আলোকপাত

পরিবর্তিত বিশ্ব প্রেক্ষাপটে নতুন রাজনৈতিক অর্থনীতির সন্ধানে

ড্যারন অ্যাসেমোগলু

১৯৮৯ সালে ফ্রান্সিস ফুকুইয়ামা তার বিখ্যাত প্রবন্ধ ‘দি এন্ড অব হিস্ট্রি’ প্রকাশ করেন। সে প্রবন্ধে তিনি পশ্চিমা পুঁজিবাদের মানসিকতা ফুটিয়ে তোলেন। যদিও অনেকেই তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হননি যে ‘মানবজাতির মতাদর্শগত বিবর্তন শেষ প্রান্তে পৌঁছেছে।’ তবে খুব কম লোকই তার বার্তার অনুরণনকে অস্বীকার করতে পেরেছে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উদারতায় অপ্রতিরোধ্য বিজয়ের প্রত্যাশায় তিনি নীতিনির্ধারণ এবং এরই মধ্যে অধিকাংশ একাডেমিয়ার মানসম্মত পদ্ধতিতে পরিণত হওয়া ঐকমত্য ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। 

বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এ ঐকমত্য দুটি স্বতন্ত্র সমন্বয়কারী স্তম্ভের ওপর নির্ভরশীল ছিল। প্রথমটি রাজনৈতিক উদারতাবাদ এবং অন্যটি হলো অর্থনৈতিক উদারতাবাদ। রাজনৈতিক পরিসরে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নেপথ্যে বাতাস প্রবাহিত করার মাধ্যমে অনুমিত হয়েছিল যে তারা অবিশ্বাস্যভাবে শিকড় গেড়েছে। 

মানবতা তার নিজ অস্তিত্বের বেশির ভাগ সময়জুড়ে কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচার এবং আইনহীনতার মুখোমুখি ছিল। কিন্তু যখন থেকে গণতন্ত্র তার আধুনিক রূপে উদ্ভাবিত হয়েছে, তখন থেকেই গণতন্ত্রের এ ধারণা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। বিংশ শতাব্দীর অন্যসব বিকল্প মতাদর্শ (নিরঙ্কুশবাদ, ফ্যাসিবাদ, সাম্যবাদ) ব্যর্থতার মুখ দেখার পর বহু পশ্চিমা এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল যে তাদের গণতন্ত্রের মডেলটি শেষ পর্যন্ত সর্বত্র জয়লাভ করবে, এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের মতো জায়গাতেও যেখানে খুব কম বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনো ধরনের গণতান্ত্রিক চর্চার ইতিহাস নেই বললেই চলে। সাধারণ মানুষ একটি দাবির কণ্ঠস্বর তুলবে, এমনকি লৌহ মুষ্টিবদ্ধ স্বৈরাচারীরাও এ পশ্চিমা ধারণার প্রভাব থেকে নিজেদের প্রতিহত করতে সক্ষম হবে না।

নিশ্চিত করে বললে, প্রক্রিয়াটি কখনই নির্বিঘ্নে উন্মোচন হবে না। ফুকুইয়ামা এবং আরো অনেকে যারা তার মতো দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন তারা বুঝতে পেরেছিলেন গণতন্ত্রের বিজয়ে কয়েক দশক লেগে যাবে। এতে থাকবে বিদ্রোহ, বিপ্লব, গৃহযুদ্ধ এবং সমগ্র সমাজব্যাপী বড় আকারের বিঘ্নতা ঘটবে। তবুও ইতিহাসের চাকা নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের দিকে ঝুঁকেছে।

এ দৃষ্টিভঙ্গির প্রবক্তারা ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকের ‘আধুনিকীকরণ তত্ত্ব’ দিয়ে প্রচুর আকৃষ্ট ছিল। এ ঘরানার স্কুলের অনুসারীরা বিশ্বাস করতেন যে গণতন্ত্র স্বাভাবিকভাবেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে অনুসৃত হয় এবং একবার গণতন্ত্র পূর্ণাঙ্গরূপে সমৃদ্ধ হয়ে উঠলে তাকে কখনই কর্তৃত্ববাদে ফিরিয়ে আনা যায় না। এ উপসংহারগুলো পুরনো কান্টিয়ান অনুমানকেও শক্তিশালী করেছে যে গণতন্ত্রগুলো অন্য গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যায় না। সুতরাং এভাবে গণতন্ত্রের বিশ্ব আন্তর্জাতিক শান্তি ও একটি ‘নিয়ম-শৃঙ্খলাভিত্তিক’ শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য পরিস্থিতি তৈরি করবে।

রাজনৈতিকভাবে এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল ছিল এবং অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিও কম আশাব্যঞ্জক ছিল না। আশির দশকের শেষের দিকে এক ধরনের মুক্তবাজার অর্থনীতির মৌলবাদ বিজয়ী উদারবাদী গণতন্ত্রগুলোয় জায়গা করে নেয়। সর্বোপরি, বাজার অর্থনীতিগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পিত অর্থনীতিকে যে ছাড়িয়ে গেছে তা দেখানোর জন্য স্পষ্ট প্রমাণ ছিল। এ বাজার অর্থনীতি উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করছিল এবং লোকেরা যে ধরনের পণ্য ও পরিষেবা চেয়েছিল তা সরবরাহ করতে ভালো মতোই সক্ষম ছিল। অনেকের জন্য এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া একটি সংক্ষিপ্ত পদক্ষেপ বলে মনে হয়েছিল যে বাজারগুলো কম বেঁধে রাখা হলে সেখানে বেশি উদ্ভাবন ও অর্থনৈতিক গতিশীলতা তৈরি হবে।

তবে এ ধরনের যুক্তিগুলো সুবিধাজনকভাবে এ সত্যকে উপেক্ষা করেছিল যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন সোভিয়েত ইউনিয়নকে অর্থনীতিতে ছাড়িয়ে যাচ্ছিল তখন এটি নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতিতে ছিল। মার্কিন সরকার থেকেই উদ্ভাবনকে সমর্থন করা হয়, কেবল গবেষণা ও উন্নয়নকে ভর্তুকি দিয়ে নয় বরং প্রযুক্তির দিকনির্ধারণের মাধ্যমেও সমর্থন দেয়া হয়েছিল। শক্তিশালী ইউনিয়ন ও ন্যূনতম মজুরি পারস্পরিক সম্পর্কের এক আদর্শকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সহায়তা করেছিল, যা নিশ্চিত করে যে শ্রমিকদের বেতন মূলত উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ওপর নজর রাখে, আর যখন রাজস্বনীতি ধনী থেকে দরিদ্র এবং মধ্যবিত্তদের মধ্যে অর্থ পুনর্বণ্টনের মাধ্যমে বৈষম্যকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।

রোডম্যাপের সন্ধানে

নতুন প্যারাডাইমগুলো সামষ্টিক অবস্থান, ধারাবাহিকতা এবং অনেক স্টেকহোল্ডারের টেকসই প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে নির্মিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের বিশ্লেষণে শান দেয়া এবং পাঁচটি ক্ষেত্রে চিন্তাকে সমৃদ্ধ করা এ প্রক্রিয়াকে সহজ করবে।

প্রাথমিকভাবে এর বিস্তৃত উপকারিতা সত্ত্বেও গণতন্ত্র যেকোনো সময়ে একনায়কতন্ত্রকে পরাজিত করতে পারে না। বিঘ্ন সৃষ্টিকারী নতুন প্রযুক্তির এ সময়ে, অসমতা ও বিশ্বায়নের উত্থানে ‘সংকীর্ণ করিডর’ ধারণার কথা বলা হয়। এটি একটি নির্দিষ্ট অবস্থা যেখানে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সমৃদ্ধি হচ্ছে এমনকি সংকীর্ণতর হওয়ার ক্ষেত্রেও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করানো অতীতের তুলনায় কষ্টসাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

এ সংকীর্ণ করিডরকে সঠিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই অহমিকা পরিত্যাগ করতে হবে যে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জগুলো প্রকৌশল সমস্যার মতো উপলব্ধি করা যায়, যেভাবে আমরা সবকিছু সঠিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাধান করতে পারি। গত দুই দশকে প্রযুক্তি যথেষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করেছে যে এটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা অবমূল্যায়ন করছে। সেই সঙ্গে একনায়কদের তাদের জনগণকে নিয়ন্ত্রণ ও মগজ ধোলাইয়ের ক্ষেত্রে ক্ষমতায়ন করছে। হ্যাঁ, এখনো আমরা কীভাবে নতুন প্রযুক্তি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে সেটি সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হইনি, এমনকি এসব নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে যে মুখ্য কৌশল কাজ করেছে সেটি সম্পর্কেও নয়।

দ্বিতীয়ত, গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ বৈশ্বিক অনুষঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে না। আমাদের অবশ্যই এ ধারণা পরিত্যাগ করতে হবে যে কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য সীমান্তে স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করে অথবা সরকারগুলোকে গণতন্ত্রের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন করে তোলে (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ একবার দাবি করেছিলেন)। অবশ্যই এ পর্যবেক্ষণ উত্তরের চেয়ে অনেক বেশি প্রশ্নের জন্ম দেয়। কীভাবে গণতান্ত্রিক মানদণ্ড অর্থনৈতিক বন্ধন এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিকে প্রভাবিত করে? গণতন্ত্রের কি সাপ্লাই চেইনকে বর্জন করা উচিত যা অগণতান্ত্রিক দেশগুলোর ওপর নির্ভর করে। তারা কীভাবে প্রযুক্তি হস্তান্তর, যৌথ গবেষণা এবং এ-সংক্রান্ত ইস্যুতে চিন্তা করে? শিক্ষাবিদ অথবা নীতিনির্ধারকদের কাছে এসব প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর নেই।

তৃতীয়ত, এটি দীর্ঘমেয়াদে অনুমিত নয় যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনমনীয়ভাবে প্রাপ্তি ভাগ করে নেয়। যুক্তরাষ্ট্র এবং সারা পশ্চিমা বিশ্ব গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ উপভোগ করেছে এবং উৎপাদনশীলতার প্রবৃদ্ধি গত চার দশকে ছিল। কিন্তু কর্মী বিশেষ করে যাদের কলেজ ডিগ্রি এবং বিশেষায়িত প্রযুক্তিগত দক্ষতা নেই, তারা কদাচিৎভাবে এর উপকারিতা পেয়েছে। টেক্সটবুকের অর্থনৈতিক মডেল সাধারণভাবে পরামর্শ দেয় যে উৎপাদনশীলতার প্রবৃদ্ধি চূড়ান্তভাবে মজুরি প্রবৃদ্ধিতে রূপান্তরিত হতে পারে, কিন্তু এর কোনো কিছু্ই এখনো ঘটেনি।

যখন মানসম্মত নমুনা সাধারণত উৎপাদনশীলতার উৎসের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়, সেটি প্রবৃদ্ধিকে খুব প্রভাবিত করে। এ প্রক্রিয়ায় মজুরি অধিক বিষয়কে সংযুক্ত করে। যন্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মীরা উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে, কিন্তু এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমৃদ্ধির অংশ হবে না। যখন উৎপাদন বাড়ে, এক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়তার ফলে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো যখন ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিতে থাকা কর্মীদের দরকষাকষির ক্ষমতা অনুমোদন দেয়, তখন কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপকরা তাদের জন্য অধিক লভ্যাংশ পেতে পছন্দ করতে পারেন। সমৃদ্ধির অংশ শুধু উৎপাদনশীলতার প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে না, কিন্তু প্রযুক্তি, প্রতিষ্ঠান ও আদর্শের সঠিক গঠনের ওপর নির্ভর করে। 

বাজারের মৌলিকত্ব প্রতিষ্ঠার পর

আমাদের উদ্ভাবননীতি নিয়ে পুনরায় ভাবার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। হ্যাঁ, পশ্চিমে আমাদের সমৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু এবং আধুনিক সুবিধা তিন শতাব্দীর প্রযুক্তিগত উন্নতির কাছে ঋণী, যা বাজার প্রণোদনা ছাড়া কখনই সম্ভব হতো না। কিন্তু উদ্ভাবন পরিচালনার জন্য বাজারের প্রয়োজনীয়তা সামাজিক উপকারিতা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত নয়। বাজার বিনিয়োগকে প্রযুক্তির দিকে পরিচালিত করে যা বড় লভ্যাংশের জোগান দেয়, যা সব সময় হুবহু প্রবৃদ্ধির লালন অথবা জনকল্যাণকে উন্নত করে।

স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে উচ্চপ্রযুক্তির প্রক্রিয়া এবং ওষুধকে নিরাময়ের জন্য নির্দিষ্ট করা জনস্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ জোরদারে উদ্ভাবনের চেয়ে অধিক লাভজনক, এমনকি এসব অধিক সামাজিক উপকারিতা বয়ে নিয়ে আসতে পারে। এ বাজার অত্যধিকভাবে পূর্ববর্তীদের আনুকূল্য দেয়, যা পরবর্তী সময়ে বিনিয়োগ খাতে নেতৃত্ব দিয়েছে।

একইভাবে তাদের নিজস্ব ডিভাইসগুলো ছেড়ে দেয়া হলে বাজার ব্যবস্থা জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ চালিয়ে যাবে। পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে আরো মূলধন পরিচালনা করার জন্য ট্যাক্সেশন, প্রবিধান এবং সামাজিক চাপ সবই প্রয়োজনীয়। আমি আরো যুক্তি দিয়েছি যে বাজার ব্যবস্থায় অটোমেশনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বিনিয়োগ করার, এর বিনিময়ে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা উন্নত করার ফলে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সুবিধা তৈরি হবে। এমন পরিস্থিতিতে উদ্ভাবননীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই বাজার ব্যবস্থার মৌলবাদ থেকে দূরে সরে আসতে হবে। সেই সঙ্গে আবারো ভালো বিকল্প কাঠামো ডিজাইন করার জন্য আরো অনেক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

সবশেষে বাজারের মৌলবাদ ত্যাগ করার অর্থ হলো, আমাদের নিয়ন্ত্রক শাসনের কিছু মূল স্তম্ভের ব্যাপারে পুনর্বিবেচনা করা। অর্থনীতিতে পরিচিত পদ্ধতি হলো, ফলাফলের মধ্যে খুব বেশি দারিদ্র্য বা বৈষম্য রয়েছে কিনা তা বিবেচনার জন্য পদক্ষেপ নেয়ার আগে বাজার ব্যবস্থার প্রক্রিয়াগুলো উন্মোচনের অনুমতি দেয়া হয়। পুনর্বণ্টনের স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে রাজস্ব সরঞ্জামাদি সরাসরি স্থানান্তর এবং যেসব সেফটি-নেট প্রোগ্রামগুলো রয়েছে তা-ই এটাকে যথেষ্ট বলে বিবেচিত করে। কিন্তু এ অনুমানপূর্বক ধারণাকে প্রশ্ন করার প্রয়োজন রয়েছে।

একটি নতুন নিয়ন্ত্রণ কাঠামো অবশ্যই বাজারের প্রক্রিয়ার সঙ্গে থাকা পদ্ধতিগত বিকৃতিকে চিনতে পারবে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রচলিত একাডেমিক শিক্ষার বিপরীতে সুইডেনের মতো অতি সমমাত্রিক দেশগুলো কেবল কর-স্থানান্তর স্কিমের মাধ্যমে আরো ন্যায়সংগত ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। এটা কম গুরুত্বপূর্ণ নয় যে এসব দেশের করপূর্ব আয় বিতরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি সমতাভিত্তিক। এটি সুইডিশ কর্মীদের মধ্যে দক্ষতার আরো সমান বণ্টনকে প্রতিফলন করে দেখায়, মজুরি নিয়ে আলোচনা এবং বৃহত্তর প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো থাকার কারণে কর্মীরা যাতে অর্থনৈতিক ফলের ন্যায্য অংশ পান তা নিশ্চিত করে। 

আমরা এমন এক উত্তাল সমুদ্রে প্রবেশ করেছি যেখানে কীভাবে শান্ত জলে পৌঁছানো যায় তার কোনো স্পষ্ট মানচিত্র আমাদের হাতে নেই। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে নতুন সমাজবিজ্ঞানের গবেষণা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্ভাবন থেকে আমরা অনেক কিছুই শিখতে পারি; যা আমাদের পথ চলতে সহায়তা করবে। (সংক্ষেপে ভাষান্তর)

[স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট]

ড্যারন অ্যাসেমোগলু: যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক; হোয়াই নেশনস ফেইল বইয়ের সহলেখক (জেমস এ রবিনসন);  প্রকাশিতব্য পাওয়ার অ্যান্ড প্রগ্রেস: আওয়ার থাউজ্যান্ড ইয়ার ওভার টেকনোলজি অ্যান্ড প্রসপারিটি বইয়ের সহলেখক (সিমন জনসন)

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন