নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বোরনো প্রদেশে ১১ গ্রামবাসীকে হত্যা করেছে একটি জিহাদি গোষ্ঠী। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত গোষ্ঠীটি ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। খবর এএফপি।
স্থানীয় মিলিশিয়া গোষ্ঠী জানিয়েছে, ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্সের (আইএসডব্লিউএপি) যোদ্ধারা বেশ কয়েকটি পিকআপ ভ্যানে করে এসে আঞ্চলিক রাজধানী মাউদুগুরির ৯০ কিলোমিটার দূরে ওয়াসারামে হামলা চালায়। তাদের গুলিতে মারা যায় আট গ্রামবাসী। এতে আহত হয় আরো অন্তত ২০ জন। এছাড়া ওইদিনই সকালে আরেকটি পৃথক হামলায় মারা যায় আরো তিন গ্রামবাসী।
স্থানীয় মিলিশিয়া নেতা ইব্রাহিম লিমান বলেন, কাগা জেলায় মঙ্গলবারের ওই দুই হামলার পর আমরা ১১ জন গ্রামবাসীর মরদেহ উদ্ধার করি। মূলত হামলাকারীরা নিকটস্থ এনগামদু শহরে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল। হামলাকারীদের অভিযোগ, গ্রামবাসীরা তাদের এ পরিকল্পনার কথা সেনাবাহিনীকে জানিয়ে দেয়। যে কারণে তারা গ্রামবাসীদের ওপর হামলা করেছে। তবে সেনাবাহিনী হামলার সময় জিহাদিদের বাধা দেয়। এ সময় তাদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে জানান মিলিশিয়া কমান্ডার উমর আরি। হতাহতের বিষয়ে উমরও একই তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, আইএসডব্লিউএপির সদস্যরা মূলত ফিরে যাওয়ার সময় গ্রামবাসীদের ওপর হামলা করে। তাদের অভিযোগ, গ্রামবাসীরা সাপ্তাহিক হাটে তাদের ডাকাতির পরিকল্পনা ও গতিবিধি সেনাসদস্যদের কাছে প্রকাশ করে দেয়। এর আগে মঙ্গলবার সকালে আইএসডব্লিউএপির যোদ্ধারা তিন কৃষককে হত্যা করে। আউনো গ্রামে ক্ষেতে কাজ করার সময় তারা এ তিন কৃষককে আটক করেছিল।
মূলত আইএসডব্লিউএপি ২০১৬ সালে বোকো হারাম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর তারা মূলত সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করত। কিন্তু ধীরে ধীরে গ্রামবাসীরা তাদের আক্রমণ ও হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। তারা হত্যার পাশাপাশি গ্রামবাসীদের অপহরণও করছে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকালের দিকে ক্যামেরুন সীমান্তের কাছে বানকি শহরের বাইরে বোকো হারামের একটি প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর বন্দুকধারীরা বেসামরিক গাড়িবহরে হামলা করে। এ হামলায় আহত হয়েছে অন্তত আটজন। নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে চারজনকে একটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা বেশ গুরুতর।
মূলত প্রায় এক দশক করে মুসলিম অধ্যুষিত উত্তর নাইজেরিয়ায় জিহাদিদের উত্থান ঘটেছে। এ সময় সহিংসতায় মারা গেছে ৩৬ হাজারের মতো মানুষ। এছাড়া অন্তত ২০ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র পালাতে বাধ্য হয়েছে। আর এ সহিংসতা এখন আর শুধু নাইজেরিয়াতেই নয়, একই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে ক্যামেরুন, শাদ ও নাইজারেও।
