুদহার সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দা সম্পদ সৃষ্টির গতি কমিয়ে দিতে পারে।

সাম্প্রতিক বছরে শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, বিশ্বব্যাপী মিলিয়নেয়ার বাড়ছে। আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে মিনিয়নেয়ার দশমিক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে কোটি ২৮ লাখ হয়েছে। সমীক্ষা অনুসারে, তাদের সামষ্টিক মূলধন বেড়ে দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৮৬ দশমিক ট্রিলিয়ন ডলার।

মিলিয়নেয়ারের সংখ্যায় উত্তর আমেরিকার পর সবচেয়ে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে, দশমিক শতাংশ। ইউরোপে শতাংশ, লাতিন আমেরিকায় দশমিক মধ্যপ্রাচ্যে দশমিক শতাংশ মিলিয়নেয়ার বেড়েছে। তবে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যায় দশমিক শতাংশ সংকোচন দেখেছে আফ্রিকা।

ইলিয়াস ঘানেম বলেন, ‘কভিড-১৯ মহামারীর আগে উত্তর আমেরিকার মিলিয়নেয়ারের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল এশিয়া। তবে শ্লথগতি কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আবারো প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, অতিধনীরা এখন সম্পদ সৃষ্টির দিকে আগ্রাসীভাবে ঝুঁকেছেন। ২০২৩ সালের শুরুতে তাদের নগদ নগদ-সমতুল্য হোল্ডিং ছিল ৩৪ শতাংশ। সেখান থেকে কমে চলতি বছরের জানুয়ারিতে হয়েছে ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ ধনীরা এখন আরো সক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ করছেন।

বিভিন্ন ধরনের বন্ডের মতো নির্ভরযোগ্য আয়ের ক্ষেত্রে ধনীদের বিনিয়োগ ১৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০ শতাংশ হয়েছে। পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ ১৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৯ শতাংশ হয়েছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০সহ প্রধান পুঁজিবাজার সূচকের শক্তিশালী গতি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে খাতে ধনীদের অংশগ্রহণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে ২১ শতাংশে নেমেছে, যা ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। 

ক্যাপজেমিনির জরিপ অনুসারে, চলতি বছরে দুই-তৃতীয়াংশ কোটিপতি প্রাইভেট ইকুইটি প্রাইভেট ক্রেডিটে আরো বেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন। ইলিয়াস ঘানেম জানান, প্রাইভেট ইকুইটি সম্প্রতি একটু মন্দার দিকে রয়েছে। চক্রাকার অর্থনীতিতে মন্দার পর উত্থানের সম্ভাবনা বেশি। তাই সাশ্রয়ী খরচের সময়ে দীর্ঘমেয়াদি সুফল পেতে ইকুইটিকে বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে দেখছেন তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন