কাতার বিশ্বকাপের জায়ান্ট কিলার জাপানের সামনে আজ আরেকটি বড় দলকে ধরাশায়ী করার মিশন। আল ওয়াকরার আল জানুব স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোতে গতবারের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে জাপান। দুটি বড় দলকে হারানো জাপানিরা কি কাতারের সবুজ গালিচায় রূপকথা লিখেই চলবে, নাকি তাদের থামিয়ে দেবে ক্রোয়াটরা, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে আজ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়।
হাজিমে মরিয়াসুর দল জার্মানি ও স্পেনের মতো পরাশক্তিকে হারিয়ে ‘ই’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উঠেছে নকআউটে। অন্যদিকে, ‘এফ’ গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে নকআউটে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া। এমনকি লুকা মডরিচরা আফ্রিকান দল মরক্কোরও পেছনে ছিল।
গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে আলোচিত দল জাপান। যে দলটি একই আসরে ২০১০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নকে হারাতে পারে তারা যোগ্য দল হিসেবেই নকআউট পর্বের টিকিট পেয়েছে। বিশ্বকাপে এটা জাপানের সপ্তম আসর এবং তিনবার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে তারা, এ নিয়ে চতুর্থবার শেষ ষোলোয় ব্লু সামুরাইরা। গতবার শেষ ষোলোয় বেলজিয়ামের কাছে ২-৩ গোলে হেরেছে সূর্যোদয়ের দেশটি।
জার্মানি ও স্পেনের বিপক্ষে পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিলে জাপানকে নিয়ে বাজি ধরাই যায়। যদিও কোস্টারিকার বিপক্ষে তাদের পারফরম্যান্স দুশ্চিন্তারও উদ্রেক করবে। এর পরও তারা অল-এশিয়ান কোয়ার্টার ফাইনালের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। যদিও এজন্য তাদের প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়াকে রীতিমতো পাহাড় ডিঙাতে হবে, জিততে হবে ফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিলের বিপক্ষে। আজ জাপান-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের পর মুখোমুখি হবে দক্ষিণ কোরিয়া ও ব্রাজিল।
কাতারে একের পর এক চমক দেখানো জাপান বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন দেখছে। যদিও শেষ মুহূর্তে গোল করে প্রতিপক্ষকে এলোমেলো করে দেয়া ছাড়া বাকিটা তাদের বিপক্ষেই কথা বলবে। এ বিশ্বকাপে মাত্র ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ বল দখলে রাখতে পেরেছে ব্লু সামুরাইরা। এর পরও আজ ইতিহাস হতেই পারে, যদি কিনা মরিয়াসুর ‘সুপার সাব’ তাদের বিস্ময়যাত্রা অব্যাহত রাখতে পারে।
মরক্কোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করা ক্রোয়াটরা পরের ম্যাচে কানাডাকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে। শেষ ম্যাচে তারা আবার গোলশূন্য ড্র করে বেলজিয়ামের সঙ্গে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে নকআউটের টিকিট পায় জ্লাতকো দালিচের দল। যদিও গ্রুপে মরক্কোর পেছনে থাকা লুকা মডরিচের দলের জন্য বড্ড বেমানানই।
এর মধ্যেও ইতিবাচক হলো ক্রোয়াটদের ডিফেন্স। টুর্নামেন্টে তিন ম্যাচ খেলে তারা মাত্র একটি গোল হজম করেছে, বিপরীতে প্রতিপক্ষকে দিয়েছে চারটি। ৯ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়ে শেষ ষোলোয় নামছে ইউরোপিয়ান দলটি। এর পরও ‘কাউন্টার-অ্যাটাক মেশিন’ খ্যাতি পাওয়া জাপানের সামনে ক্রোয়াটদের এসব রেকর্ড পাত্তা নাও পেতে পারে। জার্মানি ও স্পেনকে গুঁড়িয়ে তারা সেটি প্রমাণও করেছে।
আজ চতুর্থবারের মতো মোকাবেলা হবে জাপান ও ক্রোয়েশিয়ার। ২৫ বছর আগে প্রথম দেখায় জাপানের কাছে ৩-৪ গোলে হেরে যায় ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে ব্লু সামুরাইদের হারায় ক্রোয়াটরা, ২০০৬ আসরে হয় গোলশূন্য ড্র। আজ কাতারেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলছে।
