মুদ্রানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজস্বনীতি করা হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, কৃষিতে সার ও সেচ ব্যবস্থায় প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে। এবারের বাজেটে মুদ্রানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজস্বনীতি নেয়া হবে। নির্বাচনী ইশতেহারকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানকে শেয়ার বাজারে নিয়ে আসা হচ্ছে। অগ্রিম কর বিষয়েও আমরা বিবেচনা করব। ক্যাশলেস বাংলাদেশের দিকে আমরা এগোচ্ছি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ‘কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এনটিভি ও এফবিসিসিআইর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম।

ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, কর ছাড় থেকে আমাদের এখন সরে আসার সময় চলে এসেছে। করদাতাদের জন্য ডিজিটালাইজেশন আরো উন্নয়ন করা হচ্ছে। ইনভয়েস চাওয়া সচেতন জনগণ দরকার। শুন্য রিটার্ন দাখিলও আশঙ্কাজনক। আমাদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কর দিতে হবে।

প্যানেল অতিথি প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষমতা দরকার। আইএমএফের শর্তগুলো দুই রকম। টার্গেট ও পলিসি। আমরা পলিসিগুলো গ্রহণ করতে পারি। প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা শিল্পকে সহায়তা দেয়া যেতে পারে। উৎপাদনশীলতা ও সক্ষমতা বাড়াতে না পারলে সহায়তা দেয়া থেকে সরে আসতে হবে।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এবারের বাজেট জটিল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্য দিয়ে ঘোষণা হবে। অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে জটিল বাজেট। গত বাজেটে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো যায়নি। শুধু করোনাকে দায়ী করা যাবে না। প্রবৃদ্ধিতে মন্দা ছিল। কর রেয়াত তুলে নেয়ার বিষয়ে কোনো স্বচ্ছতা এখনো নেই। উন্নয়ন বাজেট চাইলে সংস্কার করতে হবে। ব্যাংকিং ও জ্বালানি খাতে সংস্কার করুন। সুরক্ষার বাজেট হতে হবে। গতানুগতিক যেন না হয়। অনেক আশার বাণী আমরা শুনেছি। কোনোটির বাস্তবায়ন হয়নি। খাতভিত্তিক বৈষম্য বাড়ছে। ভোক্তাদের সুরক্ষা বাড়লে ব্যবসায়ীদের আয় বাড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মূল চ্যালেঞ্জ মানুষের জীবিকা নিশ্চিতের বিষয় আড়ালে চলে যাচ্ছে। শিল্পায়ন বাড়াতে হবে। পলিসি হতে হবে জনবান্ধব ও শিল্পবান্ধব। বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সরে আসতে হবে। এটি না করলে ব্যবসায়ীরা আস্থা রাখতে পারবেন না। শুধু রোড শো দিয়ে পুঁজিবাজারে পুঁজি পাওয়া যাবে না। পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাস দরকার। বাজেটে উন্নয়ন বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। সব কিছু ঢাকাকেন্দ্রিক করা যাবে না। এনবিআরের কর্মকর্তাদের ক্ষমতায় ভারসাম্য নিয়ে আসতে হবে। করদাতাদের সঙ্গে যেন কর কর্মকর্তাদের দেখা না হয়।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার বলেন, উন্নয়ন বাজেট হতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না।

বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, জুলুম, নির্যাতন ও হয়রানিমুক্ত এনবিআর চাই। তারা জোর করে কর আদায় করে নেয়। এআইটি সমন্বয় করা হোক নয়তো বন্ধ করা হোক। আইএমএফের জনস্বার্থ বিরোধী শর্ত নেয়া যাবে না।

অনুষ্ঠানে শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, চেম্বার নেতা এবং ব্যাংকারসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধি এবং চট্টগ্রাম ও রংপুর থেকে অতিথিরা যুক্ত হন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন