ড. নজরুল ইসলাম জাতিসংঘের উন্নয়ন গবেষণাপ্রধান। তিনি অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট এবং রাশিয়ার মস্কো রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়, কিয়ুশু বিশ্ববিদ্যালয় ও সেন্ট জোন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। ২০০৬ সালে জাতিসংঘে যোগ দেন। বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় তিনি সক্রিয়। এ লক্ষ্যে তিনি ১৯৯৮ সালে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক—বেন’ এবং ২০০০ সালে ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’ প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেন। উন্নয়ন, বৈষম্য, পরিবেশ সংরক্ষণ, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মানোন্নয়ন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সম্প্রতি তিনি কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা
৫০ বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে আপনি
কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
নিঃসন্দেহে
বাংলাদেশ
প্রভূত
অগ্রগতি
অর্জন
করেছে।
সবাই
জানি,
একাত্তরের
আগে
আমাদের
দেশ
বরাবরই
বৈদেশিক
শোষণ-শাসনের
মধ্যে
ছিল।
এখানে
যে
উদ্বৃত্ত
সৃষ্টি
হতো,
সেটি
কখনো
এ
দেশে
বিনিয়োজিত
হতে
পারেনি।
কাজেই
পুঁজিভবনের
প্রক্রিয়াটি
বাংলাদেশে
আগে
খুব
একটা
হয়নি।
সুতরাং
একাত্তর
সালে
স্বাধীনতা
লাভের
পর
একটা
নতুন
পরিস্থিতি
সৃষ্টি
হয়,
নতুন
একটা
সুযোগ
সৃষ্টি
হয়।
এ
কারণে
আমাদের
দেশে
পুঁজিভবনের
প্রক্রিয়াটি
অগ্রসর
হয়েছে।
সারা
দেশের
দিকে
তাকালেই
বিষয়টি
দেখা
যায়।
অবকাঠামোর
ক্ষেত্রেও
দেখা
যায়,
প্রাইভেট
হাউজিংয়ের
ক্ষেত্রেও
দেখা
যায়।
এখন
নির্মাণ
শিল্পের
বিপ্লব
চলছে।
এটা
পুঁজিভবনের
বহিঃপ্রকাশ।
এটা
সুনির্দিষ্ট
একটা
রূপ।
তার
সঙ্গে
মাথাপিছু
আয়
বৃদ্ধি,
দারিদ্র্য
হ্রাস,
বিভিন্ন
সামাজিক
ক্ষেত্রে
যেমন
শিক্ষা
ও
স্বাস্থ্যে
বাংলাদেশ
অগ্রগতি
অর্জন
করেছে।
এটা
স্বীকার
করি।
কিন্তু
ইংরেজিতে
একটা
কথা
আছে—‘তুমি
যা
অর্জন
করেছ
কিংবা
মেডেল
পেয়েছ,
সেটি
নিয়ে
বসে
থাকলে
চলবে
না।’
নতুন
সময়ের
জন্য
নতুন
সমস্যার
সৃষ্টি
হয়,
নতুন
চ্যালেঞ্জের
সৃষ্টি
হয়।
সেগুলো
কীভাবে
অতিক্রম
করা
যাবে,
সেদিকে
দৃষ্টি
দিতে
হবে।
এটা
নিরন্তর
একটা
প্রক্রিয়া।
ইতিহাস
এক
জায়গায়
স্থির
থাকে
না।
সেই
দৃষ্টিকোণ
থেকে
এখন
যা
প্রয়োজন
তা
হলো,
বর্তমানে
যেসব
চ্যালেঞ্জ
আবির্ভূত
হয়েছে,
সেগুলো
সঠিকভাবে
নির্ণয়
ও
বিশ্লেষণ
করা
এবং
এগুলো
কীভাবে
সমাধান
করা
যাবে
এবং
কী
ধারায়
এগিয়ে
যেতে
হবে
তা
ঠিক
করা।
এটিই
মনে
হয়
এখানকার
বড়
চ্যালেঞ্জ।
বর্তমানের একটি
চ্যালেঞ্জ
হলো
বৈষম্য।
অষ্টম
পঞ্চবার্ষিক
পরিকল্পনায়
সরকারের
পক্ষ
থেকে
বৈষম্যের
বিষয়টি
স্বীকার
করা
হয়েছে।
বৈষম্য
যে
একটা
বিরাট
চ্যালেঞ্জ
এবং
সেটিকে
মোকাবেলা
করতে
হবে,
এর
স্বীকৃতিও
সেখানে
আছে।
উন্নয়ন
হয়েছে,
পাশাপাশি
বৈষম্যও
বেড়েছে।
তার
প্রমাণ
হিসেবে
আমরা
দেখি
আয়
বিতরণের
জিনি
সহগ
বেড়েছে।
আগে
জিনি
সহগ
দশমিক
২৫-২৬
শতাংশ
ছিল।
সেটি
এখন
দশমিক
৪০
শতাংশের
ওপরে
উন্নীত
হয়েছে।
আয়
অসমতার
পরিমাপক
হিসেবে
জিনি
সহগের
কিছু
দুর্বলতা
আছে।
সেজন্য
পালমা
অনুপাতের
কথা
বলা
হয়।
এ
অনুপাতের
বিচারেও
পরিস্থিতি
উদ্বেগজনক।
আয় বৈষম্যের
পাশাপাশি
বিভিন্ন
সামাজিক
বৈষম্যও
বেড়েছে।
যেমন
আমাদের
দেশের
শিক্ষা
ব্যবস্থাটা
ত্রিধাবিভক্ত
হয়েছে।
সমাজের
এলিট
শ্রেণী
ইংলিশ
মিডিয়াম
চালু
করেছে,
সেখানে
তাদের
ছেলেমেয়েরা
পড়ছে।
আরেকটা
অংশ
বাংলা
মাধ্যমের
স্কুল-কলেজে
পড়ছে।
সেখানকার
মান
তুলনামূলকভাবে
কম।
শিক্ষার্থীদের
আরেকটা
অংশ
যাচ্ছে
মাদ্রাসায়।
সেখানে
বিজ্ঞান
ও
অন্যান্য
বিষয়
কতটা
পড়ানো
হচ্ছে,
সেগুলো
নিয়ে
প্রশ্ন
রয়েছে।
এ
ত্রিধাবিভক্তি
বৈষম্য
বা
বিভাজন
বৃদ্ধির
আরেকটা
সুনির্দিষ্ট
রূপ।
মুক্তিযুদ্ধের
মধ্য
দিয়ে
পুরো
সমাজ
সংহত
হয়েছিল
এবং
এক
জায়গায়
এসেছিল।
সেই
জায়গাটিতে
আমরা
থাকতে
পারছি
না।
এটা
কাঙ্ক্ষিত
নয়।
একই
কথা
চিকিৎসার
ক্ষেত্রেও
বলা
চলে।
প্রচুর
আধুনিক
হাসপাতাল
ও
অত্যাধুনিক
ল্যাব
হয়েছে।
কিন্তু
স্বাস্থ্যসেবা
সাধারণ
মানুষের
ক্রয়ক্ষমতার
বাইরে
চলে
গেছে।
অন্যদিকে
সাধারণ
মানুষের
প্রতিষ্ঠান
যেমন
উপজেলা
স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্স
বা
সরকারি
হাসপাতালের
ততটা
অগ্রগতি
হয়নি।
অনেক
সময়
সম্পদ
দেয়া
হলেও
তার
সঠিক
ব্যবস্থাপনা
হচ্ছে
না।
যেমন
উপজেলা
স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সগুলোয়
চিকিৎসক
থাকছেন
না।
আরেকটা বিষয়
আছে,
সেটিকে
বলা
চলে
স্থানগত
বৈষম্য।
১৯৮৭
সালে
আমি
একটা
বই
লিখেছিলাম।
সেখানে
গ্রাম-শহরের
ব্যবধান,
ধনী-দরিদ্রের
ব্যবধান
ইত্যাদি
বৈষম্যের
কথা
উল্লেখ
করেছিলাম।
সে
দৃষ্টিকোণ
থেকে
গত
কয়েক
দশকে
বাংলাদেশে
যে
পরিবর্তন
ঘটেছে,
সেটি
বাঞ্ছনীয়
নয়।
স্বাধীনতার
অব্যবহিত
পরে
ঢাকা
শহরের
সঙ্গে
বিভাগীয়
অথবা
জেলা
শহরগুলোর
তত
পার্থক্য
ছিল
না।
স্কুল-কলেজের
শিক্ষার
মানে,
স্বাস্থ্য
ব্যবস্থার
মানে
তত
ব্যবধান
ছিল
না।
কিন্তু
ক্রমে
দেশটি
ঢাকাকেন্দ্রিক
হয়ে
গেল।
এখন
সরকারি
কর্মকর্তারা
উপজেলা
তো
নয়ই,
জেলা
শহরেও
থাকতে
চান
না।
তিনি
থাকলেও
পরিবারকে
ঢাকায়
রেখে
যান।
কিছুদিন আগে
তিস্তা
নদীর
পাশের
এলাকা
থেকে
ঘুরে
এলাম।
সেখান
থেকে
ঢাকা
এলে
মনে
হয়
আরেকটা
দেশে
এসেছি।
এ
ধরনের
পার্থক্য
হওয়ার
কথা
ছিল
না।
নতুন
অনেক
চ্যালেঞ্জ
সামনে
আসছে।
আমি
আশা
করব,
এখনকার
নীতিনির্ধারকরা
এসব
বিষয়
আমলে
নেবেন।
প্রশংসার
দাবি
নিশ্চয়ই
আছে।
কিন্তু
শুধু
প্রশংসার
মধ্যে
সীমাবদ্ধ
থাকলে
হবে
না।
গঠনমূলক
দৃষ্টিভঙ্গি
দিয়ে
পুরো
বিষয়টি
বিশ্লেষণ
করতে
হবে।
এমন
অনেক
বিষয়ের
কথা
উল্লেখ
করা
যায়,
যেগুলো
সাফল্যের
পাশাপাশি
নেতিবাচক
পরিবর্তনকেও
প্রতিফলিত
করে।
এটি
কাটিয়ে
উঠতে
হবে।
গ্রাম ও
শহরের বৈষম্য নিরসনে সরকার
কাজ করছে।
এজন্য প্রকল্পও নেয়া হয়েছে। যেমন ‘আমার গ্রাম,
আমার শহর’ প্রকল্প। কিন্তু ব্যবস্থাপনাগত বা পরিকল্পনাগত কিছু সমস্যা রয়ে গেছে।
এটা কীভাবে সমাধান করা
যায়?
গ্রাম
হবে
শহর—এটা
একটা
ভালো
আইডিয়া।
২০২১
সালে
জাতিসংঘ
থেকে
যে
ওয়ার্ল্ড
সোশ্যাল
রিপোর্ট
বেরিয়েছে,
সেখানে
বিষয়টির
ওপর
গুরুত্ব
দেয়া
হয়েছে।
যেটিকে
বলা
হয়েছে
‘ইনসিটু
আর্বানাইজেশন’।
আর্বানাইজেশন
বিভিন্ন
ধরনের
হতে
পারে।
‘ক্ল্যাসিক
আর্বানাইজেশন’
হলো
গ্রাম
থেকে
বড়
বড়
শহরে
মানুষের
চলে
আসা।
আরেকটা
হলো
‘গ্রিনফিল্ড
আর্বানাইজেশন’;
সেটি
হলো,
নতুন
নতুন
শহর
গড়ে
ওঠা।
আর
ইনসিটু
আর্বানাইজেশন
হলো
গ্রামে
থেকেই
মানুষ
শহরের
জীবনযাত্রার
মান
অর্জন
করতে
পারবে।
আমাদের উপমহাদেশে
শ্রীলংকা
এক্ষেত্রে
একটা
বড়
উদাহরণ।
তারা
অনেক
আগে
থেকে
‘রুরাল
ফার্স্ট’
পলিসি
গ্রহণ
করেছে।
তা
সত্ত্বেও
তারা
অনেক
আগেই
উচ্চমধ্যম
আয়ের
দেশে
পরিণত
হয়েছে।
পরিসংখ্যান
অনুযায়ী,
সেখানে
গ্রামীণ
জনগোষ্ঠী
এখনো
প্রায়
৮০
শতাংশ।
এটা
একটা
ব্যতিক্রম।
অন্য
কোনো
দেশে
পাওয়া
যায়
না
যে
বিপুলসংখ্যক
গ্রামীণ
জনগোষ্ঠী
নিয়ে
এত
উঁচু
মাথাপিছু
আয়
অর্জন
করেছে।
এ
উদাহরণটা
আমাদের
দেশের
কাছেই।
বাংলাদেশ
এটি
থেকে
শিক্ষা
নিতে
পারে।
সুতরাং
‘গ্রাম
হবে
শহর’—এ
স্লোগানের
পেছনে
যুক্তি
আছে।
নগরায়ণের
কোনো
সর্বজনস্বীকৃত
সংজ্ঞা
নেই।
জনসংখ্যার
ঘনত্ব
গ্রাম
ও
শহরের
পার্থক্য
রেখার
একটা
নির্ণয়ক।
অর্থাৎ
কোনো
এলাকার
জনঘনত্ব
বেশি
হলে
সেটিকে
শহর
বলা
হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের
শহরের
যে
ঘনত্ব
হবে
বলে
মনে
করা
হয়,
তার
সঙ্গে
তুলনা
করলে
পুরো
বাংলাদেশই
নগর
বলে
গণ্য
হবে।
আমাদের
দেশ
যেহেতু
ছোট
সেহেতু
শহরে
যাওয়ার
জন্য
খুব
বেশি
দূরত্ব
অতিক্রম
করতে
হয়
না।
একটা
সাইকেল
বা
বাসে
করে পার্শ্ববর্তী
শহরে
চলে
যাওয়া
যায়।
সে
কারণে
আমাদের
দেশে
শহর
ও
গ্রামের
ব্যবধান
ঘোচানোটা
তুলনামূলকভাবে
সহজ।
কিন্তু আমরা
দেখছি
অপরিকল্পিত
উন্নয়ন
হচ্ছে।
গ্রামের
মাঝখানে
মাঝখানে
ঘরবাড়ি
উঠে
যাচ্ছে
কিংবা
সুন্দর
একটা
রাস্তা
আছে,
তার
পাশে
কংক্রিটের
পিলার
দিয়ে
অবকাঠামো
নির্মাণ
করা
হচ্ছে।
এমন
প্রবণতা
ঠিক
নয়।
যেমন
ল্যান্ডস্কেপ
প্রিজারভেশন
ইউরোপীয়
দেশগুলোর
বড়
একটা
লক্ষ্য।
এজন্য
তারা
প্রচুর
অর্থ
ব্যয়
করে।
আমাদেরও
গ্রামের
ল্যান্ডস্কেপ
সংরক্ষণ
করেই
জীবনযাত্রা
শহরের
পর্যায়ে
আনার
একটা
সুযোগ
আছে
এবং
সেদিকেই
মনোযোগ
দেয়া
দরকার।
এখানে
একটা
প্রাতিষ্ঠানিক
শূন্যতা
বিরাজ
করছে,
যা
কাটিয়ে
ওঠা
জরুরি।
এ
বিষয়ে
২০১৭
সালে
আমার
একটা
বই
প্রকাশ
হয়েছে।
এর
নাম
হলো
‘বঙ্গবন্ধুর
স্বপ্ন
ও
বাংলাদেশের
গ্রাম’।
সেখানে
আমি
দেখিয়েছি
বাংলাদেশে
গ্রাম
পর্যায়ে
প্রাতিষ্ঠানিক
শূন্যতা
বিরাজ
করছে।
এখন
আমাদের
দেশে
স্থানীয়
সরকারের
সর্বনিম্ন
কাঠামো
হলো
ইউনিয়ন
পরিষদ।
তাতে
প্রতি
গ্রাম
থেকে
কেবল
একজন
প্রতিনিধি
থাকেন।
কিন্তু
ঐতিহ্যগতভাবে
আমাদের
দেশে
গ্রাম
পর্যায়ে
একটা
স্বশাসিত
প্রশাসনিক
কাঠামো
ছিল।
কোথাও
অত্যন্ত
শক্তিশালীভাবে
ছিল,
কোথাও
দুর্বলভাবে
ছিল।
বিভিন্ন
সময়ে
বাংলাদেশে
সেই
ধরনের
গ্রাম
পর্যায়ে
প্রশাসনিক
কাঠামো
গড়ে
তোলার
জন্য
বিভিন্ন
উদ্যোগ
নেয়া
হয়।
যেমন
বঙ্গবন্ধুর
কথাই
ধরুন।
তিনি
১৯৭৪-৭৫
সালে
যে
দ্বিতীয়
বিপ্লবের
সূচনা
করেছিলেন,
তাতে
অর্থনৈতিক
দৃষ্টিকোণ
থেকে
একটা
বড়
কর্মসূচি
ছিল
গ্রামগুলোকে
সমবায়ে
রূপান্তর
করা।
অর্থাৎ
তিনি
গ্রামে
একটা
প্রাতিষ্ঠানিক
কাঠামো
গড়ে
তুলতে
চেয়েছিলেন।
তিনি
বলেছিলেন,
গ্রামের
একটি
নিজস্ব
তহবিল
থাকবে।
সেই
তহবিলে
গ্রামের
ভেতর
থেকে
অর্জিত
সম্পদ
আর
উপর
থেকে
সরকার
কর্তৃক
পাঠানো
অর্থ
জমা
হবে
এবং
ওই
তহবিল
গ্রামের
বিভিন্ন
কল্যাণমুখী
কাজে
ব্যবহার
করা
হবে।
পরবর্তী সময়ে
বিভিন্ন
সরকারের
আমলে
যেমন
বর্তমান
প্রধানমন্ত্রী
প্রথম
যখন
ক্ষমতায়
এসেছিলেন
তিনিও
উদ্যোগ
নিয়েছিলেন
গ্রাম
পরিষদ
গঠন
করার
জন্য।
আইনও
প্রণয়ন
করেছিলেন।
কিন্তু
সেই
উদ্যোগ
আর
অগ্রসর
হয়নি।
এ
বিষয়ে
নতুন
উদ্যোগ
গ্রহণ
করা
প্রয়োজন।
তাহলে
গ্রামের
মানুষের
একটা
প্রতিষ্ঠান
থাকবে,
যেখানে
গ্রামের
মানুষ
নিজেদের
সমস্যাগুলো
নিয়ে
আলাপ-আলোচনা
করার
সুযোগ
পাবে।
গ্রাম
পর্যায়ে
প্রাতিষ্ঠানিক
কাঠামো
গড়ার
পেছনে
বড়
যুক্তি
হলো,
এটি
প্রত্যক্ষ
এবং
সাধারণ
মানুষের
খুব
কাছের
হবে।
ফলে
সেখানে
সাধারণ
মানুষের
মতামত
প্রতিফলিত
ও
গ্রাহ্য
হওয়া
তুলনামূলকভাবে
সহজ
হবে।
গ্রাম
পর্যায়ে
মিটিং
হলে
সেখানে
মানুষ
সরাসরিভাবে
কথা
বলতে
পারবে।
ইউনিয়ন
পর্যায়ে
সবাইকে
নিয়ে
সেই
ধরনের
মিটিং
করা
সম্ভব
নয়।
সুতরাং
বিষয়টি
পুনর্বিবেচনা
করা
উচিত।
এখন আমরা
বঙ্গবন্ধুর
জন্মশতবার্ষিকী
পালন
করছি।
অনেক
কথাই
বলছি।
কিন্তু
বঙ্গবন্ধুর
আরাধ্য
কর্মসূচির
বিষয়ে
তেমন
মনোযোগ
দিচ্ছি
না।
এখনকার
সময়ের
বিচারে
কোনটার
কী
প্রাসঙ্গিকতা,
কোন
কর্মসূচি
আমরা
রাখতে
পারি,
কোনটা
পরিস্থিতি
পরিবর্তনের
জন্য
প্রযোজ্য
নয়—এসব
বিশ্লেষণ
করা
প্রয়োজন।
আমি
কয়েকবার
চেষ্টা
করেছি
এসব
বিষয়
আলোচনায়
আনতে।
কিন্তু
নীতিনির্ধারকদের
কাছ
থেকে
তেমন
সাড়া
পাইনি।
গ্রামকে
শহরে
রূপান্তরের
চিন্তাটির
সুষম
বাস্তবায়নের
পথটি
কী
হতে
পারে,
সে
ব্যাপারে
আলোচনা
হওয়া
প্রয়োজন।
বৈষম্য বৃদ্ধির সমাধান কীভাবে হতে পারে?
সমাধান
অনেকভাবে
হতে
পারে।
এটা
বড়
আলোচনার
ব্যাপার।
আয়
বৈষম্য
নির্দেশক
জিনি
সহগ
দুভাবে
হিসাব
করা
হয়।
একটা
হলো
মার্কেট
ইনকাম
জিনি,
আরেকটা
হলো
ডিসপোজেবল
ইনকাম
জিনি।
মার্কেট
ইনকামকে
অনেক
সময়
ফাংশনাল
ইনকামও
বলা
হয়।
শ্রমবাজার
বা
উৎপাদন
প্রক্রিয়ায়
অংশগ্রহণ
করে
কে
কত
অংশ
পাচ্ছেন,
এটি
দ্বারাই
ফাংশনাল
ইনকাম
নির্ধারিত
হয়।
বর্তমানে
শ্রমিকরা
যে
মজুরি
পান
এবং
মালিক
যে
মুনাফা
পান
(ওয়েজ অ্যান্ড
প্রফিট),
তার
মধ্যে
একটা
বড়
বিভাজন
থাকে।
এটা
ফাংশনাল
ডিভিশন।
ফাংশনাল
ডিভিশনটা
সুষম
বা
সমান
হচ্ছে
কিনা
কিংবা
যতটা
আছে
তার
চেয়ে
আরো
সমতাধর্মী
হতে
পারে
কিনা,
এটা
একটা
বিবেচ্য
বিষয়
হতে
পারে।
একটা উদাহরণ
দিই।
গার্মেন্ট
শিল্পে
লাখ
লাখ
কর্মী
কাজ
করছেন।
সেখানে
মজুরি
ও
মুনাফায়
যে
ব্যবধান
আছে,
তাতে
কিছুটা
সমতা
আনার
সুযোগ
আছে
কিনা
এটি
বিবেচনা
করা
প্রয়োজন।
এর
অবশ্য
আরেকটা
দিকও
আছে।
শিল্প
মালিকরা
বলেন,
মজুরি
বেশি
দিলে
তাদের
উৎপাদন
খরচ
বেড়ে
যাবে।
ফলে
তাদের
আন্তর্জাতিক
প্রতিযোগিতা
সক্ষমতা
কমে
যাবে
ইত্যাদি।
এগুলো
চিন্তা
করার
বিষয়।
পুরো
উৎপাদন
খরচে
মজুরির
অংশটা
আসলে
কতটুকু,
তা
সামান্য
বাড়লে
বড়
কোনো
সমস্যা
হবে
কিনা,
এটা
দেখতে
হবে।
দ্বিতীয়ত,
সারা
বিশ্বের
বিচারে
বাংলাদেশের
চেয়ে
কম
মজুরি
খুব
কম
দেশেই
আছে।
সামান্য
মজুরি
বাড়ানো
হলে
আন্তর্জাতিক
প্রতিযোগিতা
সক্ষমতা
কমে
যাবে,
এটা
কতটা
যৌক্তিক
সেটিও
চিন্তা
করতে
হবে।
তৃতীয়ত,
আমাদের
দেশের
উদ্যোক্তারা
প্রায়ই
‘বেগার
দাই
নেইবারের’
মতো
অ্যাপ্রোচ
গ্রহণ
করেন।
অর্থাৎ
আরেকটু
বেশি
ক্রয়াদেশ
পাওয়ার
জন্য
তাদের
উৎপাদিত
পণ্যের
দাম
কমিয়ে
দেন।
এ
প্রতিযোগিতার
ফলে
মজুরির
ওপরও
নিম্নমুখী
চাপ
পড়ে।
এ
পরিস্থিতি
এড়ানোর
জন্য
রফতানিকারক
সংগঠনগুলো
একটা
ন্যূনতম
ক্রয়
দর
বেঁধে
দিতে
পারে
কিনা,
যাতে
কেউ
এর
নিচে
না
যায়,
তা
ভেবে
দেখা
প্রয়োজন।
আয়ের
ফাংশনাল
ডিস্ট্রিবিউশনে
(মজুরি ও
মুনাফা)
আরো
কিছুটা
সমতা
আনার
সুযোগ
থাকতে
পারে।
আবার ধরুন
প্রধান
নির্বাহীর
আয়।
একই
মাপের
কোম্পানিতে
জাপানের
সিইও
যা
আয়
করেন,
যুক্তরাষ্ট্রের
সিইও
তার
দশ
গুণ
বা
তারও
বেশি
আয়
করেন।
তার
মানে
হলো,
আরো
অনেক
বিষয়
আছে,
যা
এ
আয়ের
মাত্রা
নির্ধারণ
করে।
তেমনিভাবে
আমাদের
দেশে
সিইও
ইনকাম
পাহাড়চুম্বী
হতে
হবে—এ
ধরনের
কঠোর
কোনো
অর্থনৈতিক
নিয়ম
নেই।
এ
আয়ের
মাত্রা
নীতি
ও
সামাজিক
মূল্যবোধ
দ্বারা
প্রভাবিত
করার
সুযোগ
আছে।
এবার আসা
যাক
ডিসপোজেবল
ইনকামের
পুনর্বিতরণে।
এটা
হয়
কর
ও
নগদ
অর্থ
হস্তান্তরের
মাধ্যমে।
অনেক
দেশে
বিশেষ
করে
স্ক্যান্ডিনেভিয়ান
দেশগুলোয়
দেখা
যায়,
জিডিপির
প্রায়
৫০
শতাংশ
কর
দ্বারা
আহরিত
হয়।
কাজেই
সেসব
দেশে
ওই
রাজস্ব
আয়টা
পুরো
সমাজে
বিস্তৃত
করার
সুযোগ
থাকে।
অথচ
আমাদের
কর-জিডিপি
হার
মাত্র
৮-৯
শতাংশের
কাছাকাছি।
এটি
অত্যন্ত
কম।
আমাদের
চিন্তা
করতে
হবে
কীভাবে
তা
বাড়ানো
যায়।
২০৪১
সালে
আমরা
উন্নত
দেশ
হতে
চাইছি।
সেই
উপযোগী
করভিত্তিতে
উপনীত
হতে
আমাদের
সচেষ্ট
হওয়া
দরকার।
এবার আলাপ
করা
যাক
ক্যাশ
ট্রান্সফার
বিষয়ে।
এটা
দ্বারা
সরাসরিভাবে
আয়
নাজুক
জনগোষ্ঠীর
কাছে
পৌঁছে।
আমাদের
দেশে
কিছু
উদ্যোগ
নেয়া
হয়েছে।
যেমন
বিধবা
ভাতা,
দারিদ্র্য
ভাতা
ইত্যাদি।
কিন্তু
এটি
যে
পরিধির
হওয়া
দরকার
ততটা
হয়নি।
আরেকভাবেও
বৈষম্য
কমানো
যেতে
পারে।
সেটি
হলো
শিক্ষা,
চিকিৎসা
ইত্যাদি
ব্যবস্থা
এমন
করা
যেতে
পারে,
যাতে
নগদ
আয়
কম
হলেও
প্রকৃত
আয়টা
বেড়ে
যায়।
অমর্ত্য
সেন
প্রশ্ন
তুলেছেন,
অর্থ
আমাদের
কী
জন্য
দরকার?
তিনি
বলেছেন,
আমাদের
কতগুলো
ফাংশনের
জন্য
অর্থটা
দরকার।
যাতে
আমাদের
ক্যাপাবিলিটি
বৃদ্ধি
পায়।
মূল
লক্ষ্য
ফাংশনিং,
নগদ
অর্থ
পাওয়া
নয়।
যদি
আমাদের
ছেলে
মেয়েদের
ভালো
স্কুলে
পাঠাতে
পারি,
ভালো
স্বাস্থ্যসেবা
পেতে
পারি,
তাহলে
আয়
কম
হলেও
আমাদের
ফাংশনিং
বেড়ে
যাবে।
বাংলাদেশের
দিকে
তাকালে
দেখি,
এখানে
শিক্ষা
ও
স্বাস্থ্য
ব্যবস্থায়
বিশাল
ব্যবধান।
দরিদ্রের
জন্য
পর্যাপ্ত
সুযোগ-সুবিধা
নেই।
আমাদের
কুলি-মজুর,
মুটে,
দরিদ্র
রিকশাওয়ালার
ছেলে
মেয়েদের
কথা
ভাবতে
হবে।
তাদের
ছেলে
মেয়েরা
সেই
ধরনের
শিক্ষা
পাচ্ছে
কিনা,
যাতে
ভবিষ্যতে
তাদের
আয়
বাড়তে
পারে—এসব
বিষয়ও
দেখতে
হবে।
যেমন যুক্তরাষ্ট্রে
একটা
পাবলিক
এডুকেশন
সিস্টেম
আছে।
সেখানে
কার
আয়
কতখানি
তা
গুরুত্ব
বহন
করে
না।
সব
শ্রেণী-পেশার
মানুষের
ছেলে
মেয়েরাই
পড়তে
পারে।
মূলত
এ
পাবলিক
এডুকেশন
সিস্টেমটাই
দেশটির
নাগরিক
তৈরি
করে।
শুধু
যুক্তরাষ্ট্র
নয়,
উন্নত
সব
দেশেই
এ
রকম
ইউনিভার্সেল
পাবলিক
এডুকেশন
আছে,
যেখানে
ধনী-দরিদ্র
নির্বিশেষে
সবাই
যেতে
পারে।
আমাদের
দেশে
সেটি
হচ্ছে
না।
সুতরাং মোটাদাগে
বলতে
গেলে
বৈষম্য
তিনভাবে
কমানো
যায়।
এক.
ফাংশনাল
ডিস্ট্রিবিউশন
আরো
সমতাধর্মী
করা;
দুই,
ডিসপোজেবল
ইনকাম
ডিস্ট্রিবিউশন—ট্যাক্স
অ্যান্ড
ক্যাশ
ট্রান্সফারের
মাধ্যমে
সমতা
আনা।
তিন.
ফাংশনিংগুলোকে
সামাজিকভাবে
নিশ্চিত
করা,
তাহলে
নগদ
আয়
কম
হলেও
সামাজিক
ব্যবস্থা
দ্বারা
পূরণ
হয়।
দূরবর্তী
বিচারে
এটা
আমাদের
জন্য
খুবই
প্রয়োজনীয়।
নইলে
কম
শিক্ষিত
লোক
নিয়ে
আমরা
খুব
বেশি
এগোতে
পারব
না।
আমাদের অধিকাংশ ভালো প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ বা
পাকিস্তান আমলে
সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ পর্বে
তেমন শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান তৈরি
হয়নি। তাহলে
আমরা ২০৪১
সালের মধ্যে
কীভাবে উন্নত
রাষ্ট্র হব?
২০৪১
সালে
উন্নত
রাষ্ট্র
হতে
হলে
অবশ্যই
ভালো
ও
সুপরিচালিত
প্রতিষ্ঠান
গড়ে
তুলতে
হবে।
আমরা
বেশির
ভাগ
ক্ষেত্রে
শুধু
মাথাপিছু
আয়ের
চিন্তাটাই
করি।
উন্নত
দেশের
আরো
অনেক
বৈশিষ্ট্য
আছে।
যেগুলো
একটার
সঙ্গে
আরেকটা
পরস্পর
সম্পর্কিত।
এ
বিষয়ে
মিডল
ইনকাম
ট্র্যাপের
বিষয়টি
স্মরণ
করা
যেতে
পারে।
অনেক
দেশ
হয়তো
মাথাপিছু
আয়
বৃদ্ধি
করেছে
কিন্তু
উন্নত
রাষ্ট্রে
পরিণত
হওয়ার
জন্য
অন্য
যেসব
বৈশিষ্ট্য
দরকার
সেগুলোর
প্রতি
প্রয়োজনীয়
মনোযোগ
দেয়নি।
ফলে
তারা
একটা
জায়গায়
এসে
স্থবির
হয়ে
পড়েছে।
আমাদের
দেশেও
সেই
বিপদটা
আছে।
আমাদের
বহুদূর
অতিক্রম
করতে
হবে।
আমরা
তো
কেবল
নিম্নমধ্যম
আয়ে
পৌঁছেছি,
তারপর
উচ্চমধ্যম
আয়ে
পৌঁছতে
হবে,
এরপর
উচ্চ
আয়ে
যেতে
হবে।
মধ্যম
আয়ের
পরিসর
অনেক
বড়।
২
হাজার
ডলার
থেকে
প্রায়
১৪-১৫
হাজার
ডলারের
কাছাকাছি।
কাজেই
পুরো
পরিসর
অতিক্রম
করা
একটা
বড়
চ্যালেঞ্জ।
তারপর
আবার
উচ্চ
আয়ে
পৌঁছতে
হবে।
সুতরাং
একটা
সমন্বিত
উন্নয়ন
প্রক্রিয়ায়
যাওয়ার
দিকে
মনোযোগ
দিতে
হবে।
মধ্যম আয়ের
ফাঁদে পড়ার
কিছু উদাহরণ বিশ্বে রয়েছে। কিছু দেশের
উন্নয়ন একটা
পর্যায়ে স্থবির হয়ে পড়েছে। বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী বলে
এবং বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় কী?
প্রতিটি
দেশই
স্বতন্ত্র।
একেক
দেশের
একেক
রকম
পরিস্থিতি।
যেমন
লাতিন
আমেরিকার
দেশগুলো
মধ্যম
আয়ের
ফাঁদে
আটকা
পড়ার
বড়
কারণ
হলো
বৈষম্য।
ওইসব
দেশে
বৈষম্য
আরো
বেশি।
বাংলাদেশও
অবশ্য
বৈষম্যের
ওই
স্তরে
চলে
যাচ্ছে।
আগেই
বলেছি
আমাদের
বৈষম্য
পরিমাপক
জিনি
সহগ
বাড়ছে।
জাপান,
দক্ষিণ
কোরিয়াসহ
পূর্ব
এশীয়
দেশগুলোয়
জিনি
সহগ
এখনো
দশমিক
৩৫
কিংবা
দশমিক
৩-এর
পর্যায়ে
আছে।
বাংলাদেশে
সেটি
দশমিক
৪-এর
ওপরে
রয়েছে।
আমাদের এখনকার
পর্যায়
হলো
‘ক্যাচিং
আপ
গ্রোথ’।
বিশ্বের
কিছু
দেশ
আছে,
যারা
প্রযুক্তির
দিক
থেকে
উন্নত
মানে
চলে
গেছে।
ফ্রন্টিয়ার
দেশগুলোকে
নতুন
প্রযুক্তি
উদ্ভাবন
করতে
হয়।
প্রচুর
গবেষণা
করতে
হয়।
আমাদের
সুবিধাটা
হলো,
ফ্রন্টিয়ার
দেশগুলোয়
যেসব
প্রযুক্তি
বিদ্যমান
সেগুলো
আহরণ
করে
দ্রুত
এগিয়ে
যেতে
পারি।
এটিই
হলো
‘ক্যাচ
আপ
গ্রোথের’
প্রধান
বৈশিষ্ট্য।
কিন্তু
একটা
পর্যায়ে
বাংলাদেশ
যখন
আরো
উঁচুতে
চলে
যাবে
তখন
এ
সুযোগ
কমে
আসবে।
তখন
আমাদের
এগোতে
হলে
নিজেদেরই
ইনোভেট
করতে
হবে,
গবেষণা
করতে
হবে।
যেটি
দক্ষিণ
কোরিয়া
করেছে।
অ্যাপলের
সঙ্গে
পাল্লা
দিয়ে
দেশটির
স্যামস্যাং
কোম্পানি
টেকনোলজি
তৈরি
করছে।
তেমনটা
করতে
হলে
ওইসব
কোম্পানিকে
কিছুটা
দেশীয়/অভ্যন্তরীণ
বাজারের
ওপর
নির্ভর
করতে
হবে।
হয়তো
একটা
প্রডাক্ট
ডেভেলপ
করা
হলে
প্রথমে
সেটি
বিশ্বমানের
নাও
হতে
পারে।
দেশীয়
বাজারে
অব্যাহত
টেস্ট
করার
মাধ্যমে
একটা
পর্যায়ে
বিশ্বমানের
পণ্য
তৈরি
হয়।
তখন
বিশ্ববাজারে
যাওয়া
যায়।
তার
মানে
আমাদের
দেশীয়
বাজার
বিকশিত
করতে
হবে।
সেটি
ব্যবহার
করে
আমাদের
প্রযুক্তিগত
উত্কর্ষের
দিকে
যেতে
হবে।
বিপুলসংখ্যক মানুষ
যদি
কম
আয়ে
থেকে
যায়,
তবে
নতুন
প্রযুক্তিসম্পন্ন
পণ্যটির
বাজার
সীমিত
থেকে
যাবে।
ফলে
সেখানে
অবিরত
ইনোভেশন
করে
ততটা
সফল
হওয়া
যাবে
না।
আরেকটা
বিষয়
হলো,
প্রযুক্তিগত
উত্কর্ষ
অর্জনের
জন্য
কতগুলো
সমন্বিত
পূর্বশর্ত
পূরণ
করা
দরকার।
তার
মধ্যে
শিক্ষার
কথা
আগেই
বলেছি।
তারপর
রিসার্চ
অ্যান্ড
ডেভেলপমেন্টের
প্রতি
অনুরাগ
এবং
সেটার
প্রতি
প্রবল
আগ্রহ
দরকার।
এজন্য
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে
জ্ঞানের
আধার
হতে
হবে।
এ
জায়গায়
আমাদের
দুর্বলতা
রয়ে
গেছে।
ন্যাশনাল
ইনোভেশন
সিস্টেম
বলে
একটা
কথা
আছে।
একটা
দেশের
ইনোভেশন
করার
মতো
সিস্টেম
থাকতে
হয়।
বিভিন্ন
কোম্পানির
সঙ্গে
বিশ্ববিদ্যালয়
ও
গবেষণা
প্রতিষ্ঠানের
সংযোগ
থাকতে
হয়।
নানা
কিছু
মিলে
একটা
ন্যাশনাল
ইনোভেশন
সিস্টেম
তৈরি
হয়।
এটি
বিকশিত
করা
হয়
এগিয়ে
যাওয়ার
জন্য।
অনেক
দেশ
প্রথমে
এদিকে
তেমন
মনোযোগ
দেয়
না
কিংবা
দিলেও
নানা
কারণে
ততটা
সফল
হয়
না।
ফলে
তারা
স্থবির
হয়ে
পড়ে।
মধ্যম আয়ের
ফাঁদের
বিষয়টি
নির্ভর
করে
কোনো
দেশের
সুনির্দিষ্ট
পরিস্থিতির
ওপর।
যেমন
চীনের
কথাই
ধরি।
চীনের
বড়
সুবিধা
হলো,
তাদের
আকারগত
কোনো
সমস্যায়
পড়তে
হয়
না।
দেশটিতে
এত
বড়
মিডল
ইনকাম
গ্রুপ
সৃষ্টি
হয়েছে
যে
কোনো
পণ্য
বিপণনে
তাদের
অভ্যন্তরীণ
বাজারের
সীমাবদ্ধতায়
পড়তে
হচ্ছে
না।
এজন্য
তাদের
কোম্পানিগুলো
বিশ্বমানের
পণ্য
তৈরি
করছে।
এছাড়া
বিপ্লবের
পর
চীন
যে
শিক্ষা
ও
স্বাস্থ্য
ব্যবস্থা
দাঁড়
করিয়েছিল,
তার
সুফল
এখন
তারা
পাচ্ছে।
জ্ঞান-বিজ্ঞানে
উন্নয়নের
ভিত্তিতে
তারা
আরো
উচ্চমানের
গবেষণা-প্রযুক্তি
উদ্ভাবনের
দিকে
এগিয়ে
যেতে
পারছে।
আমাদের
দেশে
সেই
বিপ্লবটা
হলো
না।
স্বাধীনতার
পরে
ধারণা
করা
হয়েছিল
বাংলাদেশে
এ
ধরনের
একটা
বিপ্লব
হবে;
সর্বস্তরের
শিক্ষা,
স্বাস্থ্য,
জীবনমান
উন্নয়নের
একটা
প্রক্রিয়া
শুরু
হবে।
কিন্তু
সেটি
হয়নি।
দেশে মাথাপিছু আয় ও
জিডিপি বাড়ছে। তার সঙ্গে
পরিবেশগত বিপর্যয়ও অনেক দ্রুত
বেড়েছে। দীর্ঘমেয়াদে এটি কি
আমাদের ক্ষতি
করবে না?
আপনি
জানেন,
আমি
বাংলাদেশের
পরিবেশ
আন্দোলনের
একজন
উদ্যোক্তা।
১৯৮৮
সালে
আমি
প্রবাসীদের
সংগঠন
বাংলাদেশ
এনভায়রনমেন্ট
নেটওয়ার্ক
(বেন) প্রতিষ্ঠা
করি
এবং
পরে
এর
মাধ্যমে
অন্যান্য
পরিবেশ
স্বপক্ষ
সংগঠনের
সহযোগিতায়
বাংলাদেশ
পরিবেশ
আন্দোলনের
(বাপা) সূচনা
করি।
গত
কয়েক
দশকে
দেশে
পরিবেশের
অবক্ষয়টা
যেভাবে
ঘটেছে,
সেটি
অনেকটা
‘হরর
স্টোরির’
মতো।
যেমন
সম্প্রতি
সিলেটে
গিয়েছিলাম।
সিলেট
সদরে
প্রথমে
গেলাম।
তারপর
হবিগঞ্জে
গেলাম।
সেখানে
বাপার
শাখা
আছে।
কর্মীরা
আমাকে
হবিগঞ্জ
শহরের
কাছে
নিয়ে
গেল।
সেখানে
সুতাং
নামে
একটা
নদী
আছে।
যেটি
ত্রিপুরার
দিক
থেকে
এসে
কুশিয়ারার
সঙ্গে
মিশেছে।
সেখানে
অনেক
বড়
বড়
কারখানা
হয়েছে।
এসব
কোম্পানি
তাদের
জলজ
বর্জ্য
কোনো
রকম
পরিশোধন
ছাড়াই
সুতাং
নদীতে
ফেলছে।
এজন্য
তারা
একটা
খালও
কেটে
নিয়েছে।
বর্জ্যের
কারণে
সেখানে
এত
দুর্গন্ধ
যে
কয়েক
মাইলের
মধ্যে
যাওয়াই
যায়
না।
শুনলাম
বাইরে
থেকে
এসব
বিষয়
দেখার
জন্য
কেউ
এলে
স্থানীয়
কর্তৃপক্ষ
কারখানা
কর্তৃপক্ষকে
খবর
দিয়ে
দেয়।
সত্য-মিথ্যা
জানি
না।
আমাকে
তাই
বলা
হলো।
যেদিন
কেউ
পরিদর্শনে
যাবে
বলে
জানতে
পারে,
তার
আগে
ওইসব
জায়গায়
পানিতে
ব্লিচিং
দেয়,
যাতে
গন্ধটা
কমে
যায়।
নদীর
পানি
দেখতে
আলকাতরার
মতো।
এত
দূষিত।
এটা
অবিশ্বাস্য
যে
এত
বড়
বড়
কোম্পানি,
যাদের
অর্থবিত্ত,
সম্পদের
অভাব
নেই,
তারা
এমন
কাজ
করছে।
তদুপরি
আমাদের
দেশে
কর্তৃপক্ষ
আছে,
সরকার
আছে,
তাদের
চোখের
সামনে
এটি
দিনের
পর
দিন
চলছে!
এটা
অবিশ্বাস্য।
পরিবেশের
পক্ষে
এত
কথা
বলা
হচ্ছে,
সরকারের
সর্বোচ্চ
পর্যায়
থেকে
পরিবেশ
রক্ষার
কথা
বলা
হচ্ছে
কিন্তু
চোখের
সামনে
বিষয়টি
ঘটছে,
কেউ
ব্যবস্থা
নিচ্ছে
না।
আমি
সেখানে
গেলে
কয়েকটি
ইউনিয়নের
প্রতিনিধি
আমার
সঙ্গে
দেখা
করেছে।
তারা
বলল,
আমাদের
জন্য
কিছু
একটা
করেন।
এমন
অবস্থা
হয়েছে
যে
সেখানকার
ছেলেদের
বিয়ে
পর্যন্ত
হচ্ছে
না।
কেননা
অন্য
এলাকার
অভিভাবকরা
তাদের
মেয়েদের
ওই
এলাকার
বিয়ে
দিতে
চান
না।
ফলে
পরিবেশ
দূষণ
সেখানে
একটি
সামাজিক
সমস্যায়
রূপ
নিয়েছে।
দূষণের
কারণে
সেখানে
স্বাস্থ্যগত
সমস্যা
দেখা
দিয়েছে।
সেখানকার
মানুষের
গড়
আয়ু
কমে
যাচ্ছে।
এটা
একটা
উদাহরণ
মাত্র।
সারা
দেশেই
এ
ধরনের
পরিবেশের
অবক্ষয়
চলছে।
আমাদের উন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে
কি পরিবেশের ক্ষতি হিসেবে নেয়া হচ্ছে
নাকি শুধু
বস্তুগত উন্নয়নই দেখা হয়?
আমাদের
দেশে
প্রকল্পের
সঠিক
কস্ট
বেনিফিট
বিশ্লেষণ
করা
হয়
না।
যেমন
কিছুদিন
আগে
আমার
এক
পরিচিত
গার্মেন্ট
কারখানা
দেখাতে
নিয়ে
গেল।
তিনি
জানালেন,
তারা
গভীর
নলকূপ
বসিয়েছেন।
ডায়িংসহ
পুরো
উৎপাদন
প্রক্রিয়ায়
গভীর
নলকূপের
পানি
ব্যবহার
করা
হচ্ছে।
পরে
দূষিত
রাসায়নিকযুক্ত
পানি
পাশে
ছেড়ে
দেয়া
হচ্ছে।
একে
তো
এটা
ছেড়ে
দেয়ার
ফলে
আমাদের
মাটি,
বায়ু,
খাল
সবই
দূষিত
হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত,
গভীর
নলকূপ
দিয়ে
যে
পানি
উত্তোলন
করা
হচ্ছে,
পরিবেশের
ওপর
তার
কতটা
বিরূপ
প্রভাব
পড়বে,
তার
কোনো
সঠিক
মূল্যায়ন
করা
হচ্ছে
না।
আমাদের
ঢাকা
শহর
খুব
সৌভাগ্যবান
যে
একটা
সমৃদ্ধ
জিওলজিক্যাল
ফরমেশনের
ওপর
এটি
অবস্থিত।
ফলে
আমরা
ভূগর্ভস্থ
সুপেয়
পানি
পাচ্ছি
এবং
আমরা
তা
ব্যবহারও
করছি।
কিন্তু
এ
রিসোর্স
একদিন
শেষ
হয়ে
যাবে।
অনেকটা
বিনামূল্যে
মানুষ
এটা
নিঃশেষ
করছে।
পণ্যের
উৎপাদন
ব্যয়ে
এটি
যোগ
করা
হচ্ছে
না।
সঠিক
কস্ট
বেনিফিট
বিশ্লেষণ
করা
হলে
ফলটা
উল্টোটাও
হতে
পারে।
যে
তরুণী
মেয়েরা
গার্মেন্টে
কাজ
করতে
যায়,
তাদের
কর্মক্ষমতা
দ্রুত
কমে
যায়।
দীর্ঘমেয়াদে
এটিও
একটা
কস্ট।
এটাও
বিবেচনায়
নেয়া
হয়
না।
সেজন্য
বললাম,
ব্যক্তি
উদ্যোক্তারা
নিজেদের
মধ্যে
প্রতিযোগিতা
করতে
গিয়ে
অনেক
সময়
বৃহত্তর
স্বার্থটা
সেভাবে
রক্ষা
করতে
পারছেন
না।
এ
জায়গায়
কিছু
ইন্টারভেনশন
প্রয়োজন,
যা
সরকার
বা
উদ্যোক্তা
সংগঠনের
মাধ্যমে
করা
যেতে
পারে।
আমাদের
দেশের
সম্পদ
বিনা
ক্ষতিপূরণে
ব্যবহার
করে
সস্তায়
পণ্য
বিদেশে
রফতানি
করা
কতখানি
যৌক্তিক
হচ্ছে,
তা
বিশ্লেষণ
করা
প্রয়োজন।
[চলবে]
শ্রুতলিখন: হুমায়ুন কবির