স্মার্টফোন উৎপাদন প্রভাবিত করবে বৈশ্বিক চিপ সংকট

বণিক বার্তা ডেস্ক

বৃহৎ আকারে সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহ ঘাটতি ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত চলমান থাকবে ছবি: রয়টার্স

বিশ্বব্যাপী সেমিকন্ডাক্টর ঘাটতি আগামী বছরের শেষ নাগাদ স্থায়ী হতে পারে বলে ধারণা করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। বর্তমানে সেমিকন্ডাক্টর ঘাটতির কারণে বিভিন্ন অটোমোবাইল কোম্পানির কার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে অচিরেই সংকট স্মার্টফোনের উৎপাদনেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। খবর রয়টার্স।

চলতি বছর সেমিকন্ডাক্টর ঘাটতির কারণে বৈশ্বিক অটোমোবাইল উৎপাদন শিল্পে যথেষ্ট প্রতিবন্ধকতা অতিবাহিত হয়েছে। তবে সামনের সময়ে সংকট কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। চীন সংকট পূরণে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে। তাইওয়ানের উৎপাদন সংকটের ঘাটতি পূরণে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে চীন। চলতি সপ্তাহে গ্লোবাল মার্কেট ফোরামে ডাচ ব্যাংকিং করপোরেশন আইএনজির বৃহত্তর চীনের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইরিশ পেং এমনটা জানান।

তিনি জানান, তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলো চীনে তাদের কারখানায় সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে। কভিডের কারণে তাইওয়ানের কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রম মারাত্মক মাত্রায় ব্যাহত হওয়ার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিগুলো।

পেং আরো জানান, জিডিপির তুলনায় চীন শতাংশ চিপ সংকট কাটিয়ে উঠেছে। তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলো মেইনল্যান্ড চায়নায় তাদের পরিকল্পনা অনুসারে বৃহৎ আকারের কারখানা গড়ে তুলেছে। তবে সামনের দিনগুলোতে স্মার্টফোন উৎপাদকরা সেমিকন্ডাক্টর সংকটে ভুগতে পারেন বলেও জানায় পেং।

ইরিশ পেং বলেন, তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলো বর্তমানে গাড়ির জন্য চিপ উৎপাদন করছে। ফলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গাড়ির জন্য চিপ সংকট কেটে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে এর ফলে সামগ্রিক ইলেকট্রনিকস শিল্পে চিপ সংকটের কোনো সুরাহা হবে না। চিপ সংকটের দরুন কিছু স্মার্টফোনের নতুন সংস্করণ বাজারে আসতে দেরি হতে পারে।

এরই মধ্যে কোম্পানিগুলো বৈশ্বিক শিল্পবাজারে ভবিষ্যৎ চিপ সংকটের ব্যাপারে সতর্কবার্তা জারি করেছে। বিশ্বের অন্যতম সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এএসএমএল চলতি সপ্তাহে তাদের বিক্রয় বৃদ্ধি করেছে। চিপ জায়ান্ট টিএসএমসি ইনটেলের ক্রয়াদেশের ভিত্তিতে তারা বিক্রয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করে।

সেমিকন্ডাক্টরের প্রতিষ্ঠাতা আদম খান জানান, বৃহৎ আকারে সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহ ঘাটতি ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত চলমান থাকতে পারে। তবে সময়সীমা আমাদের জন্য একটি ধারণা মাত্র।

চিপ স্টার্টআপ সেরিব্রেস সিস্টেমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যান্ড্রু ফেল্ডম্যানও একই কথা জানান। বিক্রেতাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, নতুন চিপ যন্ত্রাংশের জন্য আমাদের আরো ৩২ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

আইএনজির অর্থনীতিবিদ পেং জানান, ক্রিপ্টোকারেন্সির মাইনররাও ব্যবহূত চিপ পুনরায় ব্যবহারের কথা ভাবছে। এর ফলে বোঝা যায়, চিপ সংকট এত সহজেই দূর হচ্ছে না।

বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ব্যক্তিগত যানবাহন ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম পদ্ধতির কারণে ডিভাইসের চাহিদা বৃদ্ধিতে চিপের চাহিদাও বেড়েছে বহুগুণ। ফলে শিল্পে বৃহৎ আকারের বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধির আশা করছেন প্রযুক্তিসংশ্লিষ্টরা। চলতি বছর চিপ উৎপাদন শিল্প আগের তুলনায় ২১ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন