চাকরিবাজার স্থবির হয়ে পড়ায় বেকারত্বের হার বেড়েছে যুক্তরাজ্যে

বণিক বার্তা ডেস্ক

ফুড ডেলিভারি করতে বাইসাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন ব্রিটিশ তরুণ ছবি: রয়টার্স

বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাজ্যের চাকরির বাজার স্থবির হয়ে পড়ছে। গত ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারির মধ্যে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশে, যা ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সম্প্রতি প্রকাশিত অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকসের নতুন পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিবিসি।

এদিকে একই সময়ে কর্মসংস্থান হার কমার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তি অর্থাৎ যারা কাজ করছেন না বা চাকরি খুঁজছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও যুক্তরাজ্যে বেড়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন নতুন কর্মসংস্থানের এ পরিসংখ্যান ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে আগামী গ্রীষ্মের মাসগুলোয় সুদহার কমাতে পরিচালিত করতে পারে।

অন্যদিকে ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের যুক্তরাজ্যের প্রধান অর্থনীতিবিদ পল ডেলস বলেন, ‘‌কর্মসংস্থান দ্রুত কমছে ও বেকারত্ব বাড়ছে। পাশাপাশি আগামী মাসগুলোয় মজুরি প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। ফলে জুনে যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার কমাতে পারে।

পেশাদার সংস্থাগুলোর একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক কেপিএমজি, যা নিরীক্ষা, কর ও উপদেষ্টা পরিষেবা সরবরাহ করে। কেপিএমজি ইউকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়েল সেলফিন বলেন, ‘‌চাকরির বাজারে চাপ কম থাকায় এখনো ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা রয়ে গেছে।’

অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস (ওএনএস) জানিয়েছে, চাকরির বাজার মন্থর হতে শুরু করার প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া সামগ্রিকভাবে যুক্তরাজ্যের বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৯ থেকে বেড়ে ৪ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা অর্থনীতিবিদদের বেকারত্বের হার ৪ শতাংশে দাঁড়ানোর পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে বেকারের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪ লাখ।

সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের জন্য মজুরি বৃদ্ধি বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে কারণ এটি মূল্যস্ফীতিকে আবারো বাড়িয়ে তুলতে পারে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমে এলেও তা এখনো ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার ওপরেই অবস্থান করছে।

ওএনএসের মতে, ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারির মধ্যে কর্মসংস্থানের হার ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ১৬-৬৪ বছর বয়সীদের হার ২১ দশমিক ৪ থেকে বেড়ে ২২ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে, যা প্রায় ৯৪ লাখ মানুষের কাছাকাছি। তবে মহামারীর আগের তুলনায় এবারের পরিসংখ্যান জরিপের নমুনার আকার ছোট হওয়ায় তাদের পরিসংখ্যানকে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত বলে সতর্ক করেছে ওএনএস।

এদিকে ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট স্টাডিজের পরিচালক টনি উইলসন বলেন, ‘‌চাকরির বাজারের তথ্য প্রায় সময় পরিবর্তন হয়, তাই আমাদের স্বল্পমেয়াদি পরিবর্তনের দিকে খুব বেশি মনোযোগ দেয়া উচিত নয়। তবে সার্বিক বেকারত্বের প্রবণতা যে ভালো নয় তা আমাদের কাছে স্পষ্ট।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন