৫৫ বছরের বেশি বয়সী ২২ লাখ আমেরিকানের শিক্ষা ঋণ বকেয়া

বণিক বার্তা ডেস্ক

শিক্ষাঋণ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার রাস্তায় নেমেছেন মার্কিন শিক্ষার্থীরা ছবি: রয়টার্স

পড়াশোনার পালা দেড় থেকে দুই দশক আগে চুকিয়ে ফেলা সত্ত্বেও বড়সংখ্যক আমেরিকান এ-সংক্রান্ত ঋণ চুকাতে পারেননি। বিষয়টি তাদের অবসর জীবনেও বিড়ম্বনা তৈরি করছে। ২০২২ সালের কনজিউমার ফাইন্যান্স জরিপে এ তথ্য তুলে ধরেছে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ বোর্ড। খবর দ্য হিল।

জরিপ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের ৫৫ বছরের বেশি বয়স্ক অন্তত ২২ লাখ নাগরিক এখনো তাদের শিক্ষাঋণ পরিশোধ করেননি। কলেজে পড়ার সময় শিক্ষাসহায়ক হিসেবে এ ঋণ নিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সব কিস্তি পরিশোধ না হওয়ায় এখন তাদের অবসর জীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

গবেষণা সংস্থা নিউ স্কুলস সোয়ার্জ সেন্টার ফর ইকোনমিক পলিসির এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বয়স্ক ঋণগ্রহীতাদের অন্তত ৪৩ শতাংশই মধ্য আয়ের পেশাজীবী। বছরে ৫৪ হাজার ৬০০ ডলারের কম আয় করেন এমন পেশাজীবীদের গড় ঋণের পরিমাণ ৫৮ হাজার ডলার।

শিক্ষাঋণ পরিশোধের জন্য বেশি বয়সেও সময় নিতে পারেন আমেরিকানরা। তবে ১৪ শতাংশেরও বেশি ঋণগ্রহীতার এমন কোনো ডিগ্রি নেই, যা দেখিয়ে তারা ঋণ পরিশোধে বাড়তি সময় নিতে পারবেন।

বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, অবসর জীবনের জন্য সঞ্চয়ে শিক্ষাঋণের নেতিবাচক প্রভাব ঠেকাতে তিনটি নীতি সাহায্য করতে পারে। প্রথমত, শিক্ষাঋণ মওকুফ করে দেয়া যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, ভ্যালুয়েবল এডুকেশনাল এডুকেশন (সেভ) পরিকল্পনার আওতায় গ্রহীতার আয়ের ওপর ভিত্তি করে ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধার আওতায় পাওয়া অর্থ দিয়ে শিক্ষাঋণ পরিশোধ থেকে গ্রহীতাদের বিরত রাখতে হবে।

শিক্ষাঋণ পরিশোধ নিয়ে মার্কিন নাগরিকরা দীর্ঘদিন ধরে সমস্যার মধ্যে আছেন। গত মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ শিক্ষাঋণের সুদহার ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। ফলে পড়াশোনার জন্য ঋণ নেয়া ব্যক্তিরা পরিশোধে আরো সংকটে পড়েছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আসন্ন নির্বাচনী প্রচারণায়ও বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে।

বাইডেন প্রশাসন সম্প্রতি কয়েক বিলিয়ন ডলারের শিক্ষাঋণ মওকুফে উদ্যোগী হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় প্রায় ৫০ লাখ আমেরিকানের ১৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলার শিক্ষাঋণ মওকুফ করে দেয়া হয়েছে। গত মাসেও ১ লাখ ৬০ হাজার গ্রহীতার ৭৭০ কোটি ডলারের শিক্ষাঋণ মওকুফ হয়েছে। ফলে ঋণ পরিশোধের বিষয়টি আমেরিকানদের জন্য সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে ২০২২ সালের আগস্টে কয়েক বিলিয়ন ডলারের পরিশোধ না হওয়া শিক্ষাঋণ মওকুফের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জো বাইডেন। কিন্তু পরের বছর প্রস্তাবটিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। তবে এপ্রিলে বাইডেন প্রশাসন তিন কোটি আমেরিকানকে ঋণ মওকুফের সুবিধা দিতে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রশাসনের দাবি, এটি যেমন ঋণগ্রহীতাদের সুবিধা দেবে, তেমনি পুরো অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন