ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে টিআইবি

এটি যেন ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার না হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : বণিক বার্তা

ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার যে আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে তা যেন ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার না হয়ে ওঠে তা খেয়াল রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার নামে যে আইনটি তৈরি করা হচ্ছে এটি ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ন্ত্রণমূলক আইন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা আমরা চাই না। ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইনের আওতায় নিরপেক্ষ কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। 

গতকাল ধানমন্ডির টিআইবি কার্যালয়ে টিআইবি ও আর্টিকেল নাইনটিনের যৌথভাবে আয়োজিত ‘খসড়া ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৪: পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকার ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যবহারকারী। ডাটা সুরক্ষা অথরিটি নামে যে সংস্থার কথা বলা আছে, সেটা সরকারি নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান। ফলে স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকে যদি এর নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে থাকে। আমরা এটিকে একটি কমিশন হিসেবে দেখতে চাই। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা কমিশন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য, যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকবে। আইনে সরকারি বেশকিছু সংস্থাকে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় অবাধে ব্যক্তিগত তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে অবাধ ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি বলে মনে করি। এখনো জাতীয় স্বার্থ বা জনস্বার্থের ব্যাখ্যা নেই। ফলে সেই ব্যাখ্যাও আইনে থাকতে হবে। এছাড়া তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে জুডিশিয়ারি মাধ্যমে যেন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আইনের মূল চেতনার যে জায়গা তা মানবাধিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়নি। এছাড়া ব্যক্তির সংজ্ঞা এবং ব্যক্তিগত তথ্যের সংজ্ঞা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। এটা সুস্পষ্ট হওয়া উচিত। তা না হলে সরকারের কাছে এক ধরনের সুযোগ থেকে যাচ্ছে।’

ডাটা সেন্টার নির্মাণ ও স্থানীয়করণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সব অংশীজনের সম্পৃক্ততায় এটি ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য আমরা প্রস্তুত নই। কারণ আমাদের অবকাঠামোগত সক্ষমতা নেই। এর পরও সরকার যদি মনে করে তা করতে হবে তবে অবশ্যই সব অংশীজনের সম্পৃক্ততা দরকার।’

সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আর্টিকেল নাইনটিনের আঞ্চলিক পরিচালক (বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া) শেখ মনজুর-ই-আলম। তিনি বলেন, ‘এ আইনে অধিকারভিত্তিক দিকনির্দেশনা দেখতে চাই। মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে বা মৌলিক অধিকার সুরক্ষা করতে এ আইন প্রয়োজন। অপব্যবহারের জন্যই যেমন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যবহার, সেভাবেই যেন এ আইনটাও তৈরি করা হয়েছে।’

ডাটা সেন্টারের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থানের অপ্রতুলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইনে ব্যক্তিগত উপাত্তের জন্য ডাটা সেন্টার নির্মাণে সবসময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বা শীতল স্থান প্রয়োজন। সেই সুবিধা বাংলাদেশে কতটুকু? বাংলাদেশ নিজেদের বিদ্যুৎ ঘাটতিই এখনো মেটাতে পারেনি। ফলে দেশের বাইরে হওয়াটাই উত্তম। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন