আলোকপাত

পদ্মা সেতু: টেকসই অগ্রযাত্রার চাবিকাঠি

ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন

জন্ম পথপরিক্রমা

পদ্মা বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় বহুলভাবে ব্যবহূত নদী। পদ্মা নামটি এসেছে লোটাস ফুল থেকে। পদ্মার জন্মস্থান হিমালয়ের পাদদেশে গঙ্গোত্রী হিমপ্রবাহ (গ্ল্যাসিয়ার) গঙ্গা নামে মুর্শিদাবাদে এসে ভাগীরথী নামের ধারায় ভারতেই প্রবাহিত হয়। অন্য ধারাটি পদ্মা নাম ধারণ করে মূলত পশ্চিমের রামপুর-বোয়ালিয়ায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে পুঠিয়া-নাটোর-জাফরগঞ্জ গোয়ালন্দের অন্য পাশে প্রবাহিত হতে থাকে। যমুনা নদীকে ধারণ করে পদ্মা নামেই চাঁদপুরে প্রবেশ করে। এরপর মেঘনার সঙ্গে বিলীন হয়ে বঙ্গোপসাগরে নেমে যায়। চাঁদপুরে পদ্মার লাল ডোরা রুপালি ইলিশ স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়, যেমনটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়েরপদ্মা নদীর মাঝি

অষ্টাদশ শতাব্দীর ভূগোলবিদ জেমস রেনেল অন্যান্য বিশেষজ্ঞের মতে, পদ্মা খুবই প্রশস্ত বিশাল। খরস্রোতা পদ্মাকে কেবল অ্যামাজন নদীর তীব্র স্রোতের সঙ্গেই তুলনা করা চলে। নদীটি প্রায়ই গতি পরিবর্তন করে। ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা নদী থেকে বর্ষাকালে ভরা মৌসুমে প্রতি সেকেন্ডে লাখ ৫০ হাজার ঘনমিটার তথা ২৬ লাখ ঘনফুট পানি প্রবাহিত হয়।

পদ্মার ওপরে সেতু

দখলদার ইংরেজদের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের আমলে এবং তারই নামে ১৯১২ সালে পাবনার ঈশ্বরদী কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা-পাকশীকে সংযুক্ত লর্ড হার্ডিঞ্জ রেল সেতু নির্মাণ করা হয়। দশমিক কিলোমিটারের (. মাইল) গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি ১১০ বছর ধরে আর্থসামাজিকভাবে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে।

১৯৯৮ সালে মাওয়া-ভাঙ্গা রুটে একটি পদ্মা সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ পদ্মার ওপরে একটি বহুমুখী সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়। নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০১২ সালে কয়েকটি সম্ভাব্য রুটে প্রাথমিক নিরীক্ষা শেষে মাওয়া-জাজিরা রুটে বিদেশী অর্থঋণে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ৪১টি স্প্যানের সংযুক্তিতে দশমিক ১৫ কিলোমিটার লম্বা এবং ২২ দশমিক মিটার প্রশস্ত সেতুটির বিস্তারিত নির্মাণ কৌশল নির্ধারণকালেই বিশ্বব্যাংক কথিত বায়বীয় দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করে। নোবেলজয়ী প্রফেসর . মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে অভিযোগ উত্থাপন করে থাকতে পারেন বলে খুব ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়। বিশ্বব্যাংক সহযোগী উন্নয়ন পার্টনাররা অর্থঋণটি (৩০০ কোটি ডলার) বাতিল করে। ব্যাপারটি কানাডার আদালতে গড়ায়। এদিকে ২০১২ সালেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ সন্তান প্রধানমন্ত্রী জনবন্ধু শেখ হাসিনা পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের সংকল্পে অটুট থাকেন। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবেসরকারপ্রধানের ঘোষণা জাতীয় একটি একত্রীকরণ পয়েন্ট হিসেবে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার জন্ম দেয়। দেশের দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার পিছিয়ে পড়া অর্থনীতিতে নবোদ্যম শক্তিসঞ্চার লাভ করে। এদিকে কানাডার আদালত পদ্মা সেতুর অর্থায়নে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি বলে মামলাটি খারিজ করে দেয়।

এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প এবং এর অন্তর্নিহিত জনকল্যাণে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করার মনস্তাপে ভুগতে থাকে। বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট এবং এর প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু নিজেরা এবং তাদের এদেশীয় সখাদের মধ্যস্থ ধরে পদ্মা বহুমুখী সেতুতে পুনরায় অর্থঋণ প্রদানের প্রচেষ্টায় বারবার বিফল হন। এর মধ্যে পদ্মা সেতুর জন্য সময়োচিত দক্ষভাবে উভয় প্রান্তে জমি হুকুম দখল এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা সেতুমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। শেখ হাসিনা সরকারের সবচেয়ে প্রভাবশালী মন্ত্রী সরকারপ্রধানকে কুপরামর্শ দেন যেন তার অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা . একেএম মসিউর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়ে বিশ্বব্যাংককে সামাল দেয়া হয়।

২০১২ সালে বিশ্বব্যাংকের হঠকারী সিদ্ধান্তটি ঘোষিত হওয়ার পর দেশের অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ সুশীল সমাজের মানুষ নিজ অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করেন। এমনকি অনেকে একে হঠকারী সিদ্ধান্তও বলেছিলেন। আবুল বারকাত, আমিসহ গুটি কয়েকজন তখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের পক্ষে কথা বলেছিলাম। 

২০১২ সালের ২১ জুলাই বিডি নিউজে প্রকাশিত এক নিবন্ধে উল্লেখ করেছিলাম, ‘প্রথমে আমরা একটি অথরিটি করতে পারি। এর নাম হবেপ্রবাসী পদ্মা সেতু অথরিটি অথরিটিকে কার্যকর বিশ্বাসযোগ্য একটি স্বায়ত্তশাসন দেয়া যেতে পারে। এখানে আমরা দেশী-প্রবাসী সবার কাছ থেকেই ইকুইটি নেব। প্রবাসীরা ডলারে ইকুইটি কিনবে বলে বরং সুবিধা হবে। এজন্য নতুন কিছু আইন তৈরি করে নিতে হবে। সেসব তৈরি করতে বড়জোর দুই কি তিন মাস লাগে। রিটার্ন কীভাবে হবে সেটাও ঠিক করে নেব। দু-তিন বছরে নির্মাণ শেষ হলে পরে আমরা ১০ কি ১২ শতাংশ হারে রিটার্ন দিতে থাকব। এগুলো অথরিটির আইনের মধ্যেই ঠিক করে নেয়া হবে।

পদ্মা সেতুতে খরচ ধরা হয়েছে বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। আমি যেভাবে ভাবছি সেভাবে ইকুইটি হিসেবে প্রবাসীদের অর্থ নেয়া হলে অন্তত বিলিয়ন ডলার তুলে নেয়া কোনো ব্যাপার নয়। পাশাপাশি আরো বিলিয়ন ডলার আমরা রিজার্ভ থেকে নিতে পারি। আমাদের এখন রিজার্ভ আছে সাড়ে বিলিয়ন ডলার। বঙ্গবন্ধু সেতু তৈরির সময় আমাদের রিজার্ভ ছিল মাত্র বিলিয়ন ডলারের মতো। তখন রিজার্ভ থেকে খরচ করেও আমাদের অর্থনীতিতে কোনো সমস্যা হয়নি। প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন সবই ঠিক ছিল। বরং মুদ্রাস্ফীতি কম ছিল। এটা বানানোর পর অর্থনীতি গতিশীল হয়েছে। একইভাবে পদ্মা সেতু বানানোর জন্য আমরা বিলিয়ন ডলার যদি খরচ করি আর বিদ্যুৎ খাতে আরো কিছু খরচ করে উৎপাদন বাড়াই, তবে ক্যাপিটাল আউটপুট রেশিও দশমিক থেকে কমে দশমিক হবে। তখন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাবে শতাংশ, মানে দশমিক হয়ে যাবে।

দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর কথা হচ্ছে। যদি শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক টাকা দিতে রাজি হয় তাহলে আমরা ওই দ্বিতীয় সেতুটির জন্য প্রবাসীদের অর্থ সঞ্চালন করতে পারি। মোট কথা, আগামীতে অবকাঠামো নির্মাণে রেমিট্যান্স ব্যবহার করা হলে সেটা দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো। এখন প্রবাসীদের অর্থের বেশির ভাগই খরচ হচ্ছে ভোগে। আমরা যদি এভাবে ইকুইটির মাধ্যমে ওদের সেতুটির মালিকানা দিয়ে দিই, তবে এটা দারুণ একটা কাজ হবে। পাশাপাশি যদি সেতুর নাম দিইপ্রবাসী পদ্মা সেতু’, তাহলে তারা আরো খুশি হবেন। তারা বাইরে থেকে শ্রম-ঘামে উপার্জন করে দেশে টাকা পাঠান দেশের জন্য মায়া-মমতা আছে বলেই। কয়েক দিন আগেই নিউইয়র্কে একটা পুরস্কার নিতে গিয়ে দেখলাম তাদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ। উৎসাহ কাজে লাগানোর এটাই একমাত্র পদ্ধতি। তাদের টাকায় পদ্মা সেতু হোক। তাদের পরিশ্রমের টাকা শুধু ভোগে নয়, উৎপাদনের জন্য অবকাঠামো তৈরির কাজে লাগুক। আবার তারাও লাভবান হোন।

অধ্যাপক . আবুল বারকাত (সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি) ২০১২ সালের ১৯ জুলাই আয়োজিত একটি সেমিনারে পদ্মা বহুমুখী সেতু সম্পর্কে নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণের প্রস্তাব সমর্থন করেন। চারটি পদ্মা সেতু নির্মাণে বাংলাদেশ সক্ষম বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। সেমিনারের সভাপতি হিসেবে আমিও তাকে সমর্থন করে বলেছিলাম, সেতুটিকে প্রবাসী পদ্মা সেতু নামে অভিহিত করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বিনিয়োগযোগ্য ইকুইটি তহবিল সংগ্রহ করা যেতে পারে।

পদ্মা সেতুর আর্থসামাজিক-সাংস্কৃতিক তাত্পর্য

তীব্র খরস্রোতা পদ্মার ১১২ মিটার গভীরে খুঁটি পুঁতে নির্মিত পদ্মা সেতু এরই মধ্যে একটি স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিস্ময় বলে স্বীকৃত। মরহুম অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী সেতুটির ত্রুটিবিহীন নকশা ডিজাইন চীনা ফার্ম চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির নির্মাণ কুশলতা সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্রিজ অথরিটির পক্ষ থেকে আস্থা প্রকাশ করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার তদারকি কোম্পানিও ৩০ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পটিতে সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্বমানের কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করেছে। সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল তীব্র স্রোতে দু-দুবার খুঁটিগুলোর ভেসে যাওয়া। অবশেষে ঘন ইস্পাত পাইপের ভেতর মসলা মুড়ে নিয়ে খুঁটি মাটিতে গ্রোথিত করা সম্ভব হয়। সেতুটি অন্তত ১০০ বছর দীর্ঘস্থায়ী সেবা দিতে পারবে বলেই আট বছর সেতু বিভাগে সচিব হিসেবে কাজ করা বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম দৃঢ় আস্থা পোষণ করেন। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়ার ব্যবস্থাপকরা সুদক্ষভাবেই সেতু নির্মাণ করেছেন এবং এমনিভাবে দেখভালও করতে পারবেন। সেতুটির দুই ধারে সংযোগ সড়ক প্রায় ১২ কিলোমিটার লম্বাজাজিরা প্রান্তেই ১০ দশমিক কিলোমিটারের চেয়ে বেশি।

টেকসই অগ্রযাত্রার চাবিকাঠি

২৫ জুন, ২০২২ শনিবার বাংলাদেশের দিগন্তে পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার উদিত সুবর্ণরেখাটি দক্ষিণ দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় ২১টি জেলাকে কভিড-১৯-এর ক্ষয়ক্ষতি পেছনে ফেলে দ্রুতগতি উন্নয়নের বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এতে বছরে নিয়মিত গ্রস ন্যাশনাল প্রডাক্ট (জিএনআই) স্বাভাবিক বার্ষিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে দশমিক থেকে দশমিক শতাংশ যুক্ত করবে। শুরুতে বছরে দারিদ্র্য হ্রাস পাবে আনুমানিক শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। ঘটবে ব্যাপক শিল্পায়ন। পুনরুদ্ধার করা লবণাক্ত জমি হয়ে উঠবে উর্বর, ফলাবে অতিরিক্ত ফসল। মত্স্য শিল্পে হিমায়িত নয়, বরং কাটা-ধোলাই করা মাছ রান্না করে সুন্দর কৌটায় রফতানি করে আয় বাড়বে বহুগুণ। নবজীবন ফিরে পাবে চিরুনিসহ শাড়ির কাজ অন্যান্য হস্তশিল্প। কুটির, ক্ষুদ্র অতিক্ষুদ্র শিল্পকে একটি শক্তিমান ফোকাল সংস্থার অধীনে এনে উৎপাদন বৃদ্ধি, আয়-রোজগারে অগ্রগতি কর্মসংস্থানে ভরে উঠবে। কুয়াকাটায় আসবে নতুন প্রাণসঞ্চার; শুধু পর্যটনেই নয়, এর সঙ্গে সংযুক্ত শত কর্মকাণ্ডে সমৃদ্ধতর হবে নিঃস্ব, নিম্ন নিম্নমধ্যবিত্ত জনগণ। সেতুর ওপর চার লেনের রাস্তা আর নিচের রেল সংযোগ মেলে দেবে সুদূরপ্রসারী আর্থসামাজিক-সাংস্কৃতিক পুনরুত্থানের জোরালো তবে টেকসই হাওয়া। সেই সঙ্গে যদি জাতির পিতার ‘...আমি প্রতিটি গ্রামে বহুমুখী সমবায় গড়ে তুলব...’ প্রত্যয় অনুসরণ করে কৃষি, মত্স্য দুগ্ধ খাতে উৎপাদন বিপণন সমবায় সৃষ্টি করে হিমাগারে ধারণক্ষমতা ২০ লাখ টন থেকে অন্তত ৩০ লাখ টনে উন্নীত করা যায়, তবে আরেকটি কৃষি শিল্প বিপ্লব আনা সম্ভব হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে এভাবেই উৎপাদনশীল জীবনধারণে পাল্টে দিয়ে কল্যাণমুখী করা যাবে। তবে উৎপাদন বিপণন সমবায়গুলোকে তীব্র নজরদারিতে রেখে অত্যন্ত স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে হিমাগারে তাদের পণ্য সংরক্ষণে অগ্রাধিকার দিলে বছরব্যাপী পণ্যসম্ভার বাজারে আসবে। মূল্য থাকবে স্থিতিশীল। উৎপাদনকারী ন্যায্যমূল্য পাবেন। দ্রুতগামী যান রেলে পদ্মা সেতু দিয়ে পণ্যসামগ্রী কাঁচামাল ভোক্তা শিল্প-কারখানায় পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। ভোক্তারাও ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারবেন। সংশোধিত টোল ভাড়ায় ৩৫ বছরে পদ্মা সেতুর খরচ উঠে আসবে।

জীবন্ত গতিময় পদ্মা সেতু ২০৩০ সাল নাগাদ পাঁচ কোটি নতুন কর্মসংস্থান করে আয়-রোজগার বাড়াবে। দারিদ্র্য কমাবে এবং আয়, সম্পদ সুযোগ বৈষম্য ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনবে। গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদমুক্ত সোনার বাংলায় কল্যাণরাষ্ট্রে সর্বজনীন হাসিমাখা মুখের যে স্বপ্ন লালিত হয়েছে ৫১ বছর, স্বপ্নের পদ্মা সেতু তাতে পূর্ণতার বাস্তবতা এনে দেবে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের সমতাপ্রবণ সমৃদ্ধি চিরজয়ী হোক।

 

. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন: সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন