ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সরবরাহ

চীনের হুয়াওয়ে ও জিটিইকে নিষিদ্ধ করল কানাডা

বণিক বার্তা ডেস্ক

যারা চীনা নির্মাতাদের তৈরি সরঞ্জাম ফাইভজি নেটওয়ার্কে স্থাপন করেছে তাদের ২০২৪ সালের ২৮ জুনের মধ্যে তা সরিয়ে নিতে হবে ছবি: এপি

কানাডায় পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক ফাইভ-জি সেবা বিস্তারে চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ে জিটিইকে নিষিদ্ধ করেছে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সরকার। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে অভিযোগে চীনের দুটি বৃহত্তম টেলিকম সরঞ্জাম নির্মাতাকে নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির শিল্পমন্ত্রী ফ্রাসোঁয়া ফিলিপ্পে শ্যাম্পেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তিনি ঘোষণা দেন। খবর বিবিসি।

কানাডার শিল্পমন্ত্রী শ্যাম্পেন বলেন, কানাডার মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবার উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে সর্বশেষ পদক্ষেপটি। পাশাপাশি এটি কানাডিয়ানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে পর্যালোচনা এবং মিত্রদের পরামর্শে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

চীনের ফাইভজি নেটওয়ার্ক সামগ্রী আমদানি নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ পশ্চিমা মিত্রদের দলভুক্ত হলো কানাডা। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে হুয়াওয়ের যন্ত্রাংশ আমদানির বিষয়টি মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল অটোয়া। ঘনিষ্ঠ মিত্রের তুলনায় বেশ সময় নিয়ে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিল তারা।

ফাইভ আইজ হিসেবে পরিচিত পাঁচ দেশের জোটের মধ্যে কানাডা বাদে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড এরই মধ্যে হুয়াওয়ে জিটিইর যন্ত্রাংশ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য পারস্পরিক শেয়ারের জন্য ফাইভ আইজ জোটটিতে দীর্ঘদিন ধরেই চাপের মধ্যে ছিল কানাডা।

বিবৃতিতে কানাডা সরকার জানায়, কানাডার সরকার টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নেবে। ঘোষণা কার্যকর হলে দেশটির টেলিকম সংস্থাকে আর হুয়াওয়ে জিটিইর তৈরি সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া হবে না। এরই মধ্যে যারা চীনা নির্মাতাদের তৈরি সরঞ্জাম তাদের ফাইভজি নেটওয়ার্কে স্থাপন করেছে তাদের ২০২৪ সালের ২৮ জুনের মধ্যে তা সরিয়ে নিতে হবে। ফোরজি নেটওয়ার্ক সরিয়ে নেয়ার জন্য নির্ধারতি সময় ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর।

এরই মধ্যে কানাডার দুই বৃহত্তম টেলিকম প্রতিষ্ঠান বেল টেলুস ভিন্ন উৎস থেকে নেটওয়ার্ক সামগ্রী ক্রয় করছে। পরবর্তী প্রজন্মের ফাইভজি নেটওয়ার্ক স্থাপনে ২০২০ সাল থেকে এরিকসন নকিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছে। এনগ্যাজেটের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ থেকে ওই সময়ের মধ্যে কানাডার ওই টেলিকম জায়ান্ট দুটির কাছে ৭০ কোটি ডলারের যন্ত্রাংশ বিক্রি করেছিল হুয়াওয়ে।

জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে, এমন অভিযোগে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে চীনের দুটি বৃহত্তম টেলিকম সরঞ্জাম নির্মাতা সংস্থার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। কানাডা সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে হুয়াওয়ের মুখপাত্র আলিখান ভেলশি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, আমরা খুবই নাখোশ, তবে অবাক হইনি। কানাডা সরকার যে এত দীর্ঘ সময় নিল তা নিয়ে অবাক হচ্ছি। আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি এটা ছিল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। যুক্তরাষ্ট্রের চাপে পড়েই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে কানাডা।

অটোয়ায় চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, জাতীয় নিরাপত্তা ধোঁয়া তুলে কানাডার এমন পদক্ষেপ আসলে রাজনৈতিক কূটচালের অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে চীনা কোম্পানিগুলোকে কোণঠাসা করতে এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন