অর্থনীতিতে ডিজিটাল জিডিপির অবদান এখনো ৩ শতাংশের নিচে

বদরুল আলম

সরকারের বড় উদ্যোগ বিপুল বিনিয়োগ সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখতে পারছে না ডিজিটাল খাত। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে দেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি পেলেও মোট জিডিপিতে ডিজিটাল খাতের অবদান ছিল শতাংশের নিচে। পাঁচ বছরে অর্থনীতিতে ডিজিটাল জিডিপির অংশ না বেড়ে কিছুটা কমেছে। ২০১৬ সালে এটি ছিল দশমিক শতাংশ। ২০২১ সালে তা নেমে এসেছে দশমিক শতাংশে।

কোনো দেশের মোট জিডিপিতে ডিজিটাল খাতের পণ্য সেবার সার্বিক মূল্য সংযোজনকে অভিহিত করা হয় ডিজিটাল জিডিপি হিসেবে। বাংলাদেশের ডিজিটাল জিডিপি নির্ণয় করতে গিয়ে শুরুতে মৌলিক ডিজিটাল পণ্যের চূড়ান্ত চাহিদায় বছরব্যাপী মূল্য সংযোজনকে হিসাব করেছে এডিবি। এর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে অর্থনীতির অন্যান্য খাতে ডিজিটাল খাতের মাধ্যমে সংযোজিত মোট মূল্যকে। দুয়ের সঙ্গে আরো যোগ করা হয়েছে ডিজিটাল খাতের স্থায়ী বিনিয়োগ চাহিদায় অর্থনীতির অন্যান্য খাত থেকে আসা মূল্য সংযোজনকে। সেখান থেকে গোটা প্রক্রিয়ায় একাধিকবার আসা বিষয়গুলোকে বাদ দিয়ে নির্ণয় করা হয়েছে দেশের মোট ডিজিটাল জিডিপি। মূলত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস প্রতিবেদন থেকে নেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হিসাব করা হয়েছে।

এডিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে মোট জিডিপিতে ডিজিটাল জিডিপির অংশ ছিল দশমিক শতাংশ। ২০১৭ সালে তা কমে দশমিক শতাংশে নেমে আসে। ২০১৮ সালে তা আরো কমে নেমে আসে দশমিক শতাংশে। এরপর ২০১৯ ২০২০ সালে কিছুটা উন্নতি হলেও তা দশমিক শতাংশে ওঠেনি। বরং ২০২১ সালে দেশের মোট জিডিপিতে ডিজিটাল জিডিপির অংশ আগের বছরের তুলনায় কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। এডিবির ট্রান্সফর্মিং বাংলাদেশস পার্টিসিপেশন ইন ট্রেড অ্যান্ড গ্লোবাল ভ্যালু চেইনস শীর্ষক প্রতিবেদনে তথ্য প্রকাশ করা হয়।

গবেষক অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গত কয়েক দশকে দেশের অর্থনীতি যে গতিতে সম্প্রসারিত হয়েছে, ডিজিটাল খাতের প্রসার ঘটেছে তার চেয়ে ধীরগতিতে। অর্থনীতির আকার এরই মধ্যে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল খাত এখনো সেভাবে প্রভাববিস্তারী দ্রুতবর্ধনশীল খাত হিসেবে সুনাম অর্জন করতে পারেনি। জিডিপিতে ডিজিটাল খাতের অবদান কমে যাওয়ার বিষয়টি এরই প্রতিফলন। এছাড়া বিবিএসের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস সংশ্লিষ্ট হিসাবগুলো করা হয় সংশ্লিষ্ট সময়কালের চলতি মূল্যে। কারণে ডিজিটাল পণ্যের দাম কমে যাওয়ার বিষয়টি হিসাবে অনেকটাই উপেক্ষিত থেকে যায়। এটিও এখানে বড় ভূমিকা রেখে থাকতে পারে।

এশিয়ার অন্যান্য অর্থনীতির মতো বাংলাদেশেও কম্পিউটার, তথ্য পরিষেবা, টেলিযোগাযোগ, ইলেকট্রনিক এবং অপটিক্যাল সরঞ্জামের মতো ক্ষেত্রগুলোয় ডিজিটালাইজেশন হার সর্বোচ্চে বলে এডিবির বক্তব্যে উঠে এসেছে। মৌলিক ডিজিটাল পণ্য হিসেবে এগুলো অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে মূল্য সংযোজন করে আসছে। এছাড়া বাংলাদেশে আকাশ পরিবহন, কোক (উচ্চ কার্বনসমৃদ্ধ কয়লা) পরিশোধিত জ্বালানি, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, পাল্প, কাগজের পণ্য, রাবার প্লাস্টিক পণ্যেও মূল্য সংযোজনে বড় ভূমিকা রাখছে ডিজিটাল খাত।

দেশের রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় অংশটি আসে তৈরি পোশাক টেক্সটাইল খাত থেকে। খাতটিতে ডিজিটালাইজেশন হার শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ বলে এডিবির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এমনকি প্রতিবেশী ভারতের তুলনায়ও খাতে ডিজিটালাইজেশনে পিছিয়ে বাংলাদেশ। টেক্সটাইল টেক্সটাইল পণ্যে ভারতের ডিজিটালাইজেশন হার দশমিক ২৮ শতাংশ। মালদ্বীপ, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকার টেক্সটাইল টেক্সটাইল পণ্যে ডিজিটালাইজেশন হার বাংলাদেশের চেয়ে কম। দেশগুলোর ডিজিটালাইজেশন হার যথাক্রমে দশমিক ৩২, দশমিক ২৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

হোটেল রেস্টুরেন্ট খাতে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দ্রুত ডিজিটালাইজেশন হয়েছে মালদ্বীপে। এর পরই আছে পাকিস্তান ভারত। খাতে বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশন হার দশমিক ৬৭ শতাংশ। শ্রীলংকার হোটেল রেস্টুরেন্টে ডিজিটালাইজেশন হার দশমিক ১৫ শতাংশ।

বাংলাদেশে কৃষি-বনায়ন-মত্স্য খাতে ডিজিটালাইজেশনের হার দশমিক ১৮ শতাংশ। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তা দশমিক ১২ শতাংশ। শ্রীলংকা ভারতের ক্ষেত্রে হার যথাক্রমে দশমিক ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ। খাতে ডিজিটালাইজেশন হার সবচেয়ে বেশি মালদ্বীপে দশমিক ৩২ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ডিজিটালাইজেশন অর্থনৈতিক রূপান্তরের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠানের অনলাইন (ওয়েব) উপস্থিতি, -মেইল ব্যবহারের হার, গ্লোবাল ভ্যালু চেইনে অংশগ্রহণ এবং গড় রফতানি নিবিড়তার হার উল্লেখ করা হয়েছে। দেখা গেছে বাংলাদেশের প্লাস্টিক এবং কাগজ পণ্যের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েব উপস্থিতির হার ২১ দশমিক শতাংশ। -মেইল ব্যবহারের হার ৪৭ দশমিক শতাংশ। সংশ্লিষ্ট খাতের বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনে প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। রফতানি নিবিড়তার গড় ২৬ দশমিক শতাংশ।

বাংলাদেশের পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ওয়েব উপস্থিতির হার ৫৬ দশমিক শতাংশ, -মেইল ব্যবহারের হার ৮৪ দশমিক শতাংশ। গ্লোবাল ভ্যালু চেইনে অংশগ্রহণ ৫৮ দশমিক শতাংশ। গড় রফতানি নিবিড়তা ৮০ শতাংশ। সামগ্রিক পরিস্থিতি বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশন এবং অর্থনৈতিক রূপান্তরের মধ্যে একটি ইতিবাচক সম্পর্ককে নির্দেশ করে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এডিবি। পাশাপাশি বাংলাদেশের চেয়ে প্রযুক্তিগতভাবে ভিয়েতনামের এগিয়ে থাকার কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি।

সরকারের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলছে, বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি ইতিবাচকভাবে বিকাশমান। বিপুল পরিমাণ ফ্রি-ল্যান্সার গড়ে উঠেছে। যাদের মাধ্যমে অর্জন অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশে বসেই বাংলাদেশের অনেক নারী-পুরুষ ফ্রিল্যান্সার পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিষ্ঠানের আওতায় স্থায়ীভাবে কাজ করছে। অর্জনগুলো এখনো পুরোপুরি দৃশ্যমান হচ্ছে না। ঋণপত্র খোলা থেকে শুরু করে পণ্য জাহাজে ওঠা তার বিপরীতে অর্থ প্রাপ্তির মাধ্যমে রফতানির ক্ষেত্রে কার্যক্রমগুলো যতটা দৃশ্যমান, একজন ফ্রিল্যান্সারের কার্যক্রমগুলো সেই তুলনায় দৃশ্যমান হতে পারেনি। তবে দৃশ্যমান না হলেও জিডিপিতে তাদের অবদান প্রকাশ পাচ্ছে। এভাবে ডিজিটাল অর্থনীতির ব্যাপ্তিও বাংলাদেশে বাড়ছে।

তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন বণিক বার্তাকে বলেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল জিডিপি কমেনি। মোট জিডিপির আকার অনেক বেড়েছে, সেখানে ডিজিটাল জিডিপির অংশ কম দেখা যাচ্ছে। করোনাকালে সামগ্রিক কর্মকাণ্ড কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে, এর কিছু প্রভাব ডিজিটাল জিডিপিতে পড়তে পারে। এছাড়া আমাদের পেমেন্ট গেটওয়েগুলো নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। এক্ষেত্রে ইনফরমাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়ছে। মূল কথা হলো মোট জিডিপিতে ডিজিটাল জিডিপি যতটা দৃশ্যমান হওয়ার কথা ততটা হচ্ছে না। আদতে ডিজিটাল জিডিপি কমছে না বরং বাড়ছে।

সরকারি নীতিনির্ধারকরা বলছেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগসংক্রান্ত কোনো হিসাব করার প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। ফলে ধরনের কোনো পরিসংখ্যান স্পষ্ট পাওয়া যায় না। তবে তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের স্মার্ট বাংলাদেশ আইসিটি মহাপরিকল্পনা ২০৪১-এর খসড়ায় মোট জিডিপিতে আইসিটি খাতের অবদানের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এতে উল্লেখ রয়েছে, ২০২৫ সালে আইসিটি খাত জিডিপিতে অবদান রাখবে - বিলিয়ন ডলার। ২০৩১ সালে হবে ২০ বিলিয়ন ডলার। ২০৪১ সাল নাগাদ আইসিটি জিডিপিতে অবদান রাখবে ৫০ বিলিয়ন ডলার।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী . শামসুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, আমাদের জিডিপির হার বাড়লেও দেখা যায় কর অনুপাত বাড়ে না। এদেশে এটা একটা বৈশিষ্ট্য। যে হারে জিডিপি বাড়ে, সেই হারে সবকিছু বাড়ে না। যদিও এটা বাড়ার কথা। কারণ আয় বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই কর বাড়ার কথা। আমাদের মোট জিডিপির আকার দ্রুত বাড়ছে। সেই হারে ডিজিটাল জিডিপির হার বাড়ছে না। আমাদের ডিজিটাল অর্থনীতির কর্মকাণ্ড অনেক বেড়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বেড়েছে। ব্রডব্যান্ড ব্যবহার অনেক বেড়েছে। সেলফোন ব্যবহার বেড়েছে। সরকারের ক্ষেত্রে কাজেও সামাজিক সুরক্ষার অর্থসহ অনেক পরিশোধ কার্যক্রম অনলাইনেই হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ করেছে। হাজার ৫৫০ ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপন করা হয়েছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার। গভীর সমুদ্রের তলদেশে অপটিক্যাল ফাইবার নির্মাণ, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপন, মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু, উপজেলা শহরে ব্যাংকের এটিএম বুথ নির্মাণসহ সহজলভ্য ইন্টারনেট সেবা এখন মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। দেশের প্রায় ১৭ কোটি মোবাইল ফোন ব্যবহার হয়। ডিজিটাল ব্যবস্থায় নগদ অর্থ প্রদানের সক্ষমতা সরকারের রয়েছে। প্রায় দুই হাজার সরকারি সেবা ডিজিটালাইজড হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, বর্তমানে সারা দেশে হাজার ৩৬৩টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে তিনশোর বেশি বিভিন্ন ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা জনগণ গ্রহণ করছে। ডিজিটাল সেন্টার থেকে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ২৬ হাজার ৫৫০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। দেশের মানুষ এখন বিশ্বাস করে ঘরের কাছেই সব ধরনের সেবা পাওয়া সম্ভব। বিশ্বাস অর্জনই ডিজিটাল বাংলাদেশের পথচলায় সরকারের সবচেয়ে বড় পাওয়া। আইসিটি খাতের রফতানি দশমিক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। দেশে ৩৯টি হাই-টেক পার্ক/আইটি ইনকিউবেশন সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ ঘটেছে বলে মনে করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

এডিবির পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত নন দেশের আইসিটি খাতের উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, মোট জিডিপিতে ডিজিটাল জিডিপির অবদান কমে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। আইসিটি রফতানি ২০১৬ সালের ৩০ কোটি থেকে বর্তমানে তা দশমিক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। স্থানীয় পর্যায়ে সফটওয়্যার অন্যান্য আইসিটি সেবার বাজার প্রায় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে ২০১৬ থেকে ২০২২ সালে আইসিটি খাত কম করে হলেও চার গুণ বেড়েছে। কোনোভাবেই মোট জিডিপিতে অবদান কমার দিকে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশের শিল্প থেকে শুরু করে সব খাতে আইসিটির ব্যবহার আছে। দেশের যত খাত আছে সবগুলোয় আইসিটির ভূমিকা আছে। প্রেক্ষাপটে ২০১৬ সালের চেয়ে বর্তমান মোট জিডিপিতে ডিজিটাল জিডিপি কমে যাওয়ার অংক কোনোভাবেই মেলার সুযোগ নেই।

একই মতামত ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই নেতাদেরও। সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফা আজাদ চৌধুরী বাবু বণিক বার্তাকে বলেন, মোট জিডিপিতে ডিজিটাল জিডিপির অবদান কমেছে বলে মনে করি না। কারণ গত দেড় দশকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপক হারে বেড়েছে। কর্মকাণ্ডগুলোর ডিজিটাল নির্ভরতাও বেড়েছে। আইসিটি খাত জিডিপির আকারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কিনা, তা বিচার-বিশ্লেষণ সাপেক্ষে বলা সম্ভব। তবে এটা বলা যায় কভিডকালে আমাদের ফ্রিল্যান্সারদের কর্মকাণ্ড অনেকটাই কমে গিয়েছে। বর্তমানে সে প্রভাবটি পর্যায়ক্রমে কাটিয়ে ওঠা হচ্ছে। এছাড়া ফ্রিল্যান্সারদের বড় একটি অংশের অর্থ যথাযথ চ্যানেলে আসে না। এরও এক ধরনের প্রভাব এখানে থেকে থাকতে পারে।

ডিজিটাল অর্থনীতির অবদান বিষয়ে এডিবির আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা চাইলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস পরিসংখ্যান থেকে ডিজিটাল পণ্য শিল্পসংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে হিসাব করেছে এডিবি। ২০২১ সালে বাংলাদেশের সার্বিক জিডিপিতে ডিজিটাল জিডিপির অংশ ছিল দশমিক শতাংশ, যা ২০১৬ সালের দশমিক শতাংশ থেকে কম।

সম্পর্কে ব্যাখ্যায় এডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, এর সম্ভাব্য একটি কারণ হলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখানে ডিজিটাল পণ্যের দাম কমে এসেছে। আরেকটি কারণ হতে পারে, সময় ডিজিটাল জিডিপির আকার বড় হলেও সম্প্রসারণের গতি ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যান্য খাতের তুলনায় ধীর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন