ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে দরপতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের আসন্ন সভায় মন্দার পূর্বাভাস আসতে পারে এমন শঙ্কার কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে। এদিকে গত শুক্রবার এশিয়ার পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গিয়েছে।

ইউরোপের অন্যতম পুঁজিবাজার যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক গত শুক্রবার ৫২ পয়েন্ট কমেছে। পাশাপাশি জার্মানির ব্লুচিপ সূচক ডিএএক্স ৩০০ পয়েন্ট এবং ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক কমেছে ১০৭ পয়েন্ট। এছাড়া ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, গ্রিস, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, হাঙ্গেরি, স্পেন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া সুইডেনের পুঁজিবাজারও সময়ে নিম্নমুখী ছিল।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক হাজার পয়েন্ট হারিয়েছে। একই সময়ে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১৪১ পয়েন্ট নাসডাক সূচক ৪৯৮ পয়েন্ট কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি অঞ্চলের আর্জেন্টিনা, পেরু, কানাডা, ব্রাজিল, মেক্সিকো, চিলি কলম্বিয়ার পুঁজিবাজারের সূচক কমেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদের হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। বছরের অক্টোবরে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ১৩ শতাংশে দাঁড়াবে বলে প্রক্ষেপণ করা হচ্ছে। ফলে চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদি মন্দার মধ্যে পড়তে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে। সামনে ফেডারেল রিজার্ভের সভায় যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। এতে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটিতেও মন্দা আসন্ন বলে মনে করা হচ্ছে। বৈশ্বিক আর্থিক খাতের গুরুত্বপূর্ণ দুই কেন্দ্র যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার শঙ্কা বিশ্বজুড়েই বিনিয়োগকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ তৈরি করেছে। যার প্রভাবে দুই অঞ্চলের পুঁজিবাজার পয়েন্ট হারিয়েছে।

ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে দরপতন হলেও বিপরীত চিত্র দেখা গিয়েছে এশিয়ার বাজারে। অঞ্চলের অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক গত শুক্রবার ১৬২ পয়েন্ট বেড়েছে। সময়ে ভারতের বিএসই সেনসেক্স সূচকেও ৫৯ পয়েন্ট যোগ হয়েছে। ভিয়েতনামের হ্যাং সেং সূচক বেড়েছে ২০২ পয়েন্ট। অবশ্য সময়ে চীনের সাংহাই সূচক ১০ পয়েন্ট হারিয়েছে। এছাড়া হংকং, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনস মালয়েশিয়ার পুঁজিবাজারে পয়েন্ট যোগ হয়েছে। অন্যদিকে এশিয়া অঞ্চলের পাকিস্তান, শ্রীলংকা নিউজিল্যান্ডের পুঁজিবাজারে সূচক কমেছে।

গত শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্যের পুঁজিবাজারে নিম্নমুখিতা দেখা গিয়েছে। সময় সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, জর্ডান কুয়েতের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচকগুলো ইতিবাচক ছিল। তবে সময়ে বাহরাইন, লেবানন, ওমান মরক্কোর পুঁজিবাজার পয়েন্ট হারিয়েছে।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজার: গত সপ্তাহে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব সূচকেই পয়েন্ট যোগ হয়েছে। ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ১১৩ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে। ডিএসইর অন্য সূচকের মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ৪৭ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা দশমিক ১৩ শতাংশ শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ২৪ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন