প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও জন্মগতভাবে গ্লকোমায় আক্রান্ত হতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে শিশুরা অন্ধ হয়েও যেতে পারে। চোখের ভেতরের প্রেসার বা চাপ বাড়লে সে অবস্থাকে গ্লকোমা বলে। শিশুর গ্লকোমা হলে দেরি না করে তখনই অস্ত্রোপচার করলে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিহীন হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
প্রতি এক লাখে পাঁচ জন শিশু গ্লকোমা নিয়ে জন্মায় অথবা শিশু অবস্থায় এ রোগ ধরা পড়ে। তিন বছরের আগে গ্লকোমা ধরা পড়লে সেক্ষেত্রে ‘শিশুর গ্লকোমা’ টার্মটি ব্যবহৃত হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিশুর গ্লকোমা এক বছর আগেই নির্ণয় করা যায়। চোখের গঠন ও চোখের নিষ্কাশন কীভাবে কাজ করছে তার ওপর গ্লকোমার প্রভাব নির্ণয় করা যায়।
প্রাথমিক জন্মগত গ্লকোমা
শিশু ও ছোট শিশুদের মধ্যে গ্লকোমা থাকা খুবই সাধারণ ব্যাপার। শিশু গর্ভে থাকা অবস্থায় চোখ সঠিকভাবে বিকশিত না হলে শিশুদের মধ্যে এ সমস্যা দেখা যায়। ফলে চোখের বাইরে তরল নিষ্কাশনে সমস্যা হয়। এ সমস্যার কারণে চোখের অপটিক স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে এবং দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা থাকে। বংশানুক্রমিক শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
সেকেন্ডারি গ্লকোমা
সাধারণত অন্য কোনো রোগের প্রভাবে শিশুদের মধ্যে সেকেন্ডারি লেভেলের গ্লকোমা দেখা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে অ্যাক্সেনফেল্ড-রিগার সিনড্রোম। যার কারণে চোখের বিভিন্ন অংশে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া লেন্স ও কর্নিয়ার অস্বাভাবিক বিকাশের কারণেও শিশুদের গ্লকোমা দেখা দিতে পারে।
গ্লকোমার কারণে প্রায়ই শিশুদের ছানি অস্ত্রোপচার করা হয়। চোখের লেন্স ঘোলাটে হয়ে গেলে তা ছানি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা হয়। ছানি অস্ত্রোপচারের পরে গ্লকোমা বিকাশ লাভ করতে পারে। তবে তার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।
কোনো কারণে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হলে শিশুদের গ্লকোমা দেখা দিতে পারে। যেমন কোনো শিশু যদি শৈশবে আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। কারণ এতে পানি নিষ্কাশন নালিগুলো ব্লক হয়ে যেতে পারে। অ্যানিরিডিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের গ্লকোমা দেখা দিতে পারে। যার কারণে আইরিসের বিকাশ কমে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়। স্টার্জ-ওয়েবার সিনড্রোমেও গ্লকোমা হতে পারে। স্টার্জ-ওয়েবার সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখে রক্তনালি জন্মদাগ হয়ে থাকে, প্রায়ই কপালে থাকে, যা পোর্ট ওয়াইনের দাগ নামে পরিচিত। এ লক্ষণগুলো থাকলে শিশু গ্লকোমায় আক্রান্ত হতে পারে।
লক্ষণ
১. বড় বড় চোখ
২. সাদা কর্নিয়া
৩. চোখ দিয়ে পানি পড়া
৪. আলোতে তাকাতে না পারা
শিশুর চোখ স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বড় মনে হলেই শিশু চক্ষু গ্লকোমা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া উচিত। হতে পারে শিশুটি গ্লকোমায় ভুগছে। তাই তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু করে শিশুর চোখকে রক্ষা করা সম্ভব।
সূত্র: গ্লকোমা ইউকে