প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে বীমার সম্প্রসারণে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। একই সঙ্গে সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য বীমা কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জাতীয় বীমা দিবস-২০২১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গতকাল প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটিতে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন , বীমা একটি সেবামূলক পেশা। গ্রাহক স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার পাশাপাশি একে জনপ্রিয় ও জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে।
জনগণ যাতে বীমা পলিসি খুলে সংকটকালে সুবিধা পেতে পারে, সেজন্য তথ্য দিয়ে তাদের সচেতন করতে বীমা কোম্পানিগুলোর প্রতি নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জনগণ যাতে বীমার বিষয়ে উৎসাহিত হয়, সে লক্ষ্যে তাদের সচেতন করতে আপনাদের আরো ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।
দেশের অর্থনীতির বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে বীমার গুরুত্বও ক্রমান্বয়ে বাড়বে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্যই জনগণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে বীমা কোম্পানিগুলোর আরো বেশি উদ্যোগ নেয়া উচিত।
এ সময় বীমা কোম্পানিগুলো থেকে সময়মতো অর্থ পরিশোধের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, মানুষ যেন তাদের বীমা অথবা ক্ষতি অনুযায়ী যথাযথভাবে বীমার অর্থ পেয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে কিছু মানুষের প্রবণতাই হচ্ছে সাজানো দুর্ঘটনার মাধ্যমে বীমা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করা। এ মুহূর্তে এ ধরনের প্রবণতা কমেছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলেও কোম্পানিগুলোকে এ ব্যাপারে আরো সতর্ক থাকতে হবে এবং দক্ষ ও উপযুক্ত লোককে তদন্ত করতে পাঠাতে হবে।
‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, বীমা হোক সবার’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে গতকাল দেশজুড়ে জাতীয় বীমা দিবস-২০২১ পালন করা হয়। দিবসটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বীমা সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন। অনুষ্ঠানে বীমা খাতের ওপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৬০ সালের ১ মার্চ আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদানের মাধ্যমে প্রথম বীমা পেশায় যুক্ত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দিনটি স্মরণে সরকার প্রতি বছর ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালন করছে। জাতীয় বীমা দিবসের অনুষ্ঠানে গতকাল খাতটিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্যে চার বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি তাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে চার শিক্ষার্থীর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা বিতরণ করা হয়। সব মিলিয়ে ৫০ হাজার শিক্ষার্থীকে এ বীমার আওতায় আনা হচ্ছে।
