ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বৈঠকে যোগ দিতে গত শনিবার রাতে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী . কে আব্দুল মোমেন। বৈঠকে র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ নতুন নতুন ক্ষেত্রে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেবে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচদিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন মন্ত্রী। এর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আজ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন . মোমেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন। ব্লিংকেন গত ডিসেম্বরে এক ফোনালাপে বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। পরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানায়।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের এপ্রিল তত্কালীন মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর যৌথভাবে দিনটি উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে ব্লিংকেনসহ যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক বিশিষ্টজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার আগে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এবার আমার সফরটা হচ্ছে আগামী ৫০ বছরে কীভাবে আমরা সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি সেসব নিয়ে। বিনিয়োগ আরো বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে, রোহিঙ্গা, জলবায়ু ইস্যুও সামনে আসবে। ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঢাকার ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছাড়াও নীতিগত সম্পর্ক আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারা গণতন্ত্রে বসবাস করে, আমরাও করি। তাদের ২৫০ বছরের গণতন্ত্রেও অনেক দুর্বলতা আছে। সেখানে আমাদের ৫০ বছরের গণতন্ত্র। মাঝখানে ১৯৭৫ সালের পর বহু বছর গণতন্ত্র ছিল না। তবুও আমরা ভালো করছি। গণতন্ত্র কোনো সংজ্ঞায় চলে না, এটা এক ধরনের সম্পৃক্তকরণ প্রক্রিয়া। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রকে বলব, আমরা তোমাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই।

বৈঠকে র্যাবের বিরুদ্ধে দেয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি তোলা হবে উল্লেখ করে . কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা তাদের বলতে চাই যে র্যাবের কারণে আমাদের দেশে সন্ত্রাস কমেছে। শুধু আমাদের দেশে সন্ত্রাস নয়, আমাদের আশপাশের দেশের সন্ত্রাসও অনেক কমে গেছে প্রতিষ্ঠানের জন্য। আমরা আশা করব, যুক্তরাষ্ট্র ইতিবাচক সাড়া দেবে।

এর আগে গত ২০ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অষ্টম অংশীদারত্ব সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপ শেষে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যান্ড সাংবাদিকদের জানান, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার একটি জটিল প্রক্রিয়া। বিষয়ে আরো কাজ করতে হবে। তবে নিষেধাজ্ঞার পর তিন মাস র্যাবের কর্মকাণ্ডে তার দেশ সন্তুষ্ট বলেও জানান তিনি। 

এছাড়া এপ্রিল ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপে বসবে। এরই মধ্যে ওয়াশিংটন মিলিটারি ইস্যুতে বাংলাদেশকে জিসমিয়া আকসা নিয়ে দুটি চুক্তির খসড়া কপি দিয়েছে। চুক্তি বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সেটা এখনো বলা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা চুক্তির বিষয়টি ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এর পরই কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কেনার বিষয়টিও নাকচ করে দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা তো অস্ত্রের ভাণ্ডার সৃষ্টি করতে চাই না। কারণ আমাদের প্রয়োজন নেই। আমরা খুব শান্তিপ্রিয় দেশ। সব প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক। অস্ত্র সংগ্রহ করলেই যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব আসে। আমরা ওসবের মধ্যে নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন