২০২০-২১ বিপণন বর্ষ

সাড়ে ৭ কোটি টন গম উৎপাদনের পূর্বাভাস রাশিয়ার

বণিক বার্তা ডেস্ক

রাশিয়া বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ গম উৎপাদনকারী দেশ। তবে কৃষিপণ্যটির রফতানিতে দেশটির অবস্থান প্রথম। আগামী মাস থেকে দেশটিতে শুরু হবে ২০২০-২১ বিপণন বর্ষ। নতুন বিপণন বর্ষে দেশটিতে গম উৎপাদন বাড়তে পারে বলে প্রত্যাশা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। মূলত রাশিয়াতে এবার গমের আবাদ বেড়েছে, যা কৃষিপণ্যটির উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রধান প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে। দেশটির সরকারি সূত্র সম্প্রতি তথ্য দিয়েছে। খবর রয়টার্স।

রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয়ের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০-২১ বিপণন বর্ষে দেশটিতে সব মিলিয়ে কোটি ৫০ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে। চলতি বিপণন বর্ষে দেশটিতে খাদ্যপণ্যটির উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি ৩৬ লাখ টনে। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রাশিয়াতে গমের উৎপাদন বাড়তে পারে ১৪ লাখ টন।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ক্ষেত থেকে গম সংগ্রহ শুরু করার প্রত্যাশা করছেন রাশিয়ার কৃষকরা। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় দেশটির গম ব্যবসায়ীরা নতুন শস্য নিয়ে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন। উৎপাদনের সঙ্গে আগামী বিপণন বর্ষে দেশটি থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানিতেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকতে পারে। 

রাশিয়ার শস্যবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সভইকনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ বিপণন বর্ষে রাশিয়া থেকে সব মিলিয়ে কোটি ৬৮ লাখ টন গম আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি হতে পারে। চলতি বিপণন বর্ষে পণ্যটি রফতানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে কোটি ৩৮ লাখ টন। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রাশিয়া থেকে গমের রফতানি বাড়তে পারে ৩০ লাখ টন। দেশটি থেকে রফতানি হওয়া বেশির ভাগ গমের গন্তব্য থাকে আফ্রিকা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। খাদ্যপণ্যটি রফতানি বাজার ধরতে রাশিয়াকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইউক্রেনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়।

বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি বছর শস্যের অভ্যন্তরীণ বাম্পার ফলন আগামী বিপণন বর্ষে রাশিয়া থেকে পণ্যটির রফতানি বৃদ্ধির পেছনে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে। এছাড়া ইউক্রেন ইইউসহ পণ্যটি অন্য শীর্ষ রতানিকারক দেশগুলোতে উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় প্রতিযোগিতা কমে সময় বাড়তি সুবিধা পেতে পারে রাশিয়া।

এদিকে নতুন বিপণন বর্ষ সন্নিকটে চলে আসায় রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বাজারে গমের সরবরাহ বেড়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই বাজারে নতুন ফসল উঠবে। ফলে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় সময় পণ্যটির সরবরাহ বেশি থাকে। উপরন্তু নতুন বিপণন বর্ষে পণ্যটির উৎপাদনে চাঙ্গা ভাবের পূর্বাভাস মিলেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্কেও পণ্যটির দামে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে। সব মিলিয়ে সর্বশেষ সপ্তাহে রাশিয়ার গমের রফতানি মূল্য বেশ কমে গিয়েছে।

সভইকনের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ সপ্তাহে ফ্রি অন বোর্ড চুক্তিতে রাশিয়ায় উৎপাদিত ১২ দশমিক শতাংশ প্রোটিন সমৃদ্ধ প্রতি টন গমের গড় রফতানি মূল্য দাঁড়িয়েছে ২০২ ডলার, আগের সপ্তাহের তুলনায় যা ডলার কম। তবে মস্কোভিত্তিক আরেকটি কৃষিবিষয়ক কনসালট্যান্সি আইকেএআর জানিয়েছে, সর্বশেষ সপ্তাহে আগামী আগস্টে সরবরাহ করা চুক্তিতে রাশিয়ার প্রতি টন গমের গড় রফতানি মূল্য কমে ১৯৯ ডলারে নেমেছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় যা ডলার কম। 

উল্লেখ্য, নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর অভ্যন্তরীণ বাজার সরবরাহ দাম স্বাভাবিক রাখতে শস্য রফতানিতে কোটা বেঁধে দিয়েছিল রাশিয়া সরকার। আগামী বিপণন বর্ষেও ব্যবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটি শস্যের অভ্যন্তরীণ মজুদ বাড়িয়ে ৬০ লাখ টনে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে, যা দেশটির এক মাসের অভ্যন্তরীণ শস্য ব্যবহারের সমান। এটি দেশটি থেকে গমসহ অন্যান্য শস্য রফতানির প্রধান অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন