কভিড-১৯

জুনের থেকে জুলাইয়ে তুলনামূলক কম শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুনের তুলনায় দেশে শনাক্তের সংখ্যা কমে এসেছে জুলাইয়ে। মাসের একদিন বাকি থাকলেও জুলাইয়ে আগের মাসের চেয়ে কম শনাক্ত হয়েছে হাজার ৯২৪ জন। গতকাল পর্যন্ত চলতি মাসে শনাক্ত হয়েছে ৮৯ হাজার ৪০৬ জন। আর শনাক্তের সংখ্যা জুনে ছিল ৯৮ হাজার ৩৩০। তবে শনাক্ত কম হলেও জুলাইয়ে এক মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা অতিক্রম করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে গতকাল জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় কভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে আরো হাজার ৬৯৫ জন।

বাংলাদেশে কভিড-১৯ সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় মার্চ। ওইদিন শনাক্ত হয় তিনজন। পুরো মাসে শনাক্ত হয় ৫১ জন। মাসের ১৮ তারিখ প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয়। মাসের শেষে মোট মৃত্যুসংখ্যা দাঁড়ায় -এ। এর পরের দুই মাসেও দেশে কভিড সংক্রমণ মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। এপ্রিলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল হাজার ৬১৬। মাসটিতে কভিড-১৯- প্রাণহানি হয় ১৬৩ জনের। এরপর মে মাসে ৩৯ হাজার ৪৪৬ জন শনাক্ত ৪৮২ জনের মৃত্যু হয়। তবে এর পরের দুই মাস জুন জুলাইয়ে শনাক্তের সংখ্যা লাখের কাছাকাছি অবস্থান করে। এই দুই মাসের প্রতিটিতে হাজারেরও অধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরো ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিয়ে করোনায় প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়াল হাজার ৮৩ জনে। সর্বশেষ সুস্থ হয়েছে হাজার ৬৬৮ জন এবং এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে মোট লাখ ৩২ হাজার ৯৬০ জন। গতকাল কভিড-১৯ সম্পর্কিত নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

গতকালের স্বাস্থ্য বুলেটিনে জানানো হয়, এখন থেকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) হটলাইন নম্বরের মাত্র একটিতে কল গ্রহণ করা হবে। সরকারের এই প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ১০৬৫৫ নম্বরে কল গ্রহণ করে কভিড-১৯ সম্পর্কিত সেবা প্রদান করবে। অন্য নম্বর বন্ধ থাকবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত দেশে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১১ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৫টি। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার দশমিক ৩১ শতাংশ। এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৬ দশমিক ৬১ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ হাজার ৪২৪ জন, যা ৭৮ দশমিক ৬২ শতাংশ। এবং নারী মারা গেছেন ৬৫৯ জন, যা ২১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। 

এখন পর্যন্ত বিভাগভিত্তিক মৃতের সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগ হাজার ৪৭৫ জন। এরপরের অবস্থানে চট্টগ্রাম বিভাগ ৭৫১ জন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ১৮২ জন, খুলনা বিভাগে ২১৯, বরিশাল বিভাগে ১০২, সিলেট বিভাগে ১৫১, রংপুর বিভাগে ১৭৭ ময়মনসিংহ বিভাগে ৬৭ জন মৃত্যুবরণ করেছে।

উল্লেখ্য, ১৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১০ জুন সংখ্যা এক হাজার অতিক্রম করে। এর ২৫ দিন পর জুলাই তা দুই হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপরের এক হাজার মৃত্যুর সংখ্যা অতিক্রম করতে সময় লাগে ২৩ দিন। জুলাই মাসের ২৮ তারিখ মৃত্যুসংখ্যা তিন হাজারে দাঁড়ায়। এর মধ্যে গত ৩০ জুন একদিনে রেকর্ড সর্বোচ্চ ৬৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। এদিকে দেশে ধীরে ধীরে সংক্রমণের মাত্রা কমে এলেও মৃত্যুহারে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসছে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন