ভিসিপিয়াবের ওয়েবিনারে বক্তারা

কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল করে স্টার্টআপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপানসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোয় অসংখ্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে সেসব দেশের অর্থনীতিও গতিশীল হয়েছে। একইভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর। গতকাল বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইকুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিয়াব) উদ্যোগে আয়োজিত ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড স্টার্টআপ ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন ভিসিপিয়াবের চেয়ারম্যান শামীম আহসান।

মূল প্রবন্ধে সিলিকন ভ্যালিকেন্দ্রিক পেগাসাস টেক ভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আনিসুজ্জামান বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিতে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল স্টার্টআপের গুরুত্ব অবদানের দিকগুলো তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টি অর্থনীতিকে গতিশীল করতে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো সাহায্য করেছে। ফেসবুক, টেসলা অ্যামাজনের মতো স্টার্টআপগুলো যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিকভাবে বড় ধরনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রতিষ্ঠাই করা হয়েছে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাহায্য করতে। প্রতি বছর চীনে ৩০ লাখের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো। সেখানে সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করতে স্টারস নামে একটি আলাদা প্লাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে।

একইভাবে জাপানের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎও স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। উচ্চ প্রবৃদ্ধির স্টার্টআপগুলোর আইপিওর জন্য টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জে মাদারস নামে একটি আলাদা মার্কেট গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশেও একই মডেল অনুসরণ করে ছোট মাঝারি মূলধনের কোম্পানিগুলোর আইপিওর জন্য একটি আলাদা মার্কেট গড়ে তোলা প্রয়োজন। এটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর বেড়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আমি যখন সাধারণ বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান ছিলাম সে সময় করপোরেশন থেকে একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন করেছিলাম। আমাদের দেশে অনেক মেধাবী তরুণ আছে, যাদের কাছে অনেক উদ্ভাবনী উদ্যোগ রয়েছে। সেগুলোকে সফল করতে হলে অর্থায়ন প্রয়োজন। কর্মসংস্থান ব্যাংকের কাছে তহবিল রয়েছে। তারা এক্ষেত্রে অর্থায়ন করতে পারে। কমিশন এরই মধ্যে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রাইভেট ইকুইটির জন্য প্রয়োজনীয় আইন বিধিবিধান প্রণয়ন করেছে। তাছাড়া ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এসএমই প্লাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। সবকিছুই তৈরি আছে। এবার শুধু প্রতিষ্ঠানগুলোর আসার অপেক্ষায় রয়েছি। এক্ষেত্রে যখন যা প্রয়োজন বিএসইসি সেটি করবে। আমাদের মেয়াদে ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। আমাদের অর্থনীতির সব সূচক ভালো করছে। বিদেশী যেসব ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান রয়েছে, আমি তাদের অনুরোধ করব, তারা যাতে আরো বেশি করে দেশের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোয় যুক্ত হয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক . শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, কভিড-১৯-এর কারণে যখন অনেকেই চাকরি হারিয়েছে, সেই সময় আমরা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল স্টার্টআপ নিয়ে আলোচনা করছি, এর চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না।

বিএসইসির আরেক কমিশনার অধ্যাপক . মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের মডেল বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় ভিন্ন। ফলে এখানকার সমস্যা চ্যালেঞ্জগুলোও ভিন্ন। আমরা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রমোট করতে চাই।

ওয়েবিনারে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রাইভেট ইকুইটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক . আসিফ হোসাইন খান, ভিসিপিয়াবের ভাইস চেয়ারম্যান . জিয়া উদ্দিন আহমেদ সেক্রেটারি জেনারেল শওকত হোসেন এবং সেফ বাংলাদেশ ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন