অভিমত

মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে মূল্যবৃদ্ধি ও ফায়দা হাসিলের উছিলা বানাবেন না

আবু তাহের খান

ছবি : বণিক বার্তা

ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি সামরিক গোষ্ঠী হামাসের সাম্প্রতিক সংঘাত শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যেমনটি ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ১৯৪৮ সাল থেকে গত সাড়ে সাত দশকের মধ্যে আরো বহুবার ঘটেছে। অথচ সে সংঘাত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশের সরকারদলীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা সমস্বরে বলতে শুরু করেন যে, এর প্রভাবে বাংলাদেশের বাজারে পণ্যমূল্য বাড়বে, যেন বাংলাদেশে পণ্যের মূল্য বাড়ানোর জন্যই হামাসের এ আক্রমণ। ওই সংঘাতের ধারাবাহিকতায় ডিসেম্বরের (২০২৩) শেষ দিক থেকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ভূমধ্য সাগর দিয়ে যাতায়াতকারী জাহাজের ওপর বিচ্ছিন্ন হামলা শুরু করলে ওইসব জাহাজকে পথ পরিবর্তন করে উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে যাতায়াত শুরু করতে হয়। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই ওইসব জাহাজকে তিন-চার সপ্তাহের বাড়তি পথ পাড়ি দেয়ার মুখে পড়ে বাড়তি ব্যয়ের আশঙ্কার মুখেও পড়তে হয়। কিন্তু চরম দুর্ভাগ্য ও হতাশার বিষয় এই যে, উল্লিখিত আশঙ্কাজনক ঘটনাটি সম্পন্ন হওয়ার আগেই বাংলাদেশের সেই একই পক্ষ পণ্যমূল্য বাড়ানোর বিষয়ে আবারো সেই একই ধারার হইচই শুরু করে দেন। অথচ তথ্য বিশ্লেষণ করে তখনই প্রমাণ করে দেখানো হয় যে, উত্তমাশা অন্তরীপ ঘুরে চলাচলকারী ওই জাহাজগুলো বাংলাদেশমুখী এমন কেনো পণ্য পরিবহন করছে না, যেগুলোর কারণে বাংলাদেশের বাজারে পণ্যমূল্য বেড়ে যেতে পারে। 

এদিকে ইসরায়েল কর্তৃক ইরানের দামেস্ক কনস্যুলেটে আক্রমণের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইরান কর্তৃক গত ১ এপ্রিল ইসরায়েলে ড্রোন ও মিসাইল হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্বব্যাপী কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও এরই মধ্যে তা প্রায় পুরোপুরিই স্তিমিত হয়ে এসেছে। বিশ্বের মনোযোগ এখন বরং ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যে শিক্ষার্থী বিক্ষোভ গড়ে উঠেছে, সেদিকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন পর্যায় এবং ব্যবসায়ীদের করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে খুচরা দোকানদার পর্যন্ত প্রায় সবাই দেশের অর্থনৈতিক সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির পেছনে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে দায় দিতে শুরু করেছেন। সত্যি এ এক অদ্ভুত দেশ! নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সরকারগুলো এখানে যেমন নানা অযৌক্তিক উসিলা ব্যবহার করে, ব্যবসায়ীরাও তেমনি এসব ঘটনার সঙ্গে রঙ লাগিয়ে সেসব থেকে অন্যায় ফায়দা হাসিল ও একচেটিয়া মুনাফা অর্জনের আশায় ওত পেতে বসে থাকে। আর উল্লিখিত ফায়দা হাসিলের জন্য সাম্প্রতিক সময়ের কভিড-১৯, ইউক্রেন যুদ্ধ ও সর্বশেষ ইসরায়েলি গণহত্যা উল্লিখিত উভয় পক্ষের জন্য বলতে গেলে অনেকটা আশীর্বাদ হয়েই আবির্ভূত হয়েছে। কিন্তু এগুলো তো জনগণের ওপর জুলুম ও অত্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যে সংঘাত, বস্তুত যা ফিলিস্তিনিদের ওপর পরিচালিত ইসরায়েলি গণহত্যা, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আনীত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব এরই মধ্যে হামাস মেনে নিয়েছে, যদিও ইসরায়েল বলেছে এটি তাদের মনঃপুত হয়নি। এ অবস্থায় ওই সংঘাত পুরোপুরি বন্ধ না হলেও তার গতি আপাতত কিছুটা হলেও স্তিমিত হয়ে আসবে বলে ধারণা করা চলে। আর এটা তো মধ্যপ্রাচ্যের অতি পুরনো বাস্তবতা যে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার সংঘাত গত সাড়ে সাত দশকের মধ্যে কখনই পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। এর অর্থ হচ্ছে, এটি এমন এক সংঘাত যা বিশ্বরাজনীতির, বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্বের কূটচালের কারণে সহসা বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় ইসরায়েল-ফিলিস্তিনকেন্দ্রিক মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি আগামী আরো কিছু বছর সেই পুরনো ধারাতেই অমীমাংসিত অবস্থায় চলতে থাকবে বলে ধারণা করা চলে। ফলে এ ঘটনার বড় ধরনের কোনো নেতিবাচক প্রভাব আপাতত বিশ্ব অর্থনীতির ওপর পড়তে পারে বলে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের কোনো অর্থনীতিবিদ পূর্বাভাস দিয়েছেন বলে এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি।

যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আকস্মিক দুর্ঘটনা কিংবা সামাজিক, রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটকে পুঁজি করে তা থেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা বাংলাদেশ-সংস্কৃতির খুবই পুরনো বৈশিষ্ট্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সরকার মিত্রবাহিনীর সদস্যদের জন্য বাড়তি খাদ্যনিরাপত্তার উদ্যোগ নিলে ব্যবসায়ীরা সেটিকেই উসিলা হিসেবে ব্যবহার করে দেশে যে কৃত্রিম খাদ্যসংকট সৃষ্টি করেছিল, তারই পরিণতি ১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষ। ২০২১ সালে করোনা মহামারীকে উছিলা করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে স্বজন ও স্বগোত্রীয়দের মধ্যে অবাধে প্রণোদনা তহবিল বণ্টন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক থেকে অবাধে ঋণ বিতরণ ও বিতরণকৃত ঋণের সুদ মওকুফকরণ, বিনা দরপত্রে টিকাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যসামগ্রী ক্রয় ইত্যাদির মতো কাজগুলোও ছিল তেমনি ধাঁচের ফায়দা লোটা। আর এ কাজগুলো ক্ষমতাসীন রাজনীতিক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আমলা এবং এ উভয়ের সঙ্গে নিবিড় বন্ধনে সম্পর্কিত উদ্যোক্তারা একত্রে মিলে এতটাই যত্ন ও উৎসাহের সঙ্গে করেছেন যে, বাংলাদেশের গত ৫২ বছরের রাষ্ট্রীয় সম্পদ ভাগাভাগির ইতিহাসে এরূপ দৃষ্টান্ত দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া ভার। আর এ ভাগাভাগিরই প্রাকারান্তরিক ফলাফল হচ্ছে, দেশের মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের দ্বারা রাষ্ট্রের ৪১ শতাংশ আয় কুক্ষিগত হয়ে যাওয়া (খানা ও আয় জরিপ ২০২২, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো)।

কোনোই সন্দেহ নেই যে, করোনা সে সময় পৃথিবীর সব দেশেই সব স্তর ও শ্রেণীর এবং সব পেশা ও বৃত্তির মানুষের কাছে মৃত্যুময় এক আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছিল। কিন্তু এ আতঙ্কের বিপরীতে নিষ্ঠুর এক পৈশাচিক সত্য হয়ে দেখা দিয়েছিল এ ঘটনাও যে, করোনাকে ঘিরে সৃষ্ট উল্লিখিত ত্রিপক্ষীয় আঁতাতে মশগুল রাজনীতিক, আমলা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যকার অধিকাংশের লোভাতুর পিশাচ মন ভেতরে ভেতরে করোনার দীর্ঘস্থায়িত্বই কামনা করেছে; কিংবা তা চলে যাওয়ার পরও আবার সেটি কবে আসবে, সে অপেক্ষায় থেকেছে। কারণ করোনার মতো মহামারী বারবার এলে তাতে তাদের মুনাফা ও উপার্জন শুধু বাড়েই না, সেটি বহুলাংশে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরবচ্ছিন্নও হয়ে ওঠে। আর তাদের কি পরম সৌভাগ্য, করোনা বহুলাংশে চলে গেলেও তাদের সে লোভ ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে শিগগিরই আশীর্বাদ হিসেবে আবির্ভূত হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে করোনাকে উছিলা হিসেবে ব্যবহার করে শুরু হওয়া লোভযাত্রা ও লুটবৃত্তি শিগগিরই নতুন মাত্রা পায় এবং সরকার ও ব্যবসায়ী উভয়েই এ দুই ঘটনাকে যুক্তিহীন মুনাফা ও আঁতাতভিত্তিক বাটোয়ারার পক্ষে সাফাই হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে যায়। অর্থাৎ মূল ঘটনা আড়াল করে সব দায় তারা চাপানোর চেষ্টা করে করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের ওপর।

উপরোক্ত অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে এখন এ আশঙ্কা পোষণ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, সাম্প্রতিক ইসরায়েল-হামাস-ইরান সংঘাতের ঘটনায় সরকারের প্রভাবশালীরা ও ব্যবসায়ীরা উভয় পক্ষই হয়তো আরো এক দফা মুনাফা ও অন্যান্য সুবিধা লোটার চেষ্টা করবে। বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর অর্থনীতিতে এর তেমন কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ার আগেই মাত্র ১৬ দিনের মাথায় সরকার ওই বছরের ২৫ মার্চ ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল গঠনের ঘোষণা দেয়, যা ক্রমান্বয়ে দফায় দফায় বাড়তে থাকে। আর এটা এখন কাগজপত্রের প্রমাণিত তথ্য যে, ওই তহবিলের সিংহভাগই শেষ পর্যন্ত নানা কায়দায় ভুল তথ্য ও অসত্য দাবি উত্থাপনের মাধ্যমে তছরুপ হয়ে গিয়েছিল। আর সে পরিপ্রেক্ষিতে এ সমালোচনা ব্যাপকভাবেই চালু আছে যে, করোনাকে উপলক্ষ করে বিশেষ ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে সুবিধাদানের জন্যই এরূপ উদারহস্তে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল গঠন করা হয়েছিল; এবং এসবের মূল রূপকার ছিলেন সরকারের ভেতরকার প্রভাবশালী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী, যাদের অধিকাংশই ছিলেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য। একইভাবে ইউক্রেন যুদ্ধের নাম করে লাগামহীন ধারায় পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, কোটি কোটি টাকার কর ও শুল্ক অব্যাহতি গ্রহণ ইত্যাদিও ঘটেছিল অত্যন্ত ক্ষিপ্র গতিতে, সেসবের পেছনেও কলকাঠি নেড়েছিলেন সেই একই সুবিধাবাদী শ্রেণী যাদের সংখ্যা ও প্রভাব জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিপরিষদ উভয় স্থানেই আগের চেয়ে আরো বেড়েছে।

এমনি পরিস্থিতিতে খুব স্বাভাবিকভাবেই আশঙ্কা জন্মে যে, ইসরায়েল-হামাস সংঘাত উপলক্ষ করে এবারো হয়তো করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতোই ফায়দা লোটার চেষ্টা আবার নতুন করে শুরু হবে, যার ইঙ্গিত জাতীয় সংসদের সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনের আলোচনাতেও মিলেছে। আর নতুন সে চেষ্টার আওতায় এটাও হয়তো দেখা যাবে যে, রংপুরের গ্রামে ১ টাকা কেজি দরে বিক্রীত বেগুনের দাম মধ্যপ্রাচ্য সংঘাতের অজুহাত দিয়ে ঢাকার বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। শেষ পর্যন্ত বস্তুতই এমনটি ঘটবে কিনা তা দেখার জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে হয় না। এরই মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের সভায় ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে খাতওয়ারি সতর্কতামূলক প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে, যেমনটি করোনার ক্ষয়ক্ষতি শুরু হওয়ার আগেও ২০২০ সালের ২৫ মার্চ অত্যন্ত ক্ষিপ্র গতিতে ঘোষণা করা হয়েছিল ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ। আগের অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে ধারণা করা চলে যে, মন্ত্রপরিষদ সভার উল্লিখিত নির্দেশনা অনুসরণ করে শিগগিরই হয়তো খাতওয়ারি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে, যার মাধ্যমে উদ্যোক্তা এবং সংশ্লিষ্ট রাজনীতিক ও আমলাদের লাভবান হওয়ার প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হবে।

উল্লিখিত পরিস্থিতিতে আবেগহীন নির্মোহ দৃষ্টিকোণ এবং কোনো ধরনের হীন উদ্দেশ্যমুক্ত বিবেচনা থেকে দেখতে গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে এ মুহূর্তে অতটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আর তাই এ বিষয়ে গত ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে কিংবা ৮ মের সংসদ অধিবেশনের আলোচনায় যতটা উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বা সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয়গুলোকে যেভাবে সতর্ক করা হয়েছে, তা খানিকটা অতিক্ষিপ্র প্রতিক্রিয়া হয়ে গেল কিনা তা ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করি। কারণ এ ধরনের অতিপ্রতিক্রিয়ার সুযোগ নিয়ে সুবিধাদি গোষ্ঠী এ থেকে ব্যাপক মাত্রার ফায়দা লোটার চেষ্টা করতে পারে, যেমনটি করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের উছিলায় সাম্প্রতিক বছরগুলোয় করতে দেখা গেছে। কিন্তু সে সময় এসব করেও অর্থনীতিকে মোটামুটিভাবে সামাল দেয়া গেছে এ কারণে যে, ২০১৯-২০ সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানের তুলনায় অনেকখানি শক্ত অবস্থানে ছিল। কিন্তু অর্থনীতির বর্তমান নাজুক অবস্থায় আগের মতো করে সেটি সামাল দেয়া মোটেও সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

অতএব সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে অনুরোধ, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-ইরানকেন্দ্রিক মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে কোনোভাবেই রাজনৈতিক বা অন্য কোনো ধরনের ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং পীর-দরবেশের মতো ভালো মানুষের ছদ্মবেশধারী চালাক-চতুর ধূর্ত-লোভী ব্যবসায়ী ও অন্যান্য লুটেরা যাতে এ থেকে কোনো ফায়দা লুটতে না পারে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখুন। নইলে এ উছিলায় দেশে দ্রব্যমূল্য আরো একদফা বাড়বে, রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে অহেতুক প্রণোদনা গ্রহণের প্রয়াস মোচ্ছবে পরিণত হবে, ব্যাংক থেকে অর্থ লুট নতুন মাত্রা পাবে, বিদেশে অর্থ পাচার আরো বাড়বে এবং সর্বোপরি দেশের অর্থনীতি নতুন করে বাড়তি ঝুঁকিতে পড়বে। এ অবস্থায় স্বার্থান্বেষী মহল যাতে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে উছিলা হিসেবে ব্যবহার করে কোনো অন্যায় ও অনৈতিক ফায়দা লুটতে না পারে, রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা সে ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক হবেন বলেই আশা রাখি।

আবু তাহের খান: সাবেক পরিচালক 

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)

শিল্প মন্ত্রণালয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন