ডাটা সেন্টার সক্ষমতায় এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অনেক দেশকে ছাড়িয়ে গেছে ভারত। এ তালিকায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, হংকং, জাপান, সিঙ্গাপুর ও কোরিয়া। বর্তমানে এ খাতে ভারতের সক্ষমতা ৯৫০ মেগাওয়াট। রিয়েল এস্টেট কনসালটিং ফার্ম সিবিআরই সাউথ এশিয়া প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খবর ইটি টেলিকম।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে এ খাতে ভারতের সক্ষমতা আরো ৮৫০ মেগাওয়াট বাড়বে। সে ক্ষেত্রে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ডাটা সেন্টার সক্ষমতায় ভারতের অবস্থান আরো শক্তিশালী হবে।
ভারতের পর ৮৯২ মেগাওয়াট ডাটা সেন্টার সক্ষমতা নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে জাপান, ৭৭৩ মেগাওয়াট নিয়ে তৃতীয় স্থানে অস্ট্রেলিয়া, ৭১৮ মেগাওয়াট সক্ষমতা নিয়ে চতুর্থ স্থানে সিঙ্গাপুর, ৬১৩ মেগাওয়াট নিয়ে পঞ্চমে হংকং ও ৫১৩ মেগাওয়াট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে কোরিয়া। এর মাধ্যমে মূলত বৈশ্বিক পর্যায়ে ডাটা সেন্টার শিল্পের প্রবৃদ্ধির বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। বিশেষ করে কভিড-১৯ মহামারী পরবর্তী সময়ে এ শিল্পের ব্যাপক প্রসার হয়েছে।
২০২৩ সালে আরো অতিরিক্ত ২৫৫ মেগাওয়াট নতুন সরবরাহ যুক্ত হয়, যা ২০২২ সালের ২০০ মেগাওয়াটের তুলনায় বেশি। ২০২৪ সালেও এ খাতের প্রবৃদ্ধি চলমান থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে ভারতের বিভিন্ন শহরে ৩৩০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হবে বলেও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে বছর শেষে মোট সক্ষমতা ১ হাজার ৩৭০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিনিয়োগের দিক থেকে পছন্দের তালিকায় থাকা খাতগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ডাটা সেন্টার। এ খাতে এরই মধ্যে বৈশ্বিক কোম্পানি, আবাসন খাতের ডেভেলপার ও প্রাইভেট ইকুইটির উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ দেখা গেছে।
ভারতের ডাটা সেন্টার খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে আগ্রহ ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এর মধ্যে অনেক গ্রুপ স্থানীয় পর্যায়ের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বর্তমানে ডাটা সেন্টার খাতে নতুন কোম্পানি তৈরি হচ্ছে। এ কারণে সামনের বছরগুলোয় মার্জার অ্যান্ড অ্যাকুইজিশন বা একত্রীকরণ ও অধিগ্রহণের হারও বাড়বে।
ভারতে ডাটা সেন্টার খাত এরই মধ্যে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ অঙ্গীকার নিশ্চিত করেছে। এর মাধ্যমে ডাটা সেন্টারের কার্যক্রম ও শিল্প খাতের পরিধি বিস্তারে দেশটির সক্ষমতার বিষয় উঠে এসেছে। বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির দিক থেকে শীর্ষে থাকা ভারতীয় রাজ্যগুলো হলো মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ু।
সিবিআরইর ভারত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আনশুমান বলেন, ‘ অনুকূল বাজার পরিস্থিতির মাধ্যমে ভারত বহুজাতিক করপোরেশনগুলোকে তাদের ডিজিটাল পরিষেবা প্রসারণ করতে এবং অন্যান্য দেশ থেকে কার্যক্রম স্থানান্তরে আকৃষ্ট করছে।’
বর্তমানে ভারতে বিদ্যমান ডাটা সেন্টারগুলোর মোট সক্ষমতা এক গিগাওয়াট, যা ১৮ মাস আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
নতুন ডাটা সেন্টারগুলোর সক্ষমতা আগামী পাঁচ বছরে বার্ষিক হিসাবে ২৫৫ মেগাওয়াটে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চাহিদা বাড়াতে ক্লাউড পরিষেবা সরবরাহকারী, বিএফএসআই সংস্থা, খুচরা, স্বাস্থ্যসেবা, বিনোদন, টেলিযোগাযোগ ও অন্যান্য খাত শীর্ষে থাকবে।