সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে যাদের করোনাভাইরাসের টিকা দিতে চায়, তার তথ্য সংসদে উপস্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৩ জনকে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হবে। জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলামের (টিটু) এ-সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
গতকাল স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। এরই মধ্যে ভারতের উপহার ২০ লাখ ও সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ৫০ লাখ টিকা দেশে পৌঁছানোর প্রসঙ্গে সরকার প্রধান বলেন, সেরামের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আগামী ছয় মাসের মধ্যে সব টিকার সরবরাহ পাওয়া যাবে। এর বাইরে প্রয়োজন অনুযায়ী আরো টিকা কেনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী যারা পাবেন করোনার টিকা—কভিড-১৯ স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ৪ লাখ ৫২ হাজার ২৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী, অনুমোদিত ছয় লাখ বেসরকারি ও প্রাইভেট স্বাস্থ্যকর্মী, দুই লাখ ১০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬২০ জন সদস্য, সামরিক ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯১৩ জন, রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য ৫০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ৫০ হাজার গণমাধ্যম কর্মী, ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন জনপ্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দেড় লাখ কর্মচারী, ৫ লাখ ৪১ হাজার ধর্মীয় প্রতিনিধি, মৃতদেহ সত্কারে নিয়োজিত ৭৫ হাজার ব্যক্তি, জরুরি সেবার (পানি, গ্যাস, পয়োনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস, পরিবহন কর্মী) চার লাখ কর্মী, স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরের দেড় লাখ কর্মী, ১ লাখ ২০ হাজার প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক, জেলা-উপজেলায় কর্মরত চার লাখ জরুরি সেবায় নিয়োজিত সরকারি কর্মচারী, ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬২১ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার (যক্ষ্মা, এইডস, ক্যান্সার) ৬ লাখ ২৫ হাজার জনগোষ্ঠী, ৬৪ থেকে ৭৯ বছর বয়সী ১ কোটি ৩ লাখ ২৬ হাজার ৬৫৮ জন্য ব্যক্তি, ৮০ বছর ও তদূর্ধ্ব ১৩ লাখ ১২ হাজার ৯৭৩ জন জনগোষ্ঠী, জাতীয় দলের খেলোয়াড় ২১ হাজার ৮৬৩ জন এবং বাফার, ইমার্জেন্সি, আউটব্রেক ১ লাখ ৭০ হাজার জন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন দেশ, বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা থেকে কভিড-১৯ মোকাবেলায় ১ হাজার ৮১৭ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঋণ সুবিধা ১ হাজার ৬৪০ ডলার এবং অনুদান ১৭৭ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন। এসব প্রতিশ্রুতির মধ্যে ১ হাজার ৫২০ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন ডলার অর্থ ছাড় হয়েছে। কভিড-১৯ মোকাবেলায় আগামীতে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও ফ্রান্সের থেকে ১ হাজার ৯১৮ মিলিয়ন ডলার সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও করোনা টিকার অর্থায়নসহ আরো বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে কাজ চলছে।
