মুডিসের পর্যবেক্ষণ

ব্যাংকের মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করবে পারপেচুয়াল বন্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে কঠিন সময় পার করছে দেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। তবে পরিস্থিতিতেও ব্যাংক খাতকে কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে পারপেচুয়াল বন্ড। এরই মধ্যে দেশের পাঁচটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংককে পারপেচুয়াল বন্ড ছাড়ার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যাড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী প্রতিষ্ঠান মুডি ইনভেস্টরস সার্ভিসের পর্যবেক্ষণ বলছে, পারপেচুয়াল বন্ড ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে গতকাল একটি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মুডিস। এতে বলা হয়েছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসি এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড যমুনা ব্যাংক লিমিটেডকে ব্যাসেল- কমপ্লায়েন্ট অ্যাডিশনাল টিয়ার- পারপেচুয়াল বন্ড ছাড়ার অনুমতি দেয়। ব্যাংকগুলোকে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বন্ড ছাড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

মুডিসের পর্যবেক্ষণ বলছে, যদি বন্ডগুলো সফলভাবে ইস্যু করা হয়, তাহলে তা ব্যাংকগুলোর টিয়ার- ক্যাপিটাল বাড়াতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি এটি দেশের অ্যাডিশনাল টিয়ার বন্ড মার্কেটকেও শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখবে।

দেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আয় কমেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে মুডিসের পর্যবেক্ষণে। বলা হয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সব ধরনের ঋণ বিনিয়োগের ওপর সুদহার শতাংশে বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ঋণ থেকে ব্যাংকগুলোর আয় কমেছে। দুর্বল হয়েছে ব্যাংকগুলোর মূলধন। করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণের প্রবৃদ্ধিও খুব একটা হয়নি। পাশাপাশি ২০১৯ সালের জুলাই থেকে একটি বিশেষ ট্যাক্স রুল কার্যকরেরও বিরূপ প্রভাব পড়েছে ব্যাংকগুলোর মূলধনে।

এমন পরিপ্রেক্ষিতের মধ্যেও পারপেচুয়াল বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করে তোলা সম্ভব বলে মনে করছে মুডিস। সংস্থাটি বলছে, পরিকল্পিতভাবে অ্যাডিশনাল টিয়ার- সিকিউরিটিজের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর টিয়ার- মূলধন ১০০ থেকে ২০০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে।

বর্তমানে দেশের পাঁচটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক পারপেচুয়াল বন্ড ছাড়ার অনুমতি পেয়েছে। ব্যাংকগুলোর পারপেচুয়াল বন্ড কিনতে পারবে সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিউচুয়াল ফান্ড, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, তালিকাভুক্ত ব্যাংক, সমবায় ব্যাংক, আঞ্চলিক রুরাল ব্যাংক, সংগঠন, ট্রাস্ট, স্বায়ত্তশাসিত করপোরেশনসহ অন্য যোগ্য বিনিয়োগকারীরা।

পারপেচুয়াল বন্ডের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি মেয়াদবিহীন। নন-কনভার্টিবল বন্ডকে শেয়ারে রূপান্তর করা যাবে না এবং আনসিকিউরড অর্থাৎ বন্ডের টাকা তুলতে কোনো জামানত জমা দেয়া হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন