সিলেটে তিন দশকেও স্থাপন হয়নি রেলের বিভাগীয় দপ্তর

নূর আহমদ, সিলেট

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম থেকে আলাদা করে সিলেট বিভাগ প্রতিষ্ঠার তিন দশক এরই মধ্যে পূর্ণ হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর। স্থাপন করা হয়নি রেলওয়ের বিভাগীয় দপ্তর। পুরনো নিয়মানুযায়ী সিলেট অঞ্চলের রেলওয়ের কার্যক্রম চট্টগ্রামের অধীনেই চলছে। এতে কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলছে না। ব্যাহত হচ্ছে রেলের স্বাভাবিক কার্যক্রমও।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সিলেট-ঢাকা-সিলেট রুটে আন্তঃনগর ট্রেন কালনী এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস ও উপবন এক্সপ্রেস নিয়মিত যাত্রীসেবা দিয়ে আসছে। এছাড়া সুরমা মেইল নামে একটি মেইল ট্রেনও চলাচল করছে। আর সিলেট-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে নিয়মিত চলাচল করছে আন্তঃনগর ট্রেন পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ও উদয়ন এক্সপ্রেস। সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে এসব ট্রেন সিলেট, মোগলাবাজার, মাইজগাঁও, বরমচাল, কুলাউড়া, লংলা, শমসেরনগর, ভানুগাছ, শ্রীমঙ্গল, রশিদপুর, সাতগাঁও, শায়েস্তাগঞ্জ, শাহজিবাজার, নোয়াপাড়া, মনতলা, হরষপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রা বিরতি করে। এর বাইরে সিলেট-ছাতক রুটে নিয়মিত ট্রেন চলাচল থাকলেও ২০২২ সালের বন্যায় রেললাইন নষ্ট হওয়ায় আপাতত রেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। সিলেট বিভাগের এসব এলাকায় রেলওয়ের স্থাপনা, জমিও রয়েছে। স্টেশন ম্যানেজার, প্রকৌশলীসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও রয়েছেন। সিলেট অঞ্চলে রেলওয়ের বিশাল কর্মযজ্ঞ থাকলেও বিভাগীয় দপ্তর স্থাপন করেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘সিলেটের রেলওয়ের ইতিহাস বহু পুরনো। ১৩৩ বছর আগে ব্রিটিশ সরকার ১৮৯১ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি বাংলার পূর্ব দিকে রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু করে। কুলাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন করেন এবং সিলেট রেলওয়ে স্টেশন চালু হয়। সিলেট বিভাগ প্রতিষ্ঠার তিন দশকেও রেলওয়ের বিভাগীয় দপ্তর স্থাপন না হওয়াটা হতাশাজনক। রেলওয়ের পর্যাপ্ত সেবা দিতে হলে অবশ্যই সব পর্যায়ের দপ্তর স্থাপন জরুরি। পর্যাপ্ত জনবলও জরুরি। সংশ্লিষ্টদের এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।’

সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সিলেট রেলওয়ে স্টেশনভিত্তিক কাজকর্ম করছি। এর মধ্য দিয়েই জনসাধারণকে রেলের স্বাভাবিক সেবা দেয়া হচ্ছে। বিভাগীয় দপ্তর স্থাপনের বিষয়টি কেবল রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিষয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টির ব্যাপারে বলতে পারবেন।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে মূলত চট্টগ্রাম ও রাজশাহীকেন্দ্রিক দুটি অঞ্চলে বিভক্ত হয়ে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে রেলওয়ের বিভাগীয় কোনো দপ্তর নেই। তবে এটা সত্য, সময়ের পরিবর্তন এসেছে। রেলের সক্ষমতাও দিন দিন বাড়ছে। রেলকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে বিভাগীয় পর্যায়ের দপ্তর স্থাপন করা প্রয়োজন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হবে।’ 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন