ছবি : এফবিসিসিআই দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় হ্রাসসহ কাস্টমস ব্যবস্থাপনা সহজ করতে শতভাগ অটোমেশন বাস্তবায়ন, কাস্টমস আইনের সঠিক বাস্তবায়ন এবং আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
গতকাল বিকালে এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে কাস্টমস আইন ২০২৩ বাস্তবায়ন উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক এক কর্মশালায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে এ আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। যৌথভাবে কর্মশালাটির আয়োজন করে এফবিসিসিআই ও এনবিআর।
স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘দেশে ব্যবসার পরিবেশ সহজ করা এবং ব্যবসার ব্যয় কমাতে কাস্টমস আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মনে করি নতুন কাস্টমস আইন ব্যবসা-বাণিজ্য ত্বরান্বিতকরণে বড় ভূমিকা রাখবে।’
এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, পণ্যের এইচএস কোড, ডিক্লেয়ারেশন এবং কাস্টমসসংক্রান্ত নানা জটিলতার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য বিঘ্নিত হচ্ছে। এমন অবস্থায় কাস্টমস ব্যবস্থাপনায় শতভাগ অটোমেশন বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন তিনি।
মাহবুবুল আলম আরো বলেন, ‘আইন যত সুন্দরই হোক না কেন, সেটির সঠিক বাস্তবায়ন না হলে সুফল মিলবে না। কাস্টমস আইন বাস্তবায়নের আগে কর্মশালায় উঠে আসা বেসরকারি খাতের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করে দেখতে এনবিআরকে আহ্বান জানাই। প্রয়োজনীয় সংশোধন সম্পন্ন করে আইনটি বাস্তবায়ন করা হলে ব্যবসা, বাণিজ্য ও অর্থনীতি গতিশীল হবে বলে আমার বিশ্বাস।’
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘বাজেট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আইনটির বাস্তবায়ন শুরু হয়ে যাবে। সময়ে সময়ে প্রয়োজনে আইন সংশোধন হয়। তথ্য সহজ করা আমিও পছন্দ করি। এখানে আমরা আরো বেশি করে কাজ করব। ওয়েবসাইটেও আমরা কিছু তথ্য শেয়ার করব, যাতে অ্যানালাইসিস করে উদ্যোক্তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘কাস্টমস আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী মহলের যৌক্তিক প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অনেক ক্ষেত্রেই ছোট জরিমানা বা মাশুল কার্যকর হয় না। সেজন্য কিছু ক্ষেত্রে বড় জরিমানা বা মাশুল রাখা হয়। তবে সেটি অবশ্যই যৌক্তিক হতে হবে।’
তার পরও কারো কোনো অভিযোগ থাকলে আপনারা আসুন, আলোচনা করুন। আমরা আলোচনার দরজা খোলা রেখেছি। প্রয়োজনে আমরা প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করব।’
এ সময় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের কাস্টমস আইন ২০২৩ সম্পর্কে নিজেদের ধারণা পরিষ্কার রাখা এবং সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। কাস্টমস কর্মকর্তাদের নামে ঢালাওভাবে অভিযোগ না দিয়ে লিখিত আকারে সুস্পষ্ট অভিযোগ এনবিআরকে জানানোর আহ্বান জানান তিনি।
এনবিআরের সদস্য (শুল্ক নীতি ও আইসিটি) মো. মাসুদ সাদিক জানান, নতুন কাস্টমস আইনটি আগের চেয়ে আরো বেশি বাণিজ্যবান্ধব হবে। আইনটির প্রতি ব্যবসায়ীদের পূর্ণ সমর্থন আহ্বান করেন তিনি।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহসভাপতি শমী কায়সারসহ এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক, সাবেক পরিচালক, এনবিআরের কর্মকর্তারা ও ব্যবসায়ী নেতারা।
